শিক্ষার্থীদের বাংলা ব্লকেডে সড়ক-মহাসড়ক-রেলপথ অবরুদ্ধ

প্রকাশ : ১০ জুলাই ২০২৪, ১৩:২৯ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

সরকারি চাকরিতে সকল গ্রেডে ‘অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক’ কোটা বাতিল করে এক দফা দাবি আদায়ে সকাল-সন্ধ্যা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১০ জুলাই) সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ব্যানারে বাংলা ব্লকেডের অংশ হিসেবে সারাদেশে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

এদিন ঢাকার শাহবাগ, চানখারপুল, সায়েন্সল্যাব মোড়, আড়ারগাঁও এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকার সড়ক অবরোধ করেন ঢাকা কলেজ ও এর আশপাশের প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থী। ব্যস্ত মোড়ে শিক্ষার্থীদের এই অবরোধের ফলে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাস, প্রাইভেটকার, রিকশাসহসব ধরনের পরিবহন আটকে দিলেও অ্যাম্বুলেন্সগুলো ছেড়ে দিচ্ছেন।

আগারগাঁও মোড় অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করছেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরিগেট এলাকায় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর শিক্ষার্থীরা বিভক্ত হয়ে মহাসড়কের প্রান্তিক গেট ও এমএইচ হল সংলগ্ন গেট অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসের ভেতরে জব্বারের মোড় এলাকায় তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে রেখেছে।

চট্টগ্রামের দেওয়ানহাট এলাকায় রেললাইন অবরোধ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম সহিদুল ইসলাম জানান, সকাল ১১টার দিকে তারা রেললাইন অবরোধ করেন।

বিক্ষোভকারীরা রেললাইনে অবস্থান নিয়ে কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের প্রতিবাদে স্লোগান দিচ্ছেন। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা আন্দোলন করছেন।

এদিকে, সরকারি চাকরিতে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল রেখে হাইকোর্টের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

আজ বুধবার সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এসময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থা প্রত্যাখ্যান করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

 বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঢাকা কলেজ শাখার সমন্বয়ক নাজমুল হাসান বলেন, আমরা স্থায়ী সমাধান চাই। কোটা নিয়ে বারবার টালবাহানা দেখতে চাই না। সব গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে। আমরা পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

হাইকোর্টের রায় নিয়ে আন্দোলনের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে বসবো, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো। তিনি আরও বলেন, পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজকে আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ আদেশের ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।


আমার বার্তা/জেএইচ