নবাবগঞ্জে ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:৩১ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় ভাগ্নীকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের করা মামলার এজাহারনামীয় আসামি শামীম বেপারী (৩৩)- কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১০। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার নবাবগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। গ্রেফতারের পর আসামিকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

র‌্যাব-১০ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর সদরপুর থানার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চরচাঁদপুর কোলপাড় এলাকায় ৭ নভেম্বর ২০২৫ বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ অনুযায়ী, আল এহসান ইসলামিয়া মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসাজনিত গাছ আনতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে এলাকার একটি কাঠ বাগানে নেওয়া হয়। সেখানে অসহায় শিশুটিকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়। ঘটনার পর ভিকটিম কান্নাকাটি করলে বিষয়টি তার মায়ের কাছে স্পষ্ট হয়। মাদ্রাসা শিক্ষিকার সঙ্গে যোগাযোগের পর পরিবার শিশুটির কাছ থেকে পুরো ঘটনার বর্ণনা শোনে।

এ ঘটনায় ভিকটিমের মামা ছত্তার খান (৪৪) বাদী হয়ে ৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সদরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০২০) এর ৯(১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলার খবর পেয়ে অভিযুক্ত শামীম বেপারী আত্মগোপনে চলে যায়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিকে দ্রুত গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়কের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেন। আবেদন পাওয়ার পর র‌্যাব-১০ গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে এবং প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

এর ধারাবাহিকতায় ২৫ নভেম্বর ২০২৫ রাত আনুমানিক ৮টা ১০ মিনিটে র‌্যাব-১০ এর আভিযানিক দল ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। সফল অভিযানে শামীম বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার এড়াতে আসামি অবস্থান পরিবর্তন করে বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে ছিল। তবে তথ্য-প্রযুক্তি ও মাঠপর্যায়ের গোয়েন্দা অনুসন্ধানের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত ও আটকের প্রক্রিয়া সহজ হয়।

র‌্যাব-১০ এর মিডিয়া শাখা জানায়, যৌন সহিংসতা, বিশেষ করে শিশুর প্রতি নির্যাতন একটি গুরুতর সামাজিক ও অপরাধমূলক সমস্যা। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে র‌্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। সমাজে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এ ধরনের অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে তারা ভবিষ্যতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করবে।

গ্রেফতারের পর আসামিকে ফরিদপুর সদরপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং মামলার পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। র‌্যাব জনসাধারণকে অনুরোধ করেছে—এ ধরনের অপরাধের তথ্য পেলে নিকটস্থ থানায় বা র‌্যাবের হটলাইনে দ্রুত জানাতে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এলাকায় উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, তদন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে দোষীদের আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।