যশোরে ৭০৮ মণ্ডপে বাজবে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি শুরু
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

যশোরে পুরোদমে চলছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতি। মা দুর্গাকে সাজাতে রাতদিন কাজ করছেন প্রতিমা কারিগররা। কোথাও কোথাও শুরু হয়েছে রঙের কাজ। আর নির্বিঘ্নে পূজা সম্পন্ন করতে মন্দির ভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি পাঁচ স্তরের নিরপত্তা ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে প্রশাসন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর জেলার ৭০৮টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে পূজা। এর মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১৬৫টি, অভয়নগরে ১২৭টি, কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি ও শার্শায় ২৯টি মন্দির ও মন্ডপে পূজা উদযাপন হবে। দেবী দূর্গার আগমনকে ঘিরে তাই পুরোদমে চলছে পূজার প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে খড় আর কাদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রং আর তুলির আঁচড়ে চলছে দুর্গাকে সাজানোর কাজ। তাই যশোর শহর ও বিভিন্ন উপজেলার মন্ডপগুলোতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা। তাদের দাবি কেবল যশোর নয় অন্যান্য জেলাতেও যশোরের তৈরির প্রতিমার কদর থাকায় এ বছর কাজের চাপ বেশি।
বেজপাড়া পূজা মণ্ডপের ভাষ্কর জয়দেব পাল জানান, এ বছর ৩৮টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছেন। চার মাস আগে থেকে কাজ শুরু করেছেন। খড় আর কাদামাটির কাজ শেষে এখন চলছে রঙের কাজ। এরপর সাজসজ্জার কাজ করা হবে। সময় ঘনিয়ে আসায় কাজের ব্যস্ততা বেড়েছে।
বকচর মন্দিরের ভাস্কর গোপন পাল বলেন, ‘এ বছর কাজের চাপ অনেক বেশি। যশোরের বিভিন্ন উপজেলার ২৮টি অর্ডার পেয়েছি। এর বাইরে আশপাশের চার জেলারও কিছু অর্ডার আছে। এ বছর বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ায় সময়মতো কাজ করা যায়নি। এজন্য এখন কাজের চাপ বেশি। সকাল সন্ধ্যা কাজ করতে হচ্ছে।’
পলাশ পাল নামে অপর এক ভাস্কর বলেন, ‘পূজার আর দশ দিন বাকি। আগামী ৬-৭ দিনের ভিতরে সকল প্রতিমা ডেলিভারি দিতে হবে। তাই ব্যস্ত সময় পার করছি। এখন রংয়ের কাজ চলছে, ২-৩ দিনের মধ্যে সাজসজ্জার কাজ শুরু হবে। এ বছর উপকরণের দাম বেশি হওয়ায় খুব একটা লাভ হবে না।’
এদিকে নির্বিঘ্নে পূজা সম্পন্ন করতে কাজ করছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদও। ইতিমধ্যে তারা মন্দিরভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর শাখার সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার এবং ডিআইজি আমাদের সাথে বৈঠক করেছেন। তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। তারা সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিটি মন্দিরকেন্দ্রিক হিন্দু মুসলিমদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া কটি সম্প্রীতি র্যালির ও আয়োজন করা হয়েছে। ওই র্যালি মুসলিম সম্প্রদায়ের একজন গ্রহণযোগ্য মানুষকে দিয়ে উদ্বোধন করানো হবে। আমরা মনে করছি শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারব।’
এছাড়া দুর্গা উৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, পূজা উদযাপন নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠে থাকবেন। এছাড়া গোয়েন্দা বাহিনী সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। প্রতিটি মন্দিরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে বলা হয়েছে। আশা করি শান্তিপূর্ণভাবে সৌহার্দের মধ্য দিয়ে দূর্গা উৎসব সম্পন্ন হবে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গা উৎসব আর দশম এর মধ্য দিয়ে দুই অক্টোবর শেষ হবে এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
আমার বার্তা/এল/এমই