সাংবাদিকদের পাওনা আদায়ে সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে আর্জি ‘বিব্রতকর’

উপ-প্রেস সচিব

প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন

দেশের সাংবাদিকরা নিজেদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে ‘আর্জি’ জানাতে বাধ্য হচ্ছেন। এই বিষয়টিকে ‘বিব্রতকর’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার। 

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালে দেওয়া এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।

আজাদ মজুমদার লিখেছেন, ইদানিং দেখি, অনেক সাংবাদিক নিজেদের ন্যায্য পাওনা আদায়ের জন্য সরকারি লোকজনের কাছে আর্জি জানান। এই বিষয়টা আমাদের জন্য বিব্রতকর। যাদের কলম ও কণ্ঠে প্রতিদিন মানুষের অধিকার ও ন্যায়বিচারের কথা উঠে আসে, তারাই যখন নিজেদের প্রাপ্যটুকুর জন্য অসহায় হয়ে পড়েন– সেটি আসলে সবার জন্যই হতাশার।

তিনি আরও লিখেছেন, সাংবাদিকতা এমন এক পেশা, যেখানে চাকরির নিশ্চয়তা প্রায় নেই বললেই চলে। অধিকাংশের বেতনও অন্যান্য পেশার তুলনায় অনেক কম। কিন্তু সবচেয়ে বড় অবিচার ঘটে তখন, যখন কেউ বহু বছরের পরিশ্রম শেষে প্রতিষ্ঠান ছাড়েন– আর প্রাপ্য টাকা-পয়সা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যান। টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যমের সাংবাদিকরা একেবারে খালি হাতে ফিরে যান। পত্রিকার ক্ষেত্রে যারা ওয়েজ বোর্ডের আওতায় আছেন, তাদের পাওনাটা আইনসিদ্ধ– কিন্তু বাস্তবে সেটিও পেতে হয় অনেক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে।

এই উপ-প্রেস সচিব লিখেছেন, এমন অনেক সাংবাদিককে দেখেছি, বছরের পর বছর মনপ্রাণ ঢেলে কাজ করেছেন; টানা মাসের পর মাস এমনকি সাপ্তাহিক ছুটিও নেননি। অর্জিত ছুটি, নৈমিত্তিক ছুটি—সবই ফেলে রেখেছেন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে। ১৬ বছর চাকরি করলেও যদি কেউ ছুটি না নেন, আইন অনুযায়ী তাকে মাত্র দুই মাসের অর্জিত ছুটির অর্থ দেওয়া হয়। অর্থাৎ বাকি এক বছর দুই মাসের মতো সময় তিনি লিটারেলি বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন! আর যখন সেই দুই মাসের পাওনা চাইতে যান, তখন এমন আচরণ করা হয় যেন সাংবাদিকটিকে কোনো ‘দয়া’ করা হচ্ছে। 

তিনি লিখেছেন, শ্রম আইনে মামলা করার সুযোগ থাকলেও সেটিও প্রায়ই মালিকদের পক্ষেই যায়। কারণ মামলা হলে রায় না হওয়া পর্যন্ত টাকা দিতে হয় না— আর বাংলাদেশের মামলার দীর্ঘসূত্রিতা তো সবাই জানে। অনেক ক্ষেত্রে দশ বছরেও রায় হয় না।

সবশেষে আজাদ মজুমদার লিখেছেন, এই অবস্থায় মালিক বা কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোই হওয়ার কথা ছিল শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম। কিন্তু বাস্তবে সেগুলোও আজ অনেকটাই নিরুত্তর। ইউনিয়ন নেতারা আসলে কি করেন কেউ জানে না।


আমার বার্তা/জেএইচ