রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এনবিআরের ব্যর্থতার কারণ
প্রকাশ : ৩১ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

গত অর্থবছরও রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ঘাটতি থেকেছে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা।
দুর্বল কর্মপরিকল্পনা আর উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের কারণেই সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও বারবার ব্যর্থ হচ্ছে সংস্থাটি। এমনটাই বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য যে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা এনবিআরকে দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা, তা গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। অথচ গত অর্থবছরের ওই লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও যায়নি এনবিআরের রাজস্ব আদায়। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, কম রাজস্ব আদায় হলে জনগণের ঋণ বেড়ে যায়।
এনবিআরের হালনাগাদ তথ্য, গত অর্থবছরে ভ্রমণ ও আয়কর থেকে আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৯ হাজার কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৪২ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, কোনো বছরেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হয় না।
গত অর্থবছরে স্থানীয় পর্যায়ে ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা। অথচ হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এসময়ে কাস্টমস থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হলেও আদায় হয়েছে ১৬.৮৬ শতাংশ কম। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, সামনের দিনগুলোতে ঋণের বোঝা আরও বাড়তে থাকলে সেটি কারও জন্যই ভালো হবে না।
রাজস্ব আদায়ের মোট হিসাবে দেখা যাচ্ছে, গত অর্থবছর ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংস্থাটি আদায় করতে পরেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ কোটি টাকা। অর্থবছরের মাঝপথে এসে বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়ানোর পরও আদায়ে বেহাল দশা থেকে বের হতে পারেনি এনবিআর। কারণ হিসেবে সংস্থাটির দুর্বল কর্মপরিকল্পনা ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে দূরদর্শিতার ঘাটতিকে দায়ী করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, গত অর্থবছরে এনবিআরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায় অনেক কম হয়েছে, যা অর্থনীতিতে চাপ বাড়াচ্ছে। এই চাপ কমার বদলে সামনে আরও বেড়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, শুধু লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেই হবে না; তার সঙ্গে অবশ্যই একটি কার্যকর পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিতে হবে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ। তা না হলে, চলতি অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা পূরণও শেষ পর্যন্ত গত বছরের মতো হবে।
বড় অঙ্কের ঘাটতি আর সংস্কারের চাপ মাথায় নিয়েই চলতি অর্থবছর রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা সাজানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
আমার বার্তা/এল/এমই