মোবাইল অপারেটরদের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে বিটিআরসি
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১২:১৫ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

ইজারা নেওয়া অপটিক্যাল ফাইবারে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র ব্যবহারে মোবাইল অপারেটরদের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
অপারেটররা বলছে, এখন তারা এই যন্ত্র ব্যবহার করতে পারবে। এতে মোবাইল ইন্টারনেট–সেবার মান বাড়ানো ও ব্যয় সাশ্রয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
অতীতে অপারেটররা এই যন্ত্র ব্যবহার করতে পারত। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২১ সালে বিটিআরসি এই যন্ত্র ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে। যন্ত্রটি ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয় শুধু নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটরদের।
এনটিটিএন অপারেটররা সারা দেশে অপটিক্যাল ফাইবার (বিশেষ ধরনের তার) স্থাপন করে এবং তার মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরদের সেবা দেয়। মোবাইল অপারেটররা অপটিক্যাল ফাইবার ইজারা নিয়ে তার মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ সঞ্চালন করে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এনটিটিএন অপারেটররা নিজেদের অপটিক্যাল ফাইবারে নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র বসিয়ে সেটার সেবা নিতে মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে টাকা নিত। মূলত এনটিটিএন অপারেটরদের ব্যবসা দিতে মোবাইল অপারেটরদের ওপর যন্ত্রটি ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল বিটিআরসি।
নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্রটির নাম ডেন্স ওয়েভলেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং (ডিডব্লিউডিএম)। এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যা মোবাইল নেটওয়ার্ককে অপটিক্যাল ফাইবারের সঙ্গে সংযুক্ত করে। বাংলাদেশে ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোবাইল অপারেটররাই বিটিআরসির অনুমতি নিয়ে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছিল।
টেলিযোগাযোগ খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টেলিযোগাযোগ খাতে উচ্চগতির ইন্টারনেট–সেবা প্রদান, নেটওয়ার্ক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এবং দ্রুত ত্রুটি শনাক্ত করতে ডিডব্লিউডিএম গুরুত্বপূর্ণ।
এনটিটিএন থেকে ইজারা নেওয়া অপটিক্যাল ফাইবারে মুঠোফোন অপারেটরের ডিডব্লিউডিএম যন্ত্র ব্যবহারের বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে ১০ এপ্রিল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিটিআরসি।
সুফল কী
অনেক দিন ধরেই বিটিআরসির কাছে ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারের সুযোগ চেয়ে আসছিল মোবাইল অপারেটররা। তাদের সেই দাবি পূরণ হলো।
বিটিআরসি সূত্র বলছে, দাবি তোলার ক্ষেত্রে অপারেটররা সেবার মান বাড়ানো ও ব্যয় সাশ্রয়ের কথা বলেছিল, যার সুফল পাওয়ার কথা গ্রাহকের।
মোবাইল অপারেটর রবি আজিয়াটার চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি খুব বড় কোনো সাশ্রয় নয়। এ জন্য আমি তাৎক্ষণিক কোনো সুফলের কথা বলব না। তবে সুফল তো আছেই। আমাদের খরচ যদি কমে যায়, তাহলে তার সুফল গ্রাহকও পাবেন।’
দেশের ইন্টারনেট গ্রাহকদের বেশির ভাগ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। বিটিআরসির হিসাবে, গত ফেব্রুয়ারি শেষে মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ৬০ লাখ। সর্বশেষ ৯০ দিনে একবার ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই তাঁকে গ্রাহক হিসেবে ধরে বিটিআরসি।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমবে কি না, জানতে চাইলে মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান তাইমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিডব্লিউডিএম ব্যবহারে মাত্র অনুমোদন পেলাম। সময় লাগবে। আমরা দেখব কীভাবে গ্রাহককে সুবিধা দেওয়া যায়।’
আমার বার্তা/এল/এমই