এক যুগ পর সাময়িক মুক্তি পেলেন ইরানের নোবেলজয়ী নার্গিস
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:১২ | অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন ডেস্ক:
তেহরানের কারাগার থেকে সাময়িক মুক্তি পেলেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মানবাধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি। নার্গিসের জীবনসঙ্গী ত্বাকি রাহমানির বরাত দিয়ে বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ‘প্রপাগান্ডা ছড়ানোর’ অভিযোগে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি ছিলেন তিনি। কারাবন্দী অবস্থায় ২০২৩ সালে নোবেল পদক পান তিনি। ২০১১ সাল থেকে তাকে কয়েক দফায় বেশ কয়েকটি জেলে থাকতে হয়েছে।
নার্গিসের আইনজীবী মোস্তাফা নিলি জানিয়েছেন, ‘ফরেনসিক চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে তেহরানের কৌঁসুলি তিন সপ্তাহের জন্য নার্গিস মোহাম্মদীর কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। ২১ দিন আগে তার দেহ থেকে একটি টিউমার অপসারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি হাড়েও অস্ত্রোপচার চালানো হয়। এসব কারণে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
নরওয়ের নোবেল কমিটির প্রধান ইউর্গেন ওয়াতনে ফ্রিদনেস নার্গিসের সুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতিতে ইরানের কর্তৃপক্ষকে নার্গিসের কারাদণ্ড বাতিল ও উপযুক্ত চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইরানে নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই এবং মানবাধিকার ও সবার অধিকার নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখায় নার্গিসকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ পদক ওেয়ার সময় অসলোতে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির প্রধান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন জানান, ‘ইরান সরকার তাকে মোট ১৩ বার গ্রেপ্তার করেছে। পাঁচবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং মোট ৩১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।’
পুরস্কার ঘোষণার সময় নোবেল কমিটি বলেছে, সাহসী সংগ্রামের পথে নার্গিস মোহাম্মদীকে ব্যক্তিগত জীবনে প্রচণ্ড মূল্য দিয়ে হয়েছে। নার্গিস ইরানের মানবাধিকারকর্মীদের সামনের সারির একজন। তিনি নারী অধিকার রক্ষা ও মৃত্যুদণ্ড বন্ধের জন্য কাজ করেছেন। ২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী শিরিন এবাদি প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার কেন্দ্রের উপপ্রধান তিনি। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচার চালানোসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফ্রন্ট লাইন ডিফেন্ডারস বলেছে, তাকে প্রায় ১২ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকাতেও এ বছর নাম ছিল ইরানি এই মানবাধিকারকর্মীর।
বিভিন্ন অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে নার্গিস মোহাম্মদি এরই মধ্যে ১২ বছর কারাভোগ করেছেন। আদালত বলেছেন, সাজাভোগের পর নার্গিস মোহাম্মদি দুই বছর দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। তিনি কোনো রাজনৈতিক ও সামাজিক গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবেন না। এমনকি ওই সময় মুঠোফোন ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকতে হবে নার্গিস মোহাম্মদিকে।
আমার বার্তা/এমই