চলতি মৌসুমে টেকনাফে সুপারির ফলন কম, কৃষকের মুখে দুশ্চিন্তা

প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:০১ | অনলাইন সংস্করণ

  মোহাম্মদ তোফাইল, টেকনাফ (কক্সবাজার) :

টেকনাফে সুপারির ফলন কম, কৃষকের মুখে দুশ্চিন্তা

কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে চলতি মৌসুমে সুপারির ফলন কম হয়েছে। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দেওয়ার কারণে ফলনে সুপারি বাগানগুলোতে সুপারি কম কিন্তু বাজারে সুপারির দাম ভালো। কৃষকরা সুপারি ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছে।

 স্থানীয় সুপারী ব্যবসায়ী আব্দুল ছালাম,আবুল কাশিম,নজির,রশিদ জানান, টেকনাফ বাজার,  শামলাপুর বাজার, জাহাজপুরা বাজার, উখিয়া সদর, সোনাপাড়া বাজার, মরিচ্যা বাজার, কোর্টবাজার থেকে সুপারি দেশের বিভিন্ন আড়তে চালান হয়। সুপারি বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা লাভবান হয় এবং সংসার জীবন সুন্দর করে কাটাতে পারে । তাদের মতে, সুপারি বাগান মালিকরা তাদের উৎপাদিত সুপারি বাজারজাত করে লাভবান হচ্ছেন। অর্থকরী এই ফসল চাষ করে অনেক অসচ্ছল পরিবার সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারে।চাষিরা দৈনিক আমার বার্তা কে, জানান গত বছরের চেয়ে চলতি মৌসুমে সুপারির ফলন কম হয়েছে।

প্রবাদ আছে টেকনাফের সুপারি মহেশখালীর পান সারা বাংলাদেশে বিখ্যাত। 

টেকনাফ উপজেলার পান-সুপারি উৎপাদনের অন্যতম  সাবরাং ইউনিয়ন।সাবরাং বাজারে ঘুরে সুপারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি রবিবার  ও বুধবারে সাবরাং ইউনিয়নে তিন জায়গাতে বাজার বসে,সাবরাং বাজার, উত্তর নয়া পাড়া বাজার এবং সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদ বাজার।এ বাজার গুলোতে,অর্থকরী ফসলের মধ্যে সুপারির লেনদেন অন্যতম।
সাবরাংয়ের অন্যতম বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইব্রাহিম জানান,
গত বছর টেকনাফ বাজার থেকে প্রায় ২০ টন (৪-৫ ট্রাক)দেশের বিভিন্ন জায়গাতে প্রতি বাজারে সুপারি চালান হতো।চলতি মৌসুমে সুপারি ফলন কম হওয়াতে,এই মৌসুমে প্রতি বাজারে (৫টন)(১-২)ট্রাক চালান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে,

তিনি আরো বলেন,চলতি মৌসুমের মতো কম ফলন কোনো মৌসুমে হয় নাই বলে ধারণা করেন।এই বছর সুপারির দাম ভালো কিন্তু ফলন কম হওয়ায় কৃষকরা ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে বলে মনে করেন।

দৈনিক আমার বার্তা সরেজমিনে গিয়ে চলতি বছরের সুপারির ফলন সম্পর্কে জানতে চাইলে চাষি সাবরাং ছান্দলী পাড়ার বাসিন্দা আবদুল রশিদ জানান,গত বছর আমার সুপারি বাগানে প্রচুর সুপারি ধরেছিল, এই মৌসুমে একদম কম ধরছে।গত বছর আমার সুপারি বাগান থেকে কমপক্ষে ১ লক্ষ টাকা পেয়েছি,এই মৌসুমে ৩০-৪০ হাজার টাকা মতো পাব।এই বছর সুপারির দাম ভালো,কিন্তু ফলন কম।

ডেগিল্লার বিলের সৈয়দ হোসাইন বলেন, এক কানি (৪০ শতক) জমিতে লাগানো ৪৫৮টি গাছে সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি গাছে সুপারি ধরেছে ১০০-২০০টি। এবার সুপারির ভালো বাজারমূল্য থাকায় সুপারি গাছে ফলন কম হলেও ভালো দামে বিক্রি করতে পাচ্ছে সুপারি বাগানের মালিকরা।

সরেজমিনে গিয়ে অনুসন্ধান করলে সাবরাং লেজির পাড়া স্হানীয় বাসিন্দা খুর্শেদ আলাম,মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ,নরুল ইসলাম,জানান আমাদের এলাকায় পরামর্শ দেওয়ার জন্য কৃষি অফিস থেকে কেউ আসে নাই। সুপারি গাছে বিভিন্ন ধরনে রোগ দেখা যায়। সুপারির ভেতরে পোকা,সুপারি গাছের পাতা হঠাৎ করে শুকিয়ে যায়। অনেক সময় সুপারি ঝরে যায়।এই সমস্যা সমাধানে কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ দেওয়া জন্য কেউ আসে নাই। চাষিদের অভিযোগ কৃষি সরঞ্জাম,সার বিভিন্ন গাছের চারা, আমরা কোনোদিন পায় নাই। 

এই বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিসার জাকিরুল ইসলামের সাথে দৈনিক আমার বার্তা যোগাযোগ করলে তিনি জানান ফলন কম হওয়ার প্রধান কারণ পরিচর্যার অভাব এবং সঠিক সময়ে সার না দিলে ফলন কম হবে।তিনি আরো বলেন,প্রত্যেক ইউনিয়নে আমাদের কর্মকর্তা ও কর্মচারী আছে, তাদের কে,বললে তারা কীভাবে রোপণ করতে হবে।কি পরিমাণ সার দিতে হবে।এইসব বিষয়ে ধারণা দিয়ে থাকে।আর আমাদের অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করলে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি।মাঝেমধ্যে আমরা কৃষকের বাড়িতে গিয়ে ফসল দেখাশোনা করি।তিনি বলেন বিভিন্ন কৃষি সরঞ্জাম,গাছের চারা,দানা আমরা কৃষকদেরকে দিয়ে থাকি, তিনি আরো বলেন প্রত্যেক কৃষকদেরকে, সরঞ্জাম দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি জানান অনেক কৃষকের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে,তাদের কে আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিয়।তারা কেউ বলে নাই এই বছর ফলন কম হয়েছে। দৈনিক আমার বার্তা সরজমিনে গিয়ে চাষিদের সাথে কথা বললে চাষিরা জানান চলতি মৌসুমে সুপারির ফলন কম হয়েছে। আমরা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছি।