ভারতে বিক্ষোভের মুখে বাড়ি বিক্রি করতে বাধ্য হলেন মুসলিম দম্পতি

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫২ | অনলাইন সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

শখের কেনা নতুন বাড়ি থেকে ভারতে জোরপূর্বক এক মুসলিম দম্পতিকে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় শহর মোরাদাবাদের একটি অভিজাত আবাসিক এলাকায় একটি বাড়ি কেনার পর হিন্দুত্ববাদীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে তাদের।

শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ এনে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী দলগুলাে যখন সরব, ঠিক সে সময় এ ঘটনা সামনে এলো।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে মোরাদাবাদের পস টিডিআই সিটিতে মুসলিম পরিবারকে বাড়ি বিক্রির খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় হিন্দু প্রতিবেশীরা প্রতিবাদ শুরু করেন।  

এক ভিডিওতে মেঘা অরোরা নামে প্রতিবাদকারীদের একজন বলেন, আমাদের মন্দিরের সামনে কোনো মুসলিম পরিবারকে আমরা সহ্য করতে পারি না। এটি আমাদের নারীদের নিরাপত্তার প্রশ্ন।

তিনি দাবি করেন, বাড়ির বিক্রয় বাতিল করতে হবে এবং মুসলিম পরিবারকে এলাকা ছেড়ে যেতে হবে।

শুক্রবার বাড়ির সাবেক মালিক ডা. অশোক বাজাজ জানান, স্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যস্থতায় একটি সমঝোতা হয়েছে। মুসলিম দম্পতি তাদের বাড়ি পুনরায় হিন্দু পরিবারের কাছে বিক্রি করে দেবেন।

ভারতের মতো বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশে এমন ঘটনা, দেশটির মানবাধিকার এবং সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নগ্নভাবে তুলে ধরেছে।

মুসলিম পরিবারকে বাড়ি বিক্রির খবর জাতীয় সংবাদে পরিণত বিশ্বাস করতে পারেননি বাড়ির মালিক ডা. বাজাজ। তিনি হতবাক হয়ে বলেন, এই ঘটনা অপ্রত্যাশিত ছিল এবং আমি আশা করিনি এটি জাতীয় সংবাদ হয়ে উঠবে।

মোরাদাবাদ উত্তর প্রদেশ রাজ্যে অবস্থিত, যা দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার দ্বারা পরিচালিত। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রকাশ্যে মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলে চলেছেন।

ভারতে ২০১৪ সালে হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুসলিমদের টার্গেট করে বিদ্বেষ ছড়ানো এবং সেইসাথে হত্যার ঘটনার খবর নিয়মিত শিরোনাম হচ্ছে।

উত্তর প্রদেশে ২০১৫ সালে ঘরে গরুর মাংস রাখার গুজবে ৫২ বছরের এক মুসলিমকে যখন পিটিয়ে মারা হয় তখন প্রধানমন্ত্রী মোদি একটি কথাও বলেননি, যা নিয়ে ওেই সময় অনেক সমালোচনা হয়।


আমার বার্তা/জেএইচ