ঢাকার সড়কে বাসের কৃত্রিম সংকটে ভোগান্তিতে যাত্রী

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:১৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

গত কয়েকদিনের মতো বুধবারও (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিভিন্ন সড়কে বাসের সংকট দেখা দিয়েছে। পরিবহন সংকটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী ও কাজে বের হওয়া মানুষজন।

এদিন সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বাস চলাচল একেবারেই কম দেখা যায়। যে অল্পসংখ্যক বাস চলাচল করছে তার বেশিরভাগই যাত্রীতে ঠাসা। ফলে অনেকে বাসে উঠতে পারছে না। এ অবস্থায় উপায় না পেয়ে অনেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, কেউবা অটোরিকশা, কেউ কেউ রাইড শেয়ারিং বাইকে করে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে।

গত সপ্তাহে ঢাকার আব্দুল্লাহপুর হয়ে গাজীপুর রুটে চলাচল করা বাস গোলাপি রং করে ই-টিকিটিংয়ের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। প্রাথমিকভাবে ২১ কোম্পানির ২,৬১০ বাস গোলাপি রঙের ই-টিকিটিংয়ের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এরপর থেকেই মূলত গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহনের কৃত্রিম সংকট দেখা গেছে।

রাজধানীর খিলক্ষেত মোড় থেকে মহাখালী যাওয়ার জন্য বাসের অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছি, কিন্তু বাস নেই। অফিস টাইমে শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে, যে অল্প সংখ্যক বাস আসছে সেগুলো যাত্রীতে ঠাসা, ওঠা যাচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। পরে বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে রাইড শেয়ারিং বাইকে অফিসে যাচ্ছি।

একইভাবে রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে পল্টন মোড়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, বাসের রং পরিবর্তন করে টিকিট সিস্টেম হওয়ার কারণে অনেকেই বাস নামাচ্ছে না সড়কে। তাই গণপরিবহন সংকট। কাজে বের হওয়া হাজার হাজার মানুষ সড়কে এসে ভোগান্তিতে পড়েছে। যারা ইচ্ছে করে যাত্রীদের এমন ভোগান্তিতে ফেলে বাস নামায়নি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। মানুষের এমন ভোগান্তি দেখে রিকশা, সিএনজি, রাইড শেয়ারিং বাইক সবাই অতিরিক্ত ভাড়া চাইতে শুরু করেছে।

বাস সংকটের কারণ জানতে চাইলে এই রুটে চলাচলকারী ভিক্টর বাসের সহযোগী রিপন মিয়া বলেন, যেহেতু এই সড়কে চলতে হলে বাসকে গোলাপি রং হতে হবে, তাই অনেক বাস মালিকই তাদের বাস রং করতে দিয়েছে। আর এই টিকিট সিস্টেম হলে বাসচালক, হেলপাররা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই অনেকে বাস নামাচ্ছে না।

তুরাগ বাসের চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, বাসের গোলাপি রং, টিকিট পদ্ধতি না থাকলে মামলা দিচ্ছে পুলিশ। যারা বের হচ্ছে তারাই নিয়ম মেনে না চললে মামলা খাচ্ছে, তাই ভয়ে অনেকে বাস বের করছে না। এছাড়া এই পদ্ধতির কারণে বাসের ড্রাইভার, হেলপার সবচেয়ে লসে পড়বে, সে কারণে তারা ইচ্ছে করে বাস নামাচ্ছে না।

রাজধানীর রামপুরা সড়কে দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশ সদস্য এরশাদ আলী বলেন, সকাল থেকেই সড়কে বাসের সংখ্যা অনেক কম। মূলত বাসের রং আর টিকিট সিস্টেমের বাধ্যবাধকতার কারণে বাস নামায়নি অনেকে। আসলে তারা শৃঙ্খলার এই পদ্ধতিতে বাস চালাতে চায় না, সে কারণে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছে।

রাজধানীর মহাখালী এলাকায় কথা হয় অটোরিকশা চালক মাসুদ রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, মহাখালী; এদিকে বাড্ডা, রামপুরা সড়কে মূলত বাসের বেশি সংকট দেখলাম। যে কারণে সকাল থেকে এসব রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করছে। গত কয়দিন ধরে বাসের এমন সংকট দেখা যাচ্ছে ঢাকার রাস্তায়। তবে অবশ্য এ কারণে আমাদের যাত্রী বেড়েছে।


আমার বার্তা/জেএইচ