বাউবির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ড. এম শমশের আলীর ইন্তেকালে উপাচার্যের গভীর শোক

প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৪ | অনলাইন সংস্করণ

  নজমুল হক, গাজীপুর:

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এম শমশের আলী একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ আগষ্ট রাত ২ টায় ইন্তেকাল করেছেন(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। ড . শমশের আলী মৃত্যুতে বাউবি পরিবার গভীরভাবে শোকাহত।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।এক বার্তায় উপাচার্য বলেন,"ড. শমশের আলী বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও বিজ্ঞান চর্চার জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন। তিনি একাধারে একজন নিষ্ঠাবান গবেষক, চিন্তাশীল শিক্ষক ও সমাজসেবী। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে উচ্চশিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়—যা আজ দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।তাঁর দূরদর্শিতা, গবেষণাভিত্তিক চিন্তা, মানবকল্যাণে নিবেদিত সাধনা এবং সর্বজনীন শিক্ষার বিস্তারে অসামান্য অবদান দেশের শিক্ষা ও বিজ্ঞান অঙ্গনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর এই অনুপস্থিতি জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।" উপাচার্য আরো বলেন, "প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এম শমশের আলী উন্মুক্ত ও দূরশিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে তিনি দেশের প্রান্তিক জনগণের জন্য উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচন করেন। তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও একাডেমিক দক্ষতায় বাউবি একটি যুগোপযোগী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থায় পরিণত হয়। তিনি প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা বিস্তারে উৎসাহিত করেন এবং শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তাঁর অবদান বাংলাদেশে বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থার পথপ্রদর্শক হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।ড. আলীর মতো একজন মনীষীকে হারিয়ে জাতি একজন সত্যিকারের পথপ্রদর্শককে হারালো। তাঁর অবদান চিরকাল আমাদের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। "উপাচার্য অধ্যাপক ওবায়দুল ইসলাম মরহুম শমশের আলীর বিদেহী রুহের মাগফিরাত কামনা এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।মরহুম অধ্যাপক শমশের আলী এর প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও সমবেদনা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।মরহুম এর জানাযা নামাজ প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং দ্বিতীয়বার ধানমন্ডির ৭ নং সড়কে লেকের পাড় বায়তুল আমান জামে মসজিদে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়।এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম জানাযা নামাজ শেষে মরহুম ড. শমশের আলীর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ।এ সময়ে বাউবির প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস পিএইচডি, ট্রেজারার অধ্যাপক ড.আবুল হাসনাত মোহাঃ শামীমসহ সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে অধ্যাপক শমশের আলী এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন বাউবির প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড.দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন। তিনি বলেন,"জাতি এ সময়ে একজন দায়িত্বশীল অভিভাবককে হারালো,যা কোনদিন পূরণ হবার নয়। তিনি মরহুম শমশের আলীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।"

এছাড়াও বাউবির উপাচার্য অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, প্রো-উপাচার্য ( প্রশাসন) অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস পিএইচডি, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহাঃ শামীম , রেজিস্ট্রার ড.মহাঃশফিকুল আলমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ,কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এবং সর্বস্তরের অগণিত মুসল্লীরা এ জানাযা নামাজে শরীক হন। জানাযা নামাজ ও সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ মরহুম অধ্যাপক শমশের আলীকে আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়। মৃত্যুকালে এ মহান শিক্ষাগুরু স্ত্রী,০২ পুত্র সন্তান, ০২ পুত্রবধূসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।


আমার বার্তা/জেএইচ