কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর সংশোধন

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৪, ১৯:০৯ | অনলাইন সংস্করণ

  কমল চৌধুরী:

এ বছরের ৬ জুন হতে কাস্টমস আইন ২০২৩ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে আইনের প্রায়োগিক এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য সকল বিষয় পর্যালোচনা করা হয়েছে। এতে দেখা যায় যে, আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সুফল নিশ্চিত করতে হলে উক্ত আইনের কতিপয় ধারায় একান্ত প্রয়োজনীয় কিছু সংশোধন ও কতিপয় নতুন বিধান সংযোজন করা প্রয়োজন। এছাড়াও নতুন বাংলা আইনে নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করায় তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি বিধিমালা জারি করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় নতুন কাস্টমস আইন, ২০২৩ এ যে সকল সংশোধন ও সংযোজন করা প্রয়োজন তার সংক্ষিপ্ত বিবরণসহ খসড়ার বিধিমালা সমুহের উপর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো।

কাস্টমস আইনের কতিপয় ধারা সংশোধন ও কতিপয় নতুন বিধান সংযোজন-(ক) কাস্টমস কর্মকর্তা নিয়োগ বা ক্ষমতা অর্পনের ক্ষেত্রে আইনী জটিলতা পরিহারের লক্ষ্যে সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারির বিধান বিলুপ্ত করা সংক্রান্ত ধারা ৪ এবং ৬ এর সংশোধন, (খ)বকেয়ার হিসাব সহজ করার লক্ষ্যে সুদ আদায় সংক্রান্ত ধারা ৩২ এর উপ- ধারা (৪) এর সংশোধন,(গ) গ্যারান্টির ধরন এবং গ্যারান্টি  প্রদানের বাধ্যবাধকতা নির্ধারণ সংশ্লিষ্ট ধারা ৪১ এর উপ-ধারা ২ এবং ধারা ৪৪ এর উপ-ধারা (২) এর সংশোধন, (ঘ) পণ্য ঘোষণার সংশোধন এর ক্ষেত্রে বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে কাস্টমস আইন ২০২৩ এর ধারা ৮৬ তে  প্রয়োজনীয় সংশোধন, (ঙ) খালাসকৃত পণ্য নিলাম সংশ্লিষ্ট ধারা সহজকরণের উদ্দেশ্যে ধারা ৯৪ এর  উপ-ধারা (২) এর সংশোধন,(চ)বিধিতে দন্ড আরোপের বিধান রেখে ধারা ১৭১ এর সংশোধন,(ছ) চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ন্যায় নিণয়ন ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট আইনের ধারা ২০২ স্পষ্টিকরণ,(জ) আপিল দায়ের সংক্রান্ত বিধান সংশোধন,(ঝ)দেওয়ানী আদালতের এখতিয়ার সংক্রান্ত বিধান সংযোজন,(ঞ) আদালতের নির্দেশনাক্ষেত্রে দালিলিক  প্রমাণ উপস্থাপনের বিধান রেখে ধারা  ২৬১ এর সংশোধন,(ট) বিশেষায়িত  কার্যকর ইউনিট গঠনের বিধান ধারা ২৬৪ এর পর নতুন ধারা ২৬৪ক সংযোজন,(ঠ) এ আইনের অধীন যে কোনো কার্যক্রম ইলেকট্িরনক  মাধ্যমে সম্পাদন করার আইনি বিধান সংযোজনের লক্ষ্যে ধারা ২৬৫ এর উপ-ধারা (১) এর সংশোধন।

( ২) কাস্টমস আইন ২০২৩, বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আবশ্যিক কতিপয় বিধিমালা প্রণয়ন-

কাস্টমস আইন ২০২৩ এর বিধানসমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিধি বর্তমানে কার্যকর আছে। এ বিষয়ে নতুন যে সকল বিধিমালা আবশ্যক তা হচ্ছে- (ক) ইলেকট্রনিক রেকর্ড এবং ইলেকট্রনিক পেমেন্ট  বিধিমালা, ২০২৪ (খ)  কাস্টমস গ্যারান্টি বিধিমালা, ২০২৪ (গ)পণ্য ঘোষণা, শুল্কায়ন ও পুনঃ শুল্কায়ন বিধিমালা,২০২৪, (ঘ) এক্সপ্রেস পদ্বতির আওতাভুক্ত পণ্যচালান দ্রত খালাসকরণ বিধিমালা, ২০২৪, (ঙ) আন্তর্জাতিক দরপত্রের  বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময়ে জাহাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে পণ্য তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে প্রযোজ্য শুল্ক কর অব্যাহতি  সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন, (চ) বন্ডেড ওয়ারহাউজ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিদ্যমান বিধি-বিধান হাল নাগাদপূর্বক নতুন বিধিমালা জারী সংক্রান্ত জারি সংক্রান্ত প্রস্তাব।

>> কাস্টমস আইনের প্রথম তফসিলে সংশোধন

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহযোগীকরণের উদ্দেশ্যে পণ্যের নামকরণ এবং শ্রেণীবিন্যাস জনিত জটিলতা দূর করার লক্ষ্যে কাস্টমস আইন, ২০২৩, এর প্রথম তফসিলে বিদ্যমান এইচ এস কোড   এবং আমদানি শুল্ক সম্পূরক মূল্য সংযোজন কর ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট এস আর ও আদেশ এ যেসব করণীয় ত্রুটি অসঙ্গতি ও বৈষম্য পরিলক্ষিত হয়েছে তা যথাযথভাবে পরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সংশোধন ক্ষেত্রে পৃথক ও যুক্তিকীকরণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্ণিত প্রস্তাব সমূহ বাস্তবায়ন করা হলে তা অর্থনীতির পুনর্গঠনে সহায়ক হবে, অর্থনৈতিক কার্যক্রম গতিশীল হবে, শিল্পের বিকাশ সাধিত হবে।

বাংলাদেশে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক ইতিমধ্যে কন্টেইনার স্কাইনার ক্রয়, এসআই ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যার এর আপগ্রেডেশনসহ সক্রিয়  সকল  কাস্টমস স্টেশনে অ্যাসাইকোডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়্যার স্থাপন করা হয়েছে।   কাস্টমস ডিউটি অনলাইনে প্রধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পণ্য চালানোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট কমিশনারেট চালু করা হয়েছে ।ন্যাশনাল  উইন্ডো ব্যবস্থাপনা অথরাইজড ইকনোমিক অপারেটর প্রবৃত্তি কার্যক্রম চালুকরন ও অটোমেশন  চলমান রয়েছে। এ সকল কার্যক্রম বাস্তবায়িত হলে  প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। 

 

আমার বার্তা/এমই