দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এডভোকেট মো. শাহালমের অবদান প্রশংসনীয়
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৩:২৯ | অনলাইন সংস্করণ
বিশেষ প্রতিবেদক:
আলহাজ্ব এডভোকেট মো. শাহ আলম দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পেলেও মূলত তিনি স্বনামধন্য একজন আইনজীবী। বাংলাদেশে প্রথমসারীর একজন শিল্প উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি সমাদৃত দেশ বরেণ্য । তার প্রতিষ্ঠিত ম্যাটাডোর গ্রুপে প্রায় ৪০০০ হাজার কর্মচারী এবং কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহ করছেন। তার প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সকল চাকরীজীবিদের যথাসময়ে বেতন পরিশোধ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এই জনহিতৈষী সমাজসেবকের।
১৯৮০ সালে ম্যাটাডোর পেন দিয়ে ব্যবসায়িক জগতে পা রেখে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ম্যাটাডোর গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ হিসেবে বর্তমানে দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান। স্টেশনারি, ব্যক্তিগত যত্নপন্য, খাদ্য পন্য, নির্মাণ সামগ্রী, প্ল্যাস্টিক পন্য সামগ্রী, বিনোদন এবং স্বাস্থ্য সেবা বা হাসপাতালসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বলতে গেলে ব্যবসা ক্ষেত্রে তিনি অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন।
পুরান ঢাকার এই কৃতি সন্তান শাহালম উকিল নামে পরিচিত এবং তিনি শুরু থেকেই লালবাগ হাজারীবাগ এলাকার জাতীয়তাবাদী চিন্তা চেতনার একজন উধারপন্থী সমাজসেবক, ইসলামিক চিন্তাবিদ ও জনহিতৈষী মানুষ হিসেবে সুপরিচিত। এলাকার গরীব দুঃখীদের আইনের সেবাসহ আর্থিকভাবে তিনি সাহায্য দেয়ায় পুরান ঢাকায় তিনি একজন দানবীর হিসেবেও রয়েছে অনেক খ্যাতি। তবে তিনি দান করার ক্ষেত্রে ছিলেন প্রচার বিমূখ। গণমাধ্যম বা নিউজ মিডিয়া থেকে দূরে থেকেছেন।
তাঁর এমন সজ্জন জীবনাচারনে উজ্জীবিত হয়ে তাঁর সাথে আড্ডা দিয়েছেন আমাদের টিম। জীবনের সায়াহ্নে এসে তাঁর চাওয়া পাওয়া এবং সফলতা-ব্যার্থতার কথা আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন। তিনি বলেন, আমি আমার জানামতে এলাকাবাসী আমার স্বজনদের মঙ্গল ছাড়া অমঙ্গল কামনা করিনি। আমার মত ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে যা করার আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি এলাকাবাসীর জন্য ভাল কিছু করে যেতে। আমি যা করে যেতে পারিনি আমার সন্তানেরা করবে এটাই আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করছি। আপনারা সবাই আমার ও আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন। তাঁর সন্তানদের রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি এখন আল্লাহ্র রহমতের অপেক্ষায় আছি, তবে আমার সন্তানেরা তারা তাদের ইচ্ছা অনিচ্ছার কথা বলতে পারে।
এলাকার বয়জ্যেষ্ঠ মানুষ হিসেবে হাজারীবাগ লালবাগ এলাকায় সর্বত্র শ্রদ্ধাভাজন ম্যাটাডোরের চেয়ারম্যান এ্যডভোকেট শাহালম। তিনি রফিকুল ইসলাম মোল্লা মাদ্রাসা এবং মসজিদ কমপ্লেক্স করেছেন প্রায় কয়েক কোটি টাকায়। হাজারীবাগ বোরহানপুর জামে মসজিদ জাহা সৌদি আদলে নির্মাণ করেছেন। এই মসজিদের নির্মাণ শৈলী দেখে সবাই মুগ্ধ হন। কাজিরবাগ মসজিদ এবং মাদ্রাসা, আজিম উদ্দিন হুজুরের এতিমখানা, ম্যাটাডোর স্টাফ কোয়াটার মসজিদ, চাঁদপুর হাজিগঞ্জ জয় সারা চৌধুরী বাড়ি মসজিদ মাদ্রাসাসহ এতিমখানায় আমি আমার সাধ্যমত দান করেছেন। ঢাকার কামরাঙ্গি চরে অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মাণে আমি নিজে থেকেই অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন। এছাড়াও সিলেট হবিগঞ্জ জেলায় নির্মিত একটি মসজিদ ছাড়াও সারা বাংলাদেশে শতশত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মসজিদে আর্থিক অনুদান ও অবদান রয়েছে। তাঁর জীবনে অনেক কাজের মধ্যে সবচেয়ে বড় হিসেবে মনে করেন, অনেক অস্বচ্চল মানুষকে পবিত্র হজ পালন করিয়েছেন।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত কারখানা এলাকায় যেমন বেকারত্ব গুছিয়েছেন তেমনি এতিমরাও স্বাবলম্বী হয়েছে। কর্মকর্তা কর্মচারীদের পড়ুয়া সন্তানদের আর্থিক সহযোগীতা ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে সহায়তা করেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য সেবার জন্য এলাকায় ম্যাটাডোর হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছেন। ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণ-অভ্যূত্থানে তাঁর অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। সরকার আসে সরকার যায়, আমি সরাসরি কোন দলের সাপোর্ট করিনা আমার সন্তানেরাও তাই। আমাকে সকল দল ও মতের মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়। আমার একটাই দল আমি মুসলিম আমি আল্লাহ্র লোক। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সবাই বলতো আমি তাদের সাপোর্টার আর আওয়ামীলীগের সময়ও তাই মনে করতো। কিন্তু দিন শেষে আমরা ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী। তাঁর শেষ জীবনে এসে নিজেকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন এমন প্রশ্নে কর্মবীর শাহালম বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে স্বাভাবিকভাবে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে গেছি। পরবর্তীতে আমি ও আমার সন্তানকে মানুষ করার চেষ্টা করেছি। আর্থিক সফলতার জন্য ব্যবসা করেছি। পাশাপাশি সাধারন মানুষের জন্য ভাল কিছু করতে সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। যা করেছি তা সবই দৃশ্যমান সেখানে আমি আমাকে মূল্যায়ন করব কিভাবে? এলাকাবাসী ও গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে আপনারাই আমার মূল্যায়ন করবেন।
ম্যাটাডোর একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান কিন্তু পুরান ঢাকায় শাহালম উকিলও একটি প্রতিষ্ঠান। কারণ তিনি শুধু একজন সফল ব্যবসায়ীও নন, পারিবারিক জীবনেও একজন সফল পিতা। এক ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অন্য একজন ডাক্তার। তার এক ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান। তার দ্বিতীয় ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এলাকার বিভিন্ন স্কুল এবং মসজিদের সভাপতি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ম্যাটাডোর এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনিও এলাকায় পিতার ন্যায় সমাজসেবায় নিয়োজিত রয়েছেন। কন্যাদায়গ্রস্থ পিতাকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতাসহ গরীব দূঃখী মেহনতি মানুষের জন্য নিজেকে পিতার যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবেই এখন সমাদৃত। বাংলাদেশের প্রতিটি কোণায় কোণায় দানবীর শাহালম উকিলের মত এমন জনদরদী ও সমাজসেবক জন্ম নিয়ে দেশ ও জনকল্যাণে ব্রত হবে এমটাই আশা মুসলিম উম্মাহর।
আমার বার্তা/প্রদীপ জয়/এমই