ময়মনসিংহে বাসে আগুন: সিসি ক্যামেরায় যা ধরা পড়ল
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:২৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় এই দৃশ্য। বাসে দেওয়া ওই আগুনে পুড়ে অঙ্গার হন বাসচালক জুলহাস মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় বুধবার (১২ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌরসভার চাঁদপুর এলাকা থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১০ নভেম্বর) দিনগত রাত ৩টা ১৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ড। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আলম এশিয়া পরিবহনের বাসের সামনে যান দুই ব্যক্তি। একজনের মাথায় ছিল টুপি, অন্যজনের মুখ ও মাথা কাপড় দিয়ে বাঁধা। এর ৩১ সেকেন্ড পর পেছন দিক থেকে আসেন আরও এক ব্যক্তি। তাদের সঙ্গে ছিল একটি বোতল।
ওই বোতলের তরল দাহ্য পদার্থ বাসটির সামনে ও ভেতরে চালকের আসনে ছিটিয়ে দেওয়া হয়। প্রথমে বাসের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর একটি লাঠিতে আগুন ধরিয়ে সেটি বাসের ভেতরেও দেওয়া হয়। পরে দ্রুত ওই তিনজন চলে যান।
তার নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি ফুলবাড়িয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদপুর এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তিনি।
নিহত জুলহাস মিয়া উপজেলার ভালুকজান গ্রামের আবদুল বারেক ও সাজেদা খাতুন দম্পতির ছেলে।
নিহতের বোন ময়না আক্তার বলেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করায় আমাদের সংসারটা তছনছ হয়ে গেছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই।’
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আনোয়ার হোসেনকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।
এর আগে সোমবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আসে। রাত ২টা ৪৫ মিনিটে বাসটি তেল নেওয়ার জন্য পেট্রোল পাম্পের সামনে এলে সব যাত্রী নেমে যান। এসময় বাসটি এখানেই বন্ধ রখা হয়। রাত বেশি হওয়ার কারণে ভোরে নামবেন এমন চিন্তা করে একই উপজেলার চর রাধাকানাই গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রুমকি ও তার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদশা বাসের ভেতরেই থেকে যান।
বাসের ভেতরে সিটে ঘুমিয়ে পড়েন চালক জুলহাস। এসময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত চলে যায়। বাসটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকা অবস্থায় শহিদুল ইসলাম বাদশা সুস্থভাবে বের হতে পারলেও তার মা শারমিন সুলতানা রুমকি আহত অবস্থায় বের হন। এসময় ভেতরে থাকা জুলহাস অগ্নিদগ্ধ হয়ে অঙ্গার হয়ে বাসেই মারা যান।
এ ঘটনায় বাসচালক মো. জুলহাসের ছোট বোন ময়না বাদী হয়ে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাতে ফুলবাড়িয়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আমার বার্তা/এল/এমই
