কৃষিতে সাফল্যের এক বছর: সরকারের অর্জন তুলে ধরলেন কৃষি উপদেষ্টা

প্রকাশ : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩:৪৩ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

গত বছরের জুলাই মাসের অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে সম্প্রতি। এই সময়ে কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। 

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষি উপদেষ্টা গত এক বছরের অর্জন তুলে ধরেন।

কৃষি উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষকের জীবনমান উন্নয়ন এবং কৃষিকে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর খাতে রূপান্তর করা ছিল সরকারের অগ্রাধিকার।”

গত এক বছরে ধান, গম, ভুট্টা, ডাল, তেলবীজ ও সবজির উৎপাদন বেড়েছে। ফলমূলেও এসেছে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি। গত বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ লাখ টন বেশি ধান উৎপাদিত হয়েছে।

ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় থেকে রেখে যাওয়া সারের বকেয়া পরিশোধ করে নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। সার আমদানিতে সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ায় সরকারের ২৩৩ কোটি টাকার বেশি সাশ্রয় হয়েছে। রাশিয়া থেকেও বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন সার পাওয়া গেছে।

গত এক বছরে ৮৮ লাখ ৫৫ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে বিনামূল্যে সার, বীজ, চারা ও অন্যান্য সহায়তা বাবদ ৮৯৩ কোটি টাকার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষিঋণ বিতরণ, সেচ সহায়তা ও বাজার মনিটরিং চালু রয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহনশীল ধান ও অন্যান্য ফসলের নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। ১০০টি মিনি কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ, আলু সংরক্ষণের জন্য এয়ারফ্লো মেশিন ব্যবহার এবং কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন বাজার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চীনের বাজারে প্রথমবারের মতো আম রপ্তানি হয়েছে, চলতি মৌসুমে ৬২ হাজার টন আলুও রপ্তানি হয়েছে। কাঁঠাল ও পেয়ারা রপ্তানির প্রক্রিয়া চলছে। কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ।

কৃষি খাতকে ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে ‘খামারি’ নামের মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয়েছে, যেখানে সার, বীজ, সেচ, আবহাওয়া ও ফসলের তথ্য মিলবে। সমন্বিত বীজ ব্যবস্থাপনা ও ক্রপ জোনিং সিস্টেমও চালু করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১০৯ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কয়েকজনকে দুদুকে পাঠানো হয়েছে।

কৃষি উপদেষ্টা জানান, কৃষি উন্নয়ন রূপরেখা ২০২৫–২০৫০ প্রণয়ন করা হচ্ছে। লক্ষ্য হলো কৃষিকে টেকসই ও রপ্তানিমুখী করা, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, কৃষক আয় বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।

সংবাদ সম্মেলনের শেষে তিনি বলেন, “কৃষিতে যে অগ্রগতি আমরা অর্জন করেছি, তা সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, গবেষণা ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম এবং কৃষক ভাইদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল।”


আমার বার্তা/জেএইচ