চট্টগ্রামে ছেলের বিয়ে থেকে গ্রেপ্তার আ.লীগ নেতা ফখরুল কারাগারে

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:৫২ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ার চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানার হত্যা চেষ্টা মামলায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ার চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্করের আদালত এই আদেশ দেন।

শনিবার রাতে ছেলের বিয়েতে তাকে অবরুদ্ধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েক শ’ নেতাকর্মী। পরে নগরীর খুলশী থানা পুলিশ এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।  কোতোয়ালী থানার মামলায় তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

ফখরুল ফটিকছড়ি আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ার চৌধুরী ওরফে সোনা রফিকের ভাই এবং ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনির চাচা।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মফিজ উদ্দিন বলেন, কোতোয়ালী থানার মামলায় ফখরুল আনোয়ারকে আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানো হয়।

চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস এলাকায় নৌ বাহিনীর মালিকানাধীন অভিজাত নেভি কনভেনশন সেন্টারে ফখরুল আনোয়ার চৌধুরীর ছেলে সৈয়দ মিনহাজুল আনোয়ারের সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমের নাতনি সৈয়দা মাহবুবা হোসনে আরা মনজুরের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। মাহবুবা মনজুর আলমের বড় ছেলে নিজামুল আলমের মেয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে নগরীর নামীদামি অতিথিরা অংশ নেন। বিয়েতে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। বিয়েতে অতিথি আসার পর রাত ১০টার দিকে ফখরুল আনোয়ারের উপস্থিতি দেখে তা চারদিকে ছড়িয়ে দেন।

ফ্র্যান্স থেকে পিনাকি ভট্টাচার্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কমিউনিটি সেন্টারে শত শত মানুষকে ঘিরে ফেলার আহ্বান জানান। তারপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে ফখরুল আনোয়ারকে অবরুদ্ধ করেন। রান্নাঘর, বাথরুমে নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনিকে খোঁজাখুজি করেন। তখন বিয়ের অনুষ্ঠানে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা কনভেনশন সেন্টারে হাজির হয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের আটক করে লাঠিপেটা করেন। পুলিশ ও ছাত্ররা ফখরুল আনোয়ারকে খুলশী থানায় নিয়ে যান।

ছড়িয়ে পড়া অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সদস্য কনভেনশন সেন্টারের ভেতরে থাকা তিন থেকে দুই তরুণকে লাঠিপেটা করছেন। এ সময় কিলঘুসিও  দেন। এতে এক তরুণের পরনের পোশাক ছিঁড়ে যায়। তাদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়। মারধরের শিকার ব্যক্তিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী বলে জানান কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বিয়ে অংশ নিয়েছেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়। নিজেরাও সেখানে ছুটে যাই। আওয়ামী লীগের নেতারা দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতাকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা জুলাই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের নেতারা স্বাধীনভাবে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন, চলাফেরা করবেন, ছাত্র-জনতা তা মেনে নেবে না। ফখরুল আনোয়ারকে আটক করতে পারলেও অন্য দু’জন পালিয়ে যান।


আমার বার্তা/এমই