এনজিও পুরুষ কর্মীকে বেঁধে নারী কর্মীর নগ্ন ভিডিও ধারণ, টাকা আদায়

প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১৯:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

কুমিল্লার চান্দিনায় এনজিও’র দুই কর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তা থেকে একদল যুবক তাদের অপহরণ করে একটি নির্জন বাগানে নিয়ে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নারী কর্মীকে নগ্ন করে যৌন নির্যাতন করে। এ সময় মোবাইল ফোনে ধারণ করা হয় নগ্ন ভিডিও। সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে অভিযুক্তরা।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চান্দিনা পৌরসভার তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘির পাড়ের একটি বাগানে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার দুজন আইডিএফ নামে একটি এনজিও’র চান্দিনা শাখার কর্মী। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে চারজনের নাম উল্লেখ করে চান্দিনা থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তারেক রহমান।

আইডিএফ এনজিও সূত্রে জানা যায়, তাদের এক পুরুষ ও এক নারী কর্মী চান্দিনার তুলাতলী গ্রামে ঋণের কিস্তি আদায় করতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। ফেরার পথে কয়েকজন যুবক তাদের আটক করে তুলাতলী গ্রামের এতবারপুর মালিবাড়ি সংলগ্ন একটি মৎস্য খামারের পাড়ে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের আদায় করা কিস্তির ১৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। সেখান থেকে হাত ও চোখ বেঁধে তাদের তুলাতলী দক্ষিণপাড়া দিঘির পাড়ে নিয়ে আটকে রাখে ওই যুবকরা। পরে পুরুষ কর্মীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দেয়। আর নারী কর্মীকে নগ্ন করে লাঞ্ছিত করে এবং মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে তারা। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে। এ সময় ওই নারী তার বোনের মোবাইল ফোনে কল করেন এবং নির্যাতনকারীদের বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। ওই টাকা পাওয়ার পরও নারীকে শারীরিক নির্যাতন অব্যাহত রাখে তারা। একপর্যায়ে গ্রামের লোকজন টের পেয়ে ডাকাত বলে ধাওয়া করলে নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়।

আইডিএফ এনজিও’র ঋণ আদায়কারী তারেক রহমান জানান, রাস্তা থেকে আমাদের জোর করে বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করে এবং বৈদ্যুতিক শক দেয়। আর নারী কর্মীকে নগ্ন করে যৌন নির্যাতন করে। তখন তারা নির্যাতনের ঘটনা মোবাইল ফোনে ভিডিও করে। সেই ভিডিও ভাইরাল করার কথা বলে ২ লাখ টাকা দাবি করে। তখন বিকাশে ২০ হাজার টাকা পাঠানোর পর তারা বাকি টাকা চায়। টাকা না দিলে ভিডিও ডিলিট করবে বলে জানায় তারা।

তিনি আরও বলেন, ২০ হাজার টাকা নেওয়ার পরও তারা আমার সহকর্মীকে নির্যাতন করতে থাকে। পরে গ্রামবাসী টের পেয়ে ধাওয়া করে এবং আমাদের উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা সমকালকে জানান, হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের থানায় আনা হয়। আজ দুপুরে চারজনের বিরুদ্ধে অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


আমার বার্তা/এমই