‘নগদ’ প্রশাসকের কার্যক্রমে ফের স্থিতাবস্থা হাইকোর্টের
প্রকাশ : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:০৯ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন
মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’-এ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রশাসকের সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর আবারও স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানি নিয়ে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালত বলেছেন, ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তারা এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দেবেন। তবে তার আগ পর্যন্ত নগদ পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ করা প্রশাসকের সব ধরনের কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকবে।
এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের এক আদেশে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত নগদে প্রশাসকের সব কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে প্রশাসক এবং তার সহকারীরা নগদে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, যা আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট বরখেলাপ।
বুধবার হাইকোর্টের এ আদেশের পর ‘নগদ লিমিটেডের’ শেয়ার হোল্ডারদের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ নওশাদ জমির বলেন, আদালত ‘নগদ’ এর প্রশাসকের স্থগিতাবস্থা বলবৎ রেখেছেন। এর ফলে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত প্রশাসক ও তার দল নগদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কোনো রকম কোনো কার্যক্রম করতে পারবেন না।
তিনি আরও বলেন, হাইকোর্ট একই সঙ্গে এটিও প্রত্যক্ষ করেছেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকগুলো অবৈধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যখন চূড়ান্ত রায় আসবে, তখন এগুলো বাতিল হয়ে যাবে এবং এ বিষয়ে যথাপোযোক্ত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, অবৈধ ঘোষিত এই প্রশাসকরা যেন আদালতের রায় মেনে চলেন সেদিকে খেয়াল রাখতে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নগদ লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডাররা।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা বদলে দেওয়ার ধারাবাহিকতায় গত ২১ আগস্ট এক বছরের জন্য ডিজিটাল লেনদেন সেবা ‘নগদ’ পরিচালনায় প্রশাসক নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যে আইনের ক্ষমতাবলে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তখনো পর্যন্ত সে আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মুহম্মদ বদিউজ্জামান দিদারকে প্রশাসক করার পাশাপাশি বিভিন্ন পদমর্যাদার আরও কয়েকজনকে সহকারী প্রশাসক করে ‘নগদ’ এ পাঠায় তারা। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘নগদ’ এর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানির সহযোগীদের সমন্বয়ে নতুন করে পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে।
এসব প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে ‘নগদ’র নির্বাহী পরিচালক সাফায়েত আলম হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে ‘নগদ’-এ বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসক নিয়োগ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবারের (১৫ জানুয়ারি) শুনানির পর দ্বিতীয় দফা প্রশাসকের কার্যক্রমের ওপর স্থিতাবস্থার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
২০১৯ সালে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে নগদ। গত বছর নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্সও পায় প্রতিষ্ঠানটি। সে অনুসারে সেবা চালুর দ্বারপ্রান্তে ছিল ‘নগদ’ লিমিটেড। কিন্তু কোনো রকম কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘নগদ’র ডিজিটাল ব্যাংকের লাইসেন্স স্থগিত করে। একই সঙ্গে মোবাইল আর্থিক সেবা হিসেবে নগদের অভ্যন্তরে প্রশাসক ও তার সহযোগীরা অনুসন্ধানের নামে নানা রকম কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।