বৈষম্যমুক্ত নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবি ১১–২০ গ্রেড সরকারি কর্মচারীদের
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৬:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

ন্যায্যতা ও বৈষম্যহীন নবম পে স্কেল বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন সরকারি ১১–২০ গ্রেডের চাকরিজীবীরা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান ১১–২০ গ্রেড সরকারি চাকরিজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদুল হাসান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নবম পে কমিশন গঠন করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারি কর্মচারীদের ন্যায্য দাবির বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে এবার পে কমিশন যেন একটি বৈষম্যমুক্ত, বাস্তবসম্মত ও ন্যায্য বেতন কাঠামো প্রস্তাব করে, এটাই কর্মচারীদের প্রত্যাশা।
তিনি জানান, ২০১৫ সালের পে স্কেলে ব্যাপক বৈষম্য ছিল এবং গত ১০ বছরে ১১–২০ গ্রেডের কর্মচারীরা দুটি পে স্কেল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই বর্তমান বাজারদর ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নতুন কাঠামো প্রণয়ন জরুরি। আমরা সর্বনিম্ন বেতন ৩২ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ধরে ১৩ গ্রেডের নতুন বেতন কাঠামোর প্রস্তাব করছি।
সংগঠনের প্রস্তাব অনুযায়ী, ঢাকা সিটি করপোরেশন এলাকায় বাড়িভাড়া ভাতা মূল বেতনের ৮০ শতাংশ, অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭০ শতাংশ এবং অন্য এলাকায় ৬০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি চিকিৎসা ভাতা ৬ হাজার, শিক্ষা ভাতা (সন্তান প্রতি) ৩ হাজার, যাতায়াত ভাতা ঢাকায় ৩ হাজার ও অন্যান্য এলাকায় ২ হাজার, ইউটিলিটি ভাতা ২ হাজার, টিফিন ভাতা দৈনিক ১০০ টাকা (মাসে ২২০০), বৈশাখী ভাতা ৫০ শতাংশ, ঝুঁকি ভাতা ২ হাজার এবং পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের কর্মচারীদের জন্য অতিরিক্ত ৪০ শতাংশ ভাতা প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া পেনশন সুবিধা বিদ্যমান ৯০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার এবং আনুতোষিকের হার ২৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করার দাবি জানানো হয়। পুরোনো নিয়মে তিনটি টাইমস্কেল ও দুটি সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, সকল স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন সুবিধা ও গৃহঋণ প্রদান, ব্লক পদ বাতিল করে পদোন্নতির ব্যবস্থা, রেশন ব্যবস্থা চালু এবং বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়।
সংগঠনের সভাপতি মো. লুৎফর রহমান বলেন, সরকারি কর্মচারীরা দীর্ঘ ১০ বছর ধরে নতুন পে স্কেল থেকে বঞ্চিত। এই সময়ে অন্তত দুইটি পে স্কেল পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অবিচারের কারণে তারা আজ ঋণগ্রস্ত ও দীনহীন জীবনযাপন করছেন। কর্মচারীরা রাষ্ট্রযন্ত্রের চালিকাশক্তি। তাদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। পেটে ভাত না থাকলে শরীর ও মন দিয়ে দেশের সেবা করা যায় না।
তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈষম্যমুক্ত নবম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় কর্মচারীরা আবারও রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী রফিকুল ইসলাম মামুন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।