ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজও সেনা-বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা
প্রকাশ : ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৪ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে আজও নিরাপত্তার চাদরে ঘেরা ট্রাইব্যুনাল এলাকা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ ঘিরে নিরাপত্তায় রয়েছেন পুলিশ, বিজিবি-সেনাবাহিনীর সদস্যরা। দিনভর এভাবেই নিয়োজিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন দায়িত্বরতরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকেই প্রবেশপথে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সেনা ও বিজিবির বিশেষ নিরাপত্তা টিম অবস্থান নিয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও রয়েছেন। পথচারী থেকে শুরু করে আইনজীবী-সাংবাদিক সবার পরিচয় যাচাই করে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ভেতর ও বাইরে কড়া নজরদারিতে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাধারণ মানুষের চলাচলেও রয়েছে নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা। রায় ঘোষণার পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তা।
এর আগে, সোমবার মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী মামুনের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ রায় ঘোষণা করা হয়। অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজও সেনা-বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা
ট্রাইব্যুনাল এলাকায় আজও সেনা-বিজিবির কঠোর নিরাপত্তা
শেখ হাসিনার এ মামলার পাঁচটি অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। কিন্তু রায়ে দুটি অভিযোগে ছয়টি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে অভিযোগ-১ এ তিনটি ঘটনা আনা হয়। এর প্রথমটি ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া।
দ্বিতীয়ত ওই রাতে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলে ফাঁসি দেবেন বলে উসকানি ও আদেশ। এছাড়া অপরাধ সংঘটনে আসামিরা নিজেদের অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি। তৃতীয়ত এরই ফলশ্রুতিতে রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি ছুড়ে হত্যা করে পুলিশ। এসব অপরাধে শেখ হাসিনা ও কামালের আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।
দুই নম্বর অভিযোগেও তিনটি ঘটনা আনেন ট্রাইব্যুনাল। এক নম্বর ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপ পাওয়া যায়। এসব কথপোকথনে ড্রোনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের অবস্থান নির্ণয়, ছাত্র-জনতাকে হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহার করে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এ অপরাধ সংঘটনে অধীনস্তদের কোনো বাধা দেননি আসামিরা।
যার ফলশ্রুতিতে একই বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। যা এ অভিযোগে ঘটনা নম্বর দুই। তিন নম্বর ঘটনা ওই দিন তথা ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় ছয়জনকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব অপরাধে হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয় । যা জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করবে সরকার। এছাড়া উভয় অভিযোগে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পাঁচ বছর কারাদণ্ড হয়েছে।
আমার বার্তা/জেএইচ
