কয়রায় জলবায়ু ঝুঁকিতে সুরক্ষা জোরদারের কর্মশালা
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৮:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
মোঃ আবু সাইদ

জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশের উপকূলীয় অঞ্চল কয়রায় অভিযোজন-স্থানান্তরিত জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় কয়রা উপজেলা পরিষদ হলরুমে এই মিডিয়া অডভোকেসি সভার আয়োজন করে কারিতাস খুলনা অঞ্চল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল বাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্থানীয় রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা অংশ নেন। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক ছাত্রদল নেতা এম এ হাসান, কয়রা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ হারুন অর রশিদ, উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম এবং সাবেক সভাপতি মোস্তফা শফিকুল। উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এনজিও কর্মী এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবাররাও আলোচনায় যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান-সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, খরা ও বন্যার ক্রমবর্ধমান প্রভাবে উপকূলীয় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষি, মৎস্য ও শ্রমনির্ভর কর্মসংস্থানে অনিশ্চয়তা বাড়ায় মানুষের আয়ের ওপর সরাসরি চাপ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আরও বিস্তৃত করা জরুরি বলে মত দেন অংশগ্রহণকারীরা।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, “জলবায়ুজনিত দুর্যোগ কেবল সম্পদহানিই বাড়াচ্ছে না-এটি দীর্ঘমেয়াদে মানুষের জীবিকা, স্বাস্থ্য এবং বসতি-নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, শিল্প খাতে নির্গমন নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।”
আলোচনায় বক্তারা খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির স্থায়িত্ব, নিরাপদ আবাসন, বিদ্যুৎ-সুবিধা, পলিথিন দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বিকল্প আয়মুখী কর্মসংস্থান এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের সমন্বয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। তারা মনে করেন, অভিযোজন-স্থানান্তরিত পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করা গেলে দুর্যোগ-ঝুঁকি কমবে এবং টেকসই জীবনমান গঠনে সহায়ক হবে।
সভা শেষে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাগুলোর অংশীদারিত্বে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
