মার্কিন বাজারে বাড়ছে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি

প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

নানা জটিলতা ও নতুন শুল্কহার নির্ধারণ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানি বেড়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে টি-শার্ট, জগার ও স্লিপারের মতো কম দামের পণ্য রফতানিতে ২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ সময়ে বাংলাদেশ প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অফ টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল (ওটেক্সা) এর তথ্যে দেখা যায়, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দেশটি বাংলাদেশ থেকে আমদানি করেছে ৪ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক, যেখানে আগের বছর ছিল ৪ বিলিয়ন ডলার। একক মাস হিসেবে জুলাইয়েও প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ, যার পরিমাণ ৭৩০ মিলিয়ন ডলার।
 
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রফিক চৌধুরী বলেন, চীনের ওপর আরোপিত মার্কিন শুল্ক বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে।
 
তবে প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে গেছে ভিয়েতনাম। দেশটি ৯ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি করেছে, যা বাংলাদেশের দ্বিগুণ। যদিও প্রবৃদ্ধির হার বাংলাদেশে বেশি-২১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যেখানে ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ। অন্যদিকে শুল্ক জটিলতায় যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রফতানি কমেছে ২১ শতাংশ। ভারতের অবস্থানও বাংলাদেশের পেছনে।
 
বিশেষ করে কম মূল্যের পণ্য যেমন টি-শার্ট, পলো, জগার, স্লিপার রফতানি বাড়িয়ে মার্কিন বাজার ধরে রাখছে বাংলাদেশ। বিজিএমইএর পরিচালক রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘যেসব পণ্য আমরা রফতানি করছি, প্রতিযোগী দেশগুলো সেগুলো রফতানি করে না। এই বাজার বহুদিন ধরে আমাদের হাতে আছে বলেই টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে।’
 
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির সবচেয়ে বড় একক বাজার যুক্তরাষ্ট্র। বছরে এই বাজারে রফতানি হয় প্রায় ৮ থেকে ৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৬ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
 
তবে এই বাজারেই জটিলতা সবচেয়ে বেশি। ওটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১১ শতাংশ। তবে শুল্ক ও প্রশাসনিক জটিলতা রয়ে গেছে।
 
ব্যবসায়ী নেতাদের মতে, এগুলো দ্রুত সমাধান করতে পারলে রফতানি আয় আরও বাড়বে, যা পুরো তৈরি পোশাক খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরামের চেয়ারম্যান এস এম আবু তৈয়ব বলেন, ‘সরকার ও বিজিএমইএকে তৈরি পোশাক মালিকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে হবে। এনবিআর, বন্দর ও প্রণোদনা সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে একটি সমন্বয় সেল গঠন করা প্রয়োজন, যার মাধ্যমে সমস্যাগুলো খুঁজে বের করে সমাধান করা সম্ভব।’
 
উল্লেখ্য, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) ছিল ৩৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।

আমার বার্তা/এল/এমই