সবুজবাগে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে যুবককে হত্যা
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর সবুজবাগ বাইগদিয়া এলাকায় নয়ন আহম্মেদ রমজান (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হত্যার অভিযোগ পরিবারের। তিনি বালু ভরাটের ড্রেজার ব্যবসায়ী ছিলেন জানিয়েছেন স্বজনরা।
রমজান কুমিল্লার মুরাদনগর থানার বোড়ার চর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সবুজবাগ এলাকায় থাকেন।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা তিনটার দিকে এই ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান ওই ব্যবসায়ী। পরে গত রাতের দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
সুরতহাল প্রস্তুতকারী সবুজবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এস আই) জাহাঙ্গীর আলম, তার মাথা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং বুকে একটি ছিদ্র রয়েছে যেটি দেখে মনে হচ্ছে এটি গুলির চিহ্ন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন আলী বলেন, গতকাল তাকে চাঁদাবাজি করার সময় স্থানীয় জনতা গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে। তার নামে সবুজবাগ মুগদা থানা এলাকায় হত্যা ডাকাতি চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনে ২১টি মামলা রয়েছে। তাকে গুলি করে হত্যা করেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এরকম কোন কিছু আমাদের কাছে নেই তবে আমাদের সুরতহাল প্রতিবেদনকারী অফিসার বলতে পারবে তার শরীরে কোথায় কোথায় আঘাত আছে বা গুলির কোন চিহ্ন আছে কিনা।
নিহতের মা নাসিমা বেগম জানান, আমার ছেলে তার বন্ধুদের নিয়ে বালু ভরাটের ড্রেজারের ব্যবসা করতো। গতকাল বিকেলের দিকে ব্যবসায়িক পার্টনার জাহাঙ্গীর তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে গুলি এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে আমি খবর পেয়ে ঢাকায় এসে দেখি আমার ছেলের লাশ পড়ে আছে সবুজবাগে। "আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই, এখন আমার এতিম নাতি দুইটা কে কে দেখবে, এই বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি"।
নিহত ব্যবসায়ী রমজানের ব্যবসায়িক পাটনার হীরা জানান, আমরা ৪-৫ বন্ধু মিলে বালু ভরাটের ডেজারের ব্যবসা করি সবুজবাগ এলাকায়। জাহাঙ্গীরও আমাদের ব্যবসায়িক পার্টনার ছিল। পরে সরকার বদলের সাথে সাথে জাহাঙ্গীর একা আমাদের সম্পূর্ণ ব্যবসা আত্মসাৎ এর চেষ্টা করে। তখন আমরা সবাই জাহাঙ্গীরকে বাধা দেই। এ নিয়ে কয়েকদিন আগেও আমাদের সাথে তর্ক-বিতর্ক। গতকালকে আমরা না থাকায় রমজানকে ডেকে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীর। এরপর তাকে পিছন থেকে গুলি করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে ফেলে রাখে রমজানকে। পরে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ সদস্যরা এসে রমজানের লাশ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান,আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। এখন জাহাঙ্গীরের সন্ত্রাসী বাহিনী উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দিচ্ছে। আমরা এই স্বাধীন সরকারের কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, কারো মায়ের বুক যেন খালি না হয় আমরা এ সরকারের কাছে এটাই দাবি করি।
আমার বার্তা/এম রানা/এমই