মিডিয়া ফুটবল ব্যবসা ও ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে যাদের নিয়োগ করেন হাসিনা
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪২ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী দাবি করেছেন, সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য শেখ হাসিনা শ্যামল দত্ত ও সুভাস সিংহ রায়ের মতো লোককে নিয়োগ করেছিলেন। এছাড়া ফুটবল নিয়ন্ত্রণে সালাউদ্দিন এবং ব্যবসা ও ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে নজরুল ইসলাম মজুমদারকে নিয়োগ করেন পতিত স্বৈরাচার হাসিনা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের ধানমন্ডি থানা ও যাত্রাবাড়ী থানার রিমান্ড শুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
পিপি ফারুকী বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সব জায়গায় তার নিজস্ব লোক নিয়োগ করেছিলেন। যেমন ফুটবলে নিয়োগ করেছিলেন সালাউদ্দিনকে এবং সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নিয়োগ করেছিলেন শ্যামল দত্ত ও সুভাস সিংহ রায়ের মতো লোককে। ব্যবসায় এবং ব্যাংকারদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যে লোককে হাসিনা নিয়োগ করেছিলেন সেই লোকটা নজরুল ইসলাম মজুমদার।’
এদিন তাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে দুই মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। পরে আদালত ৫ দিন করে দুই মামলায় ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
রিমান্ড শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সকল ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ী একটা মিটিং করেছিল। সেই মিটিংয়ে উনি (আসামি) বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন এবং শেখ হাসিনাকে বলেছিলেন, ‘আপনি চালিয়ে যান আমরা আপনার পাশে আছি।’ তার এই বক্তব্য সকল মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হয়েছে।
ফারুকী আরও বলেন, ব্যাংক থেকে টাকা-পয়সা লুটপাট করে নিয়ে শেখ পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য সবকিছু করেছিলেন তিনি। এই মজুমদার তাদের সাথে বসে আন্দোলনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। সেই হিসাবে সে এই অপকর্মের সাথে জড়িত। এই আন্দোলনে যারা গুলি চালিয়েছে এবং যাদের নির্দেশে চালানো হয়েছে তা থেকে তারা কোনোভাবেই বাঁচতে পারবে না।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে বলেন, তিনি এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান। বাংলাদেশের অনেক বড় শিল্প উদ্যোক্তা। তার অধীনে ৫ লক্ষ লোক কাজ করে। সে এখন জেলে। কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে এসব লোক বেকার হয়ে যাবে। তার বিরুদ্ধে মামলায় কোনো অভিযোগ নাই। সে কোনো রাজনৈতিকদলের সদস্য না। সে একজন ব্যবসায়ী মানুষ। সরকার আসে, সরকার যায়। তারা ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধার জন্য যা করা দরকার করে। জেল হাজতে থাকাকালীন তার হার্ডে রিং পরানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে। তাকে একাধিক মামলায় আগে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোনো কিছু পায় নাই। তার শারীরিক যে অবস্থা রিমান্ডে নেওয়ার মতো কোনো সুযোগ নেই। রিমান্ড বাতিল করে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হোক।
এরপর নজরুল ইসলাম নিজেই কিছু বলতে চান বলে আদালতকে বলেন। এরপর আদালত অনুমতি দেন।
তখন তিনি বলেন, আমি হার্টের রোগী। অনেক কষ্ট হচ্ছে। ওই সময় শেখ হাসিনার পাশে না থাকলে... আমার বড় ভাই ৫ বছর এমপি ছিল। সেই বড় ভাইকে ক্রসফায়ারে মারা হয়েছে। আমারও সেই অবস্থা হতো। আমার রিমান্ড বাতিল করে আমাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। এটা আমার একটা সাবমিশন।
পরে আদালত আদেশ দেন।
এরপর আবার রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌশলি (পিপি) ফারুকী বলেন, তারা যখন কোর্টে আসে তাদের অসুস্থ ক্যান্সার এই সেই অনেক কিছু হয়ে যায়; অথচ জুলাই আন্দোলনের সময় এমন জোরে জোরে বক্তব্য দিচ্ছেন যে, বোঝাই যায় না তিনি অসুস্থ। এটা আসলেই তারা বয়স্ক অসুস্থ এটা নাই সেটা নাই সবকিছু হয়ে যায় আন্দোলনে ছিলেন তখন কেনো অসুস্থ ছিলেন না। আমাদের এই ধরনের সম্পদ দরকার নাই যে সম্পদ অভদ্র যে সম্পদ মানুষের সে। যে সম্পদ স্বৈরশাসনের তৈরি করে অর্জন করা হয়েছে সেই সম্পদ আমাদের দরকার নাই এবং কোটি কোটি টাকা দেশ থেকে বাঁচার করেছে। শেখ হাসিনা যে ধরনের শরীর শাসন করেছে। তার আমূল পরিবর্তন। আমরা অল্প খাব হালাল খাবো হালাল পরব হালাল উপার্জন করব আমরা এ ধরনের সম্পদ চাই না এ ধরনের উদ্যোক্তা চাই না যারা মানুষের রক্ত চুষে খায়, সেই ধরনের উদ্যোক্তা আমাদের দরকার নাই। ২০০০ মানুষ মারা গেছে যারা গুলি করেছে তাদের জীবন সাথী যারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়িত তাদেরও তেমন শাস্তি শুরু হয়েছে আমরা এখন পর্যন্ত অর্ধেক মামলা করতে পারি নাই; আরো বাকি আছে।
আমার বার্তা/এমই