কিছুতেই কান্না আটকে রাখতে পারিনি: আবুল হায়াত

প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:১২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত এক সপ্তাহ ধরে চলমান নৈরাজ্য-সহিংসতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে আসছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দুষ্কৃতকারীদের নাশকতা ও সহিংসতার কারণে দেশজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার মধ্যরাতে কারফিউ জারি করে সরকার।

রোববার (২১ জুলাই) কোটা পুনর্বহাল করে দেয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রায়ের প্রেক্ষিতে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এরপর বিদ্যমান পরিস্থিতির উন্নতি এবং জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসতে থাকার পরিপ্রেক্ষিতে কারফিউ ক্রমে শিথিল করা হচ্ছে। বন্ধ থাকা ইন্টারনেটও চালু করা হয়েছে স্বল্প পরিসরে।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও দেশে ঘটে যাওয়া ধ্বংসাত্মক সহিংসতায় উদ্বিগ্ন গোটা দেশবাসী। উদ্বিগ্ন শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও। আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও অসংখ্য মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকাহত প্রবীণ অভিনেতা আবুল হায়াতও।

এ প্রসঙ্গে শুক্রবার দেশের একটি গণমাধ্যমকে আবুল হায়াত বলেন, ‘আমি খুব মর্মাহত।

বৃহস্পতিবার আমি কেঁদেছি। মৃত্যুর খবরে আমার কান্না থামাতে পারছিলাম না। বাচ্চাগুলোর একটার পর একটা মৃত্যুর খবর আসছিল, কিছুতেই কান্না আটকে রাখতে পারিনি। আমি অসুস্থ, এখন বেশির ভাগ সময় বাসায় থাকি, কোথাও বের হই না—আমি তো ভাবতেই পারি না, ছোট ছোট বাচ্চার সঙ্গে এমনটা হতে পারে! আমাদের পুলিশ বাহিনী তাদের সামনে দাঁড়ানো কাউকে এভাবে মারবে, এটা কল্পনারও অতীত।’

আবুল হায়াত আরো বলেন, ‘আমাদের বিল্ডিংয়ের একটা ফ্ল্যাটের একটা ছেলে মারা গেছে, ফারহান ফাইয়াজ।

ওর মা–বাবা এবং আমরা একই বিল্ডিংয়ে থাকি। পুরো পরিস্থিতি নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। সরকার অনেক দেরি করে ফেলেছে। যেটা এক দিনে সমাধান সম্ভব ছিল, সেটা তারা অনেক সময় নিয়ে করল—কষ্টটা এখানেই লাগে। সেই একই সমাধানে তো এল তারা, যেটা বলেছিল সম্ভব না, সেটাই তো তারা এক দিনের ব্যবধানে করল! সুতরাং এটা সেদিনই সম্ভব ছিল, প্রথম দিন না হলে দ্বিতীয় দিনে সম্ভব হতো। এ জন্যই বলি, সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়। অনেক কষ্ট পেয়েছি। আমি এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি।’

এদিকে কোটা আন্দোলন ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। আজ বুধবার (২৪ জুলাই) খুলছে সব অফিস। তবে কারফিউ বহাল রয়েছে। ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে আজ বুধবার এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার কারফিউ বহাল থাকবে। তবে আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাত ঘণ্টা কারফিউ শিথিল থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এ ছাড়া বাকি জেলাগুলোতে সিদ্ধান্ত নেবে জেলা প্রশাসন।

কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় এ পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত দেড়শ মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। আহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। টানা পাঁচদিন ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার রাতে আবার সীমিত আকারে চালু হয়েছে।


আমার বার্তা/জেএইচ