প্রতারণা দমনে এআই, ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড উদ্ধার করলো যুক্তরাজ্য

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতারণা দমন কার্যক্রমে বিরাট সাফল্য এসেছে। কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, যার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে নতুন প্রজন্মের এআই সিস্টেম।

সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধার হওয়া অর্থের প্রধান অংশ এসেছে কোভিড-১৯ মহামারির সময়ে জালিয়াতি থেকে। এছাড়াও বেআইনি কাউন্সিল ট্যাক্স দাবি এবং সরকারি আবাসন ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকেও উল্লেখযোগ্য অর্থ ফেরত আনা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল ২০২৪ থেকে গত ১২ মাসে মোট ৪৮০ মিলিয়ন পাউন্ড উদ্ধার করা হয়েছে, যা এক বছরের মধ্যে সরকারের প্রতারণা দমন ইউনিটের জন্য সর্বোচ্চ অর্জন। এ সফলতায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের তথ্য মিলিয়ে দেখা ছাড়াও ব্যবহৃত হয়েছে ফ্রড রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট অ্যাকসেলারেটর নামে বিশেষ এআই টুল।

সরকার জানিয়েছে, এই অর্থ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নতুন নিয়োগে ব্যবহার করা হবে। মোট উদ্ধার হওয়া অর্থের মধ্যে প্রায় ১৮৬ মিলিয়ন পাউন্ড এসেছে কোভিড-১৯ মহামারির সময় প্রদত্ত ঋণ জালিয়াতি থেকে। সে সময় ব্যবসায়ীদের সহায়তার জন্য বাউন্স ব্যাক লোন প্রকল্প চালু হয়েছিল, যেখানে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত ঋণ নেওয়া যেত।

কিন্তু পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেয় এবং ঋণ ফেরত দেয়নি। এমনও ঘটনা ঘটেছে, একজন নারী কৃত্রিমভাবে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ঋণ নেওয়া অর্থ বিদেশে পাঠিয়েছেন।

বুধবার যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রতারণা দমন সম্মেলনে ক্যাবিনেট অফিসের মন্ত্রী জশ সাইমন্স এই সাফল্যের কথা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘আধুনিক এআই এবং তথ্যপ্রযুক্তি সরকারকে জনগণের অর্থ নিরাপদ রাখতে সাহায্য করছে এবং প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা করছে।’

সরকার জানিয়েছে, এই এআই টুল শুধু প্রতারণা শনাক্ত করতেই নয়, নতুন নীতি কার্যকর হওয়ার আগেই সম্ভাব্য দুর্বলতা চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধযোগ্য করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি আন্তর্জাতিকভাবে লাইসেন্স দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এরই মধ্যে এতে আগ্রহ দেখিয়েছে।

যদিও সরকার এআই ব্যবহারের মাধ্যমে সাফল্যের দাবি করছে, নাগরিক অধিকারকর্মীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এর আগেও কল্যাণভাতা প্রতারণা দমন করতে ব্যবহৃত একটি এআই টুলকে বয়স, অক্ষমতা, বৈবাহিক অবস্থা ও জাতীয়তার ভিত্তিতে পক্ষপাতদুষ্ট বলে সমালোচিত হয়েছিল।

চলতি বছরের শুরুতে প্রকাশিত অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে সরকারের প্রযুক্তি ও এআই ব্যবহারের সীমাহীনতা এবং অনিয়ন্ত্রিত প্রয়োগের তীব্র সমালোচনা করা হয়।


আমার বার্তা/জেএইচ