দিনাজপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন
প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২৫, ১২:০১ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

দিনাজপুরের বিরলে দিনে দুপুরে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের রহস্য উন্মোচন হয়েছে। ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক ছিল বলে জানায় পুলিশ।
বুধবার (২৫ জুন) দুপুরে বিরল উপজেলার একটি ব্যাংক থেকে টাকা তুলে মোটরসাইকেলে দিনাজপুর শহরে যাওয়ার সময় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে এক ব্যবসায়ীর ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে এমন ঘটনাটি জানার পর ডিবিসহ দিনাজপুর জেলা পুলিশ এর রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে। টানা তৎপরতা ও বিভিন্ন রকমের তদন্তের মাধ্যমে অবশেষে বিষয়টি প্রকাশ পায়। লোনের হাত থেকে রেহাই পেতে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম নিজেই এই ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ছিলেন।
ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম বিরল উপজেলার ৬ নং ভান্ডারা ইউনিয়নের গোপালপুর বড় বাড়ি গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে। তিনি একজন সার-কীটনাশক,ধান ও ভুট্টা ব্যবসায়ী।
অপরদিকে ঘটনার পর বুধবার রাত ১২টার দিকে দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হালিম তার ভেরিফাইট ফেসবুকে লিখেন, ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই অতঃপর পুলিশের জালে আসল অপরাধী। অবশেষে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন করলাম। ব্যাংকের লোনের টাকা শোধ করতে না পারায় টাকা ছিনতাই নাটকের অবতারণা করলেন মো. মইনুল ইসলাম নামে বিরল উপজেলার এক ব্যবসায়ী। তার নিজ বাসায় তল্লাশি করে ছিনতাই নাটকের টাকাসহ অন্যান্য মালামাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংক হতে উত্তোলনকৃত ৮ লাখসহ মোট ১১ লাখ টাকা, মোটরসাইকেলের চাবি ও মোবাইল ফোনও পাওয়া যায় এবং নাটক শেষ হয়।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন জানান, ‘আমি অনেকটা কনফার্ম ছিলাম, ঘটনাস্থলে গেলে ছিনতাইকারী বা যারা টাকা নিয়েছে আমরা তা দ্রুত উদ্ধার করতে পারবো। এই জন্য দ্রুতই ছুটে আসি। টাকা ছিনতাইয়ের যে বিষয়টি আমরা শুনেছিলাম সেখানে নাকি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। সেই অস্ত্র উদ্ধারের জন্য আমিসহ ডিবির দল এবং আমার যারা অফিসার আছে সবাই চলে আসি। এ ছাড়াও বিরল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুস ছবুরসহ সব টিম মাঠে নামার পর বাস্তবতায় জানতে পারি যে, ব্যবসায়ী মইনুলের নানাবিধ লোন আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেই লোনের হাত থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য তিনি নিজেই এই পলিসিটি খাটায়। ঘটনার পর আমি ব্যাংকের লোকের কাছ থেকে এবং তার কাছ থেকেও শুনেছিলাম। তিনি ব্যাংক থেকে ৮ লাখ টাকা তুলেছিলেন। সেই টাকা এবং তার সঙ্গে আরও তিন লাখ টাকাসহ ১১ লাখ টাকা আমরা তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করি। সেই টাকা আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি।’
ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম জানান, আমি থানায় একটি জিডি করার জন্য এই নাটকটি করেছি। তবে বিষয়টি যে এতদূর গড়াবে তা আমি বুঝতে পারিনি।
উল্লেখ্য, বুধবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিরল হতে দিনাজপুর যাওয়ার পথে বানিয়াপাড়া রেলগেটসংলগ্ন মহাজন বাড়ি ব্রিজের কাছে মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে ৩৪ লাখ টাকা ছিনতাই হয়েছে বলে ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম জানান। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় সোরগোল পড়ে যায় এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনে দিনাজপুর জেলা পুলিশ মাঠে নামে।
আমার বার্তা/এল/এমই