সবার আগে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ফ্যাসিবাদ মুক্ত হওয়া উচিত ছিল
প্রকাশ : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৩৩ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:
সবার আগে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ফ্যাসিবাদ মুক্ত হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন যুব উন্নয়ন সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক নূরুল ইসলাম বুলবুল। তিনি বলেন, বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশে বর্তমান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে যে সমস্ত ফেডারেশন, ক্লাব ও কমিটি রয়েছে সেগুলোর রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা অবস্থান করছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকায় যুব উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আন্ত: থানা/বিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৪ এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক ব্যক্তিদের যথাযথ সম্মান দিয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতকে ঢেলে সাঁজাতে হবে। সবার আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত হওয়া উচিত ছিল। বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে ত্যাগ ও কুরবানির মাধ্যমে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে তাকে আর কোনো অপশক্তি দমিয়ে রাখতে পারবে না। অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তিনিও তরুণ ছাত্র জনতার মাঠ থেকে উঠে আসা প্রতিনিধি।
নুরুল ইসলাম বুলবুল আহ্বান রেখে বলেন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সব ফেডারেশন থেকে অতি দ্রুত ফ্যাসিবাদের দোসর মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। ইতোমধ্যেই এই পর্ষদের পাঁচ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে, এই সামান্য সংস্কারের কাজে এতো দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। আমরা মনে করি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ সংস্কার করা যায় তাহলে বাকি মন্ত্রণালয়গুলোও সঠিক ধারায় প্রবাহিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের আশেপাশে অবশ্যই ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। সুতরাং অনতিবিলম্বে ফ্যাসিবাদ মুক্ত মন্ত্রণালয় গঠন করে ছাত্র জনতার প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা পালন করুন।
নতুনভাবে দেশ গড়ার জন্য তরুণ যুবকদের ভূমিকা রাখা অপরিহার্য। ছাত্র জনতার কাঙ্ক্ষিত যে আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে দেশে জুলাই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্যই তরুণ যুবকদেরকে সামনে থাকতে হবে। যুব ও ক্রীড়াঙ্গনে ভূমিকা রাখার মাধ্যমে সুস্থ সবল দেহ, মন, জাতি গঠনে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের সম্মান বয়ে আনবেন সেই আশা করছি।
খেলাধুলাসহ বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে আগ্রাসন চালিয়ে একটি আধিপত্যবাদি শক্তি আমাদেরকে আটকে রাখার ষড়যন্ত্র করে গেছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির বলেন, আগামীতে এই তরুণ যুবকেরা দেশের স্বার্থে আর কোনো ষড়যন্ত্রকারীর পাতানো ফাঁদে পা দিতে চায় না। এই যুব সমাজ হচ্ছে রাষ্ট্র গঠনের সবচেয়ে বড় নিয়ামক শক্তি। এজন্যই বার বার বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী একটি রাষ্ট্র নেশা মাদকসহ যাবতীয় নেশাদ্রব্য তুলে দিয়ে আমাদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা করে চলেছে। যুব সমাজ তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সাধনের মাধ্যমে দেশ গড়ার জন্য প্রস্তুতি নেবে। বাংলাদেশের তরুণ যুবকেরা তাদের নৈতিকতার মান আরও উন্নত করে দক্ষ, যোগ্য জনশক্তিতে পরিণত হয়ে দেশ ও জাতির সম্মান বয়ে আনবে। একটি অপশক্তি সুকৌশলে আমাদের এই যুবশক্তিকে বা তারুণ্যের শক্তিকে তথা ছাত্রসমাজকে ধ্বংস করার জন্য এখানে বহু আয়োজন করে গেছে।
সাবেক সচিব মো. মাহবুবুল হক বলেন, সব টিম সবসময় খেলায় জিতে না এটা স্মরণে রাখতে হবে। এজন্য পরের ম্যাচে আমরা আরও শিখে দক্ষতা অর্জন করে এগিয়ে যাবো এটাই মূল স্পিড। রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও এই এ জাতীয় অনেক বিষয়ে জয় পরাজয় সামনে রেখে হাতে হাত মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। দেশ গড়ার ক্ষেত্রে তরুণদের মনোবল আরও সুদৃঢ় করতে হবে। খেলার মধ্য দিয়ে আজকে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র পরিচিত সেজন্য বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরতে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করে তুলবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, খেলার কথা বলে অনেকে রাজনীতির খেলোয়াড় হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আমাদের ছাত্র জনতা ঠিকই খেলার জন্য মাঠে যখন নেমেছে এখন ফ্যাসিবাদের দোসরদের আর খুঁজেও পাওয়া যায় না। আজকের ক্রিকেট খেলার জয় পরাজয় থেকেও আমাদের শিক্ষার প্রয়োজন আছে, আজকে যারা হেরেছে তারা কি কোনো অন্যায় আচরণ বা বিদ্রুপ কিছু বলার চেষ্টা করছে না? প্রকৃত পক্ষে পরাজয় মেনে নিয়ে বিজয়ীকে সম্মান জানাবার যে প্র্যাকটিস তা আমাদের জাতীয় রাজনীতিতেও করে যেতে হবে। একটি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমার যোগ্যতা ও দক্ষার বিকাশকে যেমনি পুরস্কৃত করা হয় তেমনি সর্বক্ষেত্রে যার যার যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করতে হবে।
যুব উন্নয়ন সংস্থার উপদেষ্টা মুহাম্মদ কামাল হোসাইনের সভাপতিত্বে ক্রিকেট খেলার ফাইনাল ম্যাচ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সচিব ও আমেরিকান ওয়েলনেস সেন্টারের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক, যুব উন্নয়ন সংস্থার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, মুহা. দেলাওয়ার হোসেন, ড. মোবারক হোসেন, মো. শামসুর রহমান, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এর সাবেক পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদুয়ান প্রমুখ।
আমার বার্তা/এমই