আরব আমিরাত যাচ্ছে ওয়েস্টার্ন মেরিনের তৈরি টাগবোট ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

দেশের শীর্ষস্থানীয় জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিপিং কোম্পানি মারওয়ান শিপিং লিমিটেড-এর জন্য নির্মিত দুটি টাগবোট ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ চলতি জুলাই মাসের মধ্যে হস্তান্তর করবে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন সোহেল হাসান বলেন, আমরা ইতিমধ্যে মারওয়ান শিপিংয়ের জন্য আটটি জাহাজ নির্মাণের চুক্তি সম্পন্ন করেছি। এর মধ্যে রয়েছে দুইটি টাগবোট, চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট এবং দুইটি ট্যাংকার। ‘খালিদ’ ও ‘ঘায়া’ দুইটি হাই পাওয়ার টাগবোট, যার বোলার্ড পুল ক্ষমতা যথাক্রমে ৬৫ থেকে ৮০ টন। এই দুটি বোট জুলাইয়ের মধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরবরাহ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে একই ক্রেতার জন্য ছয়টি ল্যান্ডিং ক্রাফটের একটি ‘রায়ান’ নামের জাহাজ হস্তান্তর করেছি। বাকি জাহাজগুলো ২০২৫-২৬ সালের মধ্যে সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

ওয়েস্টার্ন মেরিন ২০১৭ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রথম টাগবোট রফতানি করে। এর পর থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১১টি দেশে মোট ৩৪টি জাহাজ রফতানি করেছে, যার মোট মূল্য প্রায় ১৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন ব্যবস্থায় অবদান হিসেবে, ওয়েস্টার্ন মেরিন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর জন্য ‘এমভি রূপসা’ ও ‘এমভি সুগন্ধা’ নামের দুটি যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণ করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির ডিজিএম (কমার্শিয়াল) শহিদুল বাশার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা আগামী দুই বছরে আরও পাঁচটি জাহাজ রফতানি করার। এতে রয়েছে দুটি অয়েল ট্যাংকার ও তিনটি ল্যান্ডিং ক্রাফট। ইতিমধ্যে এর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। আশা করি এবছরে এক বা দুইটা বুঝিয়ে দিতে পারব৷
‘ঘায়া’

২০০০ সালে যাত্রা শুরু করা ওয়েস্টার্ন মেরিন গত দুই দশকে প্রায় ১৫০টির বেশি জাহাজ তৈরি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কার্গো জাহাজ, যাত্রীবাহী নৌযান, মাল্টিপারপাস আইস-ক্লাস ভেসেল, ল্যান্ডিং ক্রাফট, অফশোর পেট্রোল ভেসেল, টাগবোট, মাছ ধরার জাহাজ, বাল্ক ক্যারিয়ার ও কনটেইনার ক্যারিয়ার।

২০১৯ সালে শুরু হওয়া করোনা মহামারি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে দেশের জাহাজ নির্মাণ খাত এখনও সংগ্রাম করছে। তবে ওয়েস্টার্ন মেরিনের সাম্প্রতিক কার্যক্রম এ খাতের জন্য নতুন উদ্দীপনা যোগাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ওয়েস্টার্ন মেরিন সর্বশেষ জাহাজ রফতানি করেছে ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি। ১ কোটি ১০ লাখ ডলার মূল্যের দুটি জাহাজ সেদিন ভারতে রফতানি করা হয়েছিল। এরপর গত বছরের ডিসেম্বরে আরব আমিরাতের মারওয়ান শিপিংয়ের জন্য ৬৯ মিটার দীর্ঘ বিশেষায়িত ল্যান্ডিং ক্রাফট ‘রায়ান’ হস্তান্তর করে। যেটি দীর্ঘ দিন পর তাদের বিদেশে জাহাজ রফতানির পালা শুরু বলা যায়। অবশ্য এ সময়ের মধ্যে রফতানি না করলেও শিপইয়ার্ডটি দেশীয় বিভিন্ন সংস্থার জন্য জাহাজ তৈরি করেছে।

বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতামূলক জাহাজ নির্মাণের মাধ্যমে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নিজেদের অবস্থান আরও মজবুত করতে চায়। ওয়েস্টার্ন মেরিনের সাম্প্রতিক রফতানি কার্যক্রম এ দিক থেকে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


আমার বার্তা/জেএইচ