সভাপতির চিঠি নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত, বিসিবি নির্বাচনে বাধা নেই
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে সাধারণ পরিষদে কাউন্সিলার মনোনয়ন বোর্ড সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের চিঠির কার্যকারিতা ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। গত ২২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের দেওয়া এই আদেশ স্থগিত চেয়ে ওইদিনই আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেদিন আবেদনের শুনানি মুলতবি রেখে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠানে আর কোনো বাধা থাকল না।
রাষ্ট্রপক্ষের ওই আবেদনে শুনানির পর আজ রোববার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। আমিনুল ইসলামের চিঠি চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। আর বিসিবির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহিন এম রহমান।
হাইকোর্টের আদেশের স্থগিতাদেশ চলমান থাকায় বিসিবির নির্বাচন অনুষ্ঠানে আপাতত কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বোর্ডের আইনজীবী মাহিন এম রহমান।
বিসিবির আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশে চেম্বার আদালতের দেওয়া স্থগিতাদেশের মেয়াদ আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে বিসিবির নির্বাচন সামনে রেখে যে কার্যক্রম চলছে, তা চলতে এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা থাকছে না।’
গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা কর হয়। ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ আগামী ৬ অক্টোবর। বিসিবির গঠনতন্ত্রে উল্লেখ আছে, জেলা বা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে একজন সাবেক খেলোয়াড় বা ক্রীড়া সংগঠককে কাউন্সিলার করতে হবে। মনোনীত কাউন্সিলররা নির্বাচনে ভোট দিয়ে থাকেন। গত ১ সেপ্টেম্বর কাউন্সিলার মনোনয়ন করতে বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ছিল মনোনীত কাউন্সিলারদের নাম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। এর মধ্যে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে কাউন্সিলার মনোনীত হয়েছিলেন সাবেক খেলোয়াড় ও ক্রীড়া সংগঠকদের অনেকে। কিন্তু গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, বিসিবির কাউন্সিলার হিসেবে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটির সদস্যদের মধ্য থেকে নাম প্রেরণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তা যথাযথভাবে মানা হয়নি। আগের ফরম বাতিল করে তাই বিসিবি থেকে পাঠানো নতুন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কাউন্সিলারের নাম পাঠাতে হবে।
এই চিঠির কার্যকারীতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মনোনীত কাউন্সিলার রাজবাড়ির মঞ্জুরুল আলম, গোপালগঞ্জের জসিম উদ্দিন খসরু, লক্ষ্মীপুরের মঈনুদ্দিন চৌধুরী ও টাঙ্গাইলের আলী ইমাম।
শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব দেওয়া বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলামের চিঠি কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। বিসিবি সভাপতিসহ বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
আর অন্তবর্তী আদেশে চিঠির কার্যকারিতা ১৫ দিনের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ঘণ্টা দেড়েক পরেই তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এই আবেদনে শুনানি মুলতবি করে হাইকোর্টের আদেশ রোববার পর্যন্ত স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। সেই ধারাবাহিকতায় আবেদনটিতে শুনানির পর স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওইদিন আবেদনটিতে ফের শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আমার বার্তা/এমই