গোপালগঞ্জে জীবিত থেকেও ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর

প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৫, ১৪:০৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। রয়েছেন জীবিত। তবে ভোটার তালিকায় তিনি মৃত। যার দরুণ সরকারি বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবার। এ ‍মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ, শত্রুতার জেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য সবশেষ ভোটার হালনাগাগে এমনটি ঘটিয়েছেন।

ঘটনাটি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী মাহমুদপুর ইউনিয়নের সাতাশিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নজিবুর রহমান বিশ্বাসের (৭৭)। তিনি ওই গ্রামের মৃত করিম বিশ্বাসের ছেলে। 

জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে নাম না থাকায় ভোটাধিকার প্রয়োগ, ব্যাংক ঋণসহ সরকারি অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবার। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছেন তারা। 

ভুক্তভোগী নজিবুর রহমান জানান, তিনি একজন পক্ষাগ্রস্থ মুক্তিযোদ্ধা। জীবিত থাকা সত্ত্বেও তাকে মৃত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ব্যাংক ঋণের জন্য এনআইডি কার্ডের ফটোকপি জমা দেওয়ার পর বিষয়টি জানতে পারেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এনআইডি যাচাই-বাছাইয়ে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে আমার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমার এনআইডি কার্ডের নম্বরটি অকার্যকর। কারণ জানতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে জানতে পারি, হালনাগাদ ভোটার তালিকায় আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে।’ 

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে কাশিয়ানী উপজেলার ভোটার তথ্য হালনাগাদ করা হয়। ওই সময় মাহমুদপুর ইউনিয়নের সাতাশিয়া গ্রামে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সাতাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাজিবুল ইসলাম সোহেল।

তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারের দেওয়া তথ্যে এবং স্থানীয় ইউপি সদস্য হানিফ মোল্লার শনাক্তের প্রেক্ষিতে নজিবুর রহমানকে মৃত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

নজিবুরের ছেলে সোহেল বিশ্বাস ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শত্রুতার জেরে স্থানীয় ইউপি সদস্য শনাক্তকারী হিসেবে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। তথ্য সংগ্রহকারী ওই ইউপি সদস্যের ভাতিজা। যে কারণে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় আমার বাবাকে পরিকল্পিতভাবে মৃত দেখানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি চেয়ে ইউএনও কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।’ 

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য হানিফ মোল্লা বলেন, ‘নজিবুর রহমান বিশ্বাস মারা গেছেন। তিনি আমার ওয়ার্ডের লোক ও আমার বাবার ফুফাতো ভাই। মারা গেছে জেনেই শনাক্ত করেছি।’  

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সর্বশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহে সময় ভুল তথ্যের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। নজিবুর রহমান নির্বাচন অফিসে এসে ফিঙ্গার প্রিন্ট ভেরিফিকেশন করেছেন। দ্রুত তাকে জীবিত স্ট্যাটাসে তালিকাভুক্ত করা হবে।’ 


আমার বার্তা/এল/এমই