যেসব কারণে বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে পুরুষদের

প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৫, ১১:১৯ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে ছেলেদের বিয়ের বয়স ২১ বছর। কিন্তু সম্প্রতি বয়স পার হলেও বিয়ে করতে চান না অনেক পুরুষ। আবার প্রেমের সম্পর্কে থাকলেও কিছু কিছু পুরুষ বিয়ের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করতে চান না। গবেষণা বলছে, ক্রমবর্ধমান ভাবে পুরুষের মধ্যে বিবাহভীতি বাড়ছে।

এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণও। গবেষকদের ধারণা এর পেছনে আছে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক বিভিন্ন কারণ। নিচে তা ব্যাখ্যা করা হলো:

স্ত্রীর কর্তৃত্বকে ভয়

প্রেমিকা ও স্ত্রীর মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য আছে। প্রেমের সম্পর্কে আবেগের আশ্রয় থাকলেও বিয়ের বাস্তবতা ভিন্ন। প্রেমিকা থাকা অবস্থায় অনেকটাই সহনশীল থাকেন মেয়েরা। কিন্তু বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন স্ত্রী।

আর এই বিষয়টিকেই ভয় পান পুরুষরা। কারণ, জীবনের স্বাধীনতা হারাতে বেশিরভাগ পুরুষই চান না। তাদের ধারণা থাকে, বিয়ের পর হয়তো স্ত্রী সব বিষয়েই কর্তৃত্ব করবেন, এমনকি তাকে নিয়ন্ত্রণেরও চেষ্টা করবেন স্ত্রী।

আচরণ ও অভ্যাসে পরিবর্তন আনার ভয়

গবেষণায় দেখা গেছে, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আসে, যখন তারা নিজেদেরকে পরিবারের কর্তা হিসেবে বিবেচনা করেন।

বিবাহ হলো চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি, তাই এর জন্য অনেক ত্যাগের প্রয়োজন। অবিবাহিত থাকার অনেক সুবিধা হতে পারে, বলেই বিয়েভীতি বাড়ছে।

ডিভোর্সের ভয়

বর্তমানে ডিভোর্স শব্দটির সঙ্গে খুবই পরিচিত সাধারণ মানুষ। বিয়ের কিছু দিন না হতেই বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটছে প্রতিদিনই। সমাজের এমন অবস্থা দেখে অনেকে ধারণা করেন, তার ক্ষেত্রেও হয়তো এমনটিই ঘটবে! আর এসব কারণে তার মনে নেতিবাচক অনুভূতি জন্মায় বিয়ের বিষয়ে।

লিভ টুগেদারের প্রভাব

বর্তমান সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে লিভ টুগেদার। যার প্রভাব পড়েছে বিয়েতেও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. তানিয়া রহমান বলেন, আমরা উন্নত দেশগুলোকে ফলো করতে করতে তাদের মতো হয়ে যাচ্ছি। ইদানীং মারাত্মকভাবে দেখা যাচ্ছে লিভ টুগেদার। যদি কোনো দায়বদ্ধতা, দায়িত্ব ছাড়া সমস্ত চাহিদা পূরণ হয় তাহলে বিয়ের আগ্রহ স্বাভাবিকভাবে কমে যাবে।

‘তবে যারা এখনও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে আছেন তাদের মধ্যে বিয়ের চলটা এখনও ঠিক রেখেছেন। বিয়ের অনাগ্রহটা নতুন প্রজন্মের জন্য হুমকি স্বরূপ। যতই কষ্ট বা অশান্তি থাকুক সবাইকে ঠিক সময়ে একটি ঠিকানা তৈরি করা উচিত। গড়ে তোলা উচিত পারিবারিক বন্ধন।’

বিয়ের উপকারিতা সম্পর্কে অবগত না হওয়া

বিয়ে মানেই কিন্তু সব সময় বিবাহ বিচ্ছেদের উচ্চ হার ও বিবাহিত জীবনের প্রচুর উদ্বেগ নয়। বিয়ের অনেক উপকারিতাও আছে। যা অনেক পুরুষেরই অজানা-

  •    গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিত পুরুষরা অবিবাহিত পুরুষদের চেয়ে বেশি অর্থ উপার্জন করেন।
  •     বিবাহ পুরুষদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একটি বড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
  •     বিয়ের মাধ্যমে একাকিত্ব ও বিষণ্নতা কমে।
  •     বিবাহিত পুরুষরা অবিবাহিত পুরুষদের তুলনায় দীর্ঘজীবী ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করেন।