স্কুল ফিডিংয়ে দুধের সাথে ডিম যুক্ত করতে হবে: ফরিদা আখতার

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

স্কুল ফিডিংয়ে ডিম যুক্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, আমাদের স্কুল ফিডিংয়ে দুধ দেওয়া হচ্ছে সেখানে ডিমও যুক্ত করতে হবে।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল ও ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার সহযোগিতায় সভার আয়োজন করে প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর।

বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদা আখতার আরও বলেন, অনেক দরিদ্র ছেলেমেয়ে পুষ্টির যোগান পায় না। সেক্ষেত্রে স্কুলের খাবার তালিকায় ডিম রাখলে সেই পুষ্টি পূরণ সম্ভব।

তিনি বলেন, ডিম খাবারের ক্ষেত্রে দেশের সব মানুষ জড়িত। এটি উৎপাদন ও খাদ্যের সঙ্গেও সবাই জড়িত। গরুর মাংস সবাই কিনতে না পারলেও সহজেই ডিম কেনা যায়। আমাদের ৬ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। তাই স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে ডিম যুক্ত করতে হবে।

আমাদের ৮০ শতাংশ ডিম প্রান্তিক পর্যায় থেকে আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রান্তিক খামারিরা ৮০ শতাংশ ডিম উৎপাদন করে। আবার গ্রামের দরিদ্র নারীরাও দু-একটি করে মুরগি পালন করে পুষ্টির যোগান দেয়।

কৃষিতে কীটনাশক ব্যবহারে মুরগি পালন হুমকির মুখে পড়েছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। তা ছাড়া হাওরের হাঁসের ডিমের কথা প্রচার করা হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাওরের হাঁসের ডিমের বিষয়ে প্রচার করতে হবে।

তিনি সয়াবিন সম্পর্কে বলেন, যে সয়াবিন আমদানি হয় তা জিএমও, সেটি কিন্তু আমাদের ওপর প্রভাব পড়বে। তাই আমাদের দেশে ভুট্টা উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। আর ডিম নিরাপদ হতে হবে।

ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা করোনাকালে ১ লাখ ৮০ হাজার প্রান্তিক খামারিকে সরাসরি প্রণোদনা দিয়েছি। তা ছাড়া প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদনে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।

ড. শাকিলা ফারুক বলেন, মানুষের ওজন, বয়স অনুযায়ী প্রোটিন নিতে হবে। তিনি বলেন, দেশি মুরগির চেয়ে ফার্মের মুরগির ডিম বড় হওয়ায় পুষ্টিগুণ বেশি। তবে সাদা, ব্রাউন, হাঁসের ও কোয়েলের ডিম কোনোটার মধ্যে প্রোটিনের পার্থক্য নেই। তবে দেশি মুরগির ডিমের স্বাদ বেশি।

ডিমের ক্ষেত্রে ৬০-৭০ শতাংশ ব্যয় হয় খাবারে বলে জানান অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার। বলেন, আমাদের ডিমের জন্য লক্ষ্যমাত্রা নেই। তাই পোল্ট্রিশিল্পের জন্য আমাদের রোডম্যাপ দরকার।

ডা. এবিএম খালেকুজ্জামান বলেন, একদিনের বাচ্চার দাম কখনো বেড়ে যায় আবার এক সময় কমে যায়৷ সেজন্য বাচ্চার উৎপাদন গত বছর ৪২ টাকা ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে ৫৩ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে বাজারে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে।

মসিউর রহমান বলেন, আমাদের ডিমের চাহিদার ৮০ শতাংশ উৎপাদন প্রান্তিক খামারিরা। তাদের সাহায্য করতে হবে। বর্তমানে আমাদের উদ্যোগে ৪ বিভাগে ৬০০ খামারিদের নিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামীতে আরও দুটি বিভাগে ৬০০ খামারি নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ভোক্তার কাছে ডিম পৌঁছে দিতে আমরা সচেষ্ট থাকলেও মাঝখানের হাতগুলো কমাতে হবে। আর যারা ডিম স্টক করে তাদের ধরতে হবে। বিগত সরকারের আমলে আমাদের অনেকের অফিসে ডিজিএফআইয়ের অফিস বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এমন বাধা নিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব নয়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ফরিদা আখতার ছাড়াও বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক ও ওয়াপসা বিবির সাবেক সভাপতি মসিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন ও অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান সিকদার।

আমার বার্তা/এল/এমই