রোহিঙ্গাদের খাবারে বরাদ্দ কমানোর পরিকল্পনা জাতিসংঘের

প্রকাশ : ০৬ মার্চ ২০২৫, ১০:১০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

জরুরি ভিত্তিতে তহবিল সংগ্রহ করা না হলে আগামী এপ্রিল থেকে বাংলাদেশে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাবারের বরাদ্দ কমানোর পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।

জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) লিখিতভাবে রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারের বরাদ্দ অর্ধেকের বেশি কমানোর পরিকল্পনার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছে। আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য রেশন ১২.৫০ ডলার থেকে ৬ ডলারে নামিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ঢাকায় ডব্লিউএফপির এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামনের সপ্তাহগুলোতে পর্যাপ্ত অর্থ সংগ্রহ করলে রোহিঙ্গাদের জন্য রেশনে কাটছাঁটের বিষয়টি এড়ানো যেতে পারে। ডব্লিউএফপি এরই মধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য দাতাদের কাছে ৮১ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা চেয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মাথাপিছু ছয় ডলারের রেশন বরাদ্দের ফলে ন্যূনতম বেঁচে থাকার স্তর নিচে নেমে যাবে এবং মৌলিক খাদ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) তহবিল বাতিলের নেতিবাচক প্রভাব এসে পড়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর। কারণ, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে ডব্লিউএফপির অর্থসহায়তার প্রায় ৮০ শতাংশের জোগান আসত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। তবে গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে ইউএসএআইডির তহবিল বন্ধের ঘোষণা দেন। এতে ডব্লিউএফপি তহবিল–সংকটে পড়েছে।

কক্সবাজারের শরণার্থী কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, এই মানুষগুলো রাষ্ট্রহীন, দুর্ভাগ্যগ্রস্ত। শুধুমাত্র তহবিল সংকটের কারণে তাদের আরও দুর্ভোগের শিকার করা উচিত নয়।

বাংলাদেশ বর্তমানে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে, যারা ২০১৬-১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসে। এদের বেশিরভাগই কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাস করছে, যেখানে কাজের সুযোগ ও শিক্ষার ব্যবস্থা অত্যন্ত সীমিত।
 
রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তা কমে যাওয়ায় তীব্র অপুষ্টি দেখা দিতে পারে। গত বছরও যখন রেশন ৮ ডলারে নামিয়ে আনা হয়েছিল, তখন শরণার্থীদের ৯০ শতাংশ পর্যাপ্ত খাবার পায়নি এবং ১৫% শিশুর মধ্যে তীব্র অপুষ্টি দেখা দিয়েছিল।


আমার বার্তা/জেএইচ