শীর্ষ উদ্ভাবকরা পেলেন বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

তরুণ উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিনির্ভর ভাবনা ও সাফল্যকে সম্মান জানাতে অনুষ্ঠিত হলো ‘বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫’। “উদ্ভাবনকে স্বীকৃতি, রূপান্তরকে অনুপ্রেরণা” প্রতিপাদ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সেরা ৩২টি উদ্ভাবনকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।

শনিবার ঢাকার ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি, এমসিআইপিএস এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী (অব.), ওএসপি, এনডিসি, পিএসসি, টিই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, “আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। আমরা প্রায়ই নিজেদের হীনভাবে দেখি এবং পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। অথচ আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেই রয়েছে অসীম সম্ভাবনা — তাদের উদ্ভাবনী শক্তিই পারে বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রযুক্তি মানচিত্রে আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরতে।”

বিশেষ অতিথি শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “আমরা চাই, এমন প্রোগ্রামের মাধ্যমে এমন কিছু ইনোভেটিভ প্রজেক্ট বেরিয়ে আসুক যেগুলোর মধ্যে আইসিটি ডিভিশন বিনিয়োগ করতে পারবে। আমরা ইতোমধ্যেই অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছি এবং এমন টেকনোলজি খুঁজছি যা সাধারণ মানুষের বাস্তব উপকারে আসবে।”

আরেক বিশেষ অতিথি মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী (অব.) বলেন, “প্রকৃত উদ্ভাবন হলো মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সমস্যাকে প্রযুক্তিনির্ভর উপায়ে সমাধান করা। প্রযুক্তি যেন শুধু শহরে সীমাবদ্ধ না থাকে — প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও এতে অংশ নিতে পারে, সেটিই হবে প্রকৃত অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল ইকোসিস্টেম।”

বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক (বিন)–এর চেয়ারম্যান সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, “আমরা উদ্ভাবকদের এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে চাই, যেখানে তারা তাদের আইডিয়া উপস্থাপন করতে পারবে এবং জাতীয় স্বীকৃতি পাবে। এর মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ ও স্টার্টআপগুলো আরও এগিয়ে যাবে।”

বিনের জেনারেল সেক্রেটারি মুন এম. রাজীব বলেন, “বিন মূলত একটি সহযোগিতামূলক ইকোসিস্টেম তৈরি করছে, যেখানে মিড–ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনাল, শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্ভাবক ও সাংবাদিকরা একসাথে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে উদ্ভাবনকে জাতীয় উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা।”

এ বছর সারাদেশ থেকে ২৫৫টি আইডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রাথমিকভাবে ৯০টি আইডিয়া বাছাই করা হয়, পরে চূড়ান্ত মূল্যায়নের পর ৩২টি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়।

চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৯টি উদ্যোগ—

শিক্ষার্থী শ্রেণিতে: রাডসেফ (মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি), বৃত্ত ডট এক্সওয়াইজেড (রুয়েট), কেয়ার হুইলচেয়ার (আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ), সেফ স্টেপ (রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ)

ব্যক্তিগত উদ্যোগে: সেবার জানালা – ইমপ্যাক্টফিউজ কোয়ালিশন

প্রতিষ্ঠান শ্রেণিতে: ফাস্ট অ্যান্ডভান্সড অব বাংলাদেশ (টানেলার্স), সিনেসিস আইটি পিএলসি (ই-রিটার্ন সিস্টেম), রাইজআপ ল্যাবস (কমপ্লিফাই), এবং রোবোলাইফ টেকনোলজিস (রোবোলাইফ বায়োনিক আর্ম)

বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস শুধু একটি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান নয়—এটি তরুণদের উদ্ভাবন, চিন্তা ও উদ্যোগের এক অনন্য মঞ্চ। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো, বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাত শুধু আজ নয়, আগামীর বিশ্বেও আলো ছড়াতে প্রস্তুত।


আমার বার্তা/জেএইচ