আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না: আব্বাস

প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৪, ২০:১২ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন ডেস্ক:

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া আর গণতন্ত্র এক সঙ্গে চলতে পারে। কিন্তু খালেদা জিয়া বিহীন গণতন্ত্র কখনো চলতে পারে না। আর আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র কখনো একসঙ্গে চলতে পারে না। যেখানে আওয়ামী লীগ আছে, সেখানে গণতন্ত্র নাই আর যেখানে গণতন্ত্র আছে সেখানে আওয়ামী লীগ থাকতে পারে না।

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা শহরের খন্দকার দেলোয়ার হোসেন ল’ কলেজ প্রাঙ্গণে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, খালেদা জিয়াকে যে কোনো মূল্যে আমাদের মুক্ত করতে হবে। তার মুক্তির ওপর নির্ভর করছে এই দেশের মানুষের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব। সুতরাং খাদেলা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে আরও বেগবান ও জোরদার করতে হবে। আমরা কিছু করতে পারি আর না পারি খালেদা জিয়াকে জীবিত থাকা অবস্থায় দেখাতে চাই, আমরা আপনার মুক্তির জন্য আন্দোলন করেছি, যুদ্ধ করেছি, রাস্তায় নেমেছি। তিনি যেন বলতে না পারেন দল তার মুক্তির জন্য কিছুই করেনি।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের সময় একাত্তরের যুদ্ধে যারা অংশ নিতে পারেনি তাদেরকে আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য আরেক বার যুদ্ধ করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা রক্ষার্থে ৬০ লাখ মানুষকে রক্ত দিতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের দেশের স্বাধীনতাকে রক্ষার এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।

শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, ছাত্র ছিলাম, লেখাপড়া করেছি। আমার বন্ধুরা লেখাপাড়া শেষে যাথারিতি চাকরি করছে। কোটার কথা কখনো শুনি নাই, কিসে কোটা, কার জন্য এই কোটা। যে লেখাপড়া ভালো করবে সে আগে যাবে চাকরি পাবে, কোটা কার জন্যে। যদি বলেন মুক্তিযোদ্ধা কোটা, তাহলে শতভাগ দেন। কিন্তু কয়জন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা জীবিত আছেন।

তিনি বলেন, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে তাদের সন্তানদের কোটা দেবেন, এটা মেনে নেব না, এখানে আমাদের আপত্তি আছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটা দেন। এটা তাদের প্রাপ্য। আর প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধের যেন যাথাযথ সম্মান দেওয়া হয় এটাও আমাদের কাম্য। এই কোটা ছাড়া মেধার ভিত্তিতে চাকরি দিতে হবে। আর না হলে এই দেশ মেধা শূন্য হয়ে যাবে। এই দেশের অফিসগুলোতে মেধাশূন্য মাথাভারি প্রশাসন হবে এবং দেশ ভালোভাবে চলতে পারবে না। সুতরাং শিক্ষার্থীদের কোটা নিয়ে আন্দোলন ভুল পথে যাচ্ছে না, তারা সঠিক পথেই আছে।

পেনশন স্কিম সম্পর্কে মির্জা আব্বাস বলেন, শিক্ষকদের বলা হয়েছে, আপনাদের বেতনের এত টাকা পেনশনে রাখতে হবে আর এত টাকা আপনি পাবেন। ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, কেন ভাই? শিক্ষকদের বেতনের ওপর হামলা কেন? শিক্ষকদের ওরা (আওয়ামী লীগ সরকার) ট্রায়াল দিচ্ছে, সার্বজনীন পেনশন কেন কী কারণে? জনতা ব্যাংকের চার হাজার-পাঁচ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম আপনার মাফ করে দিলেন। বড় বড় চোরদের বিশাল চুরি করার সুযোগ করে দিলেন। আর পেনশন স্কিম করেন, এই টাকা যায় কোথায়?

তিনি বলেন, আমাদের কষ্টের টাকা, মাথার ঘাম পায়ে ফেলানো টাকা, ট্যাক্সের টাকা লুট করে আপনারা বিদেশে ছেলেদের দামি দামি গাড়ি কিনে দেবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মতিউরের ছেলে বিদেশে দামি গাড়ি চালাবে, দামি ফ্ল্যাটে থাকবে, আর আমার দেশের কৃষকরা তাদের শস্যের ন্যায্যমূল্য পাবে না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে আজকে দেশের মানুষ পাগল হয়ে গেছে। আপনি অপকর্ম করছেন, আর সার্বজনীন পেনশন স্কিম করছেন। দেশের কোষাগারের টাকা শূন্য হয়ে গেছে, এখন অন্যের পকেট কেটে তাদের টাকায় কোষাগার ভরতে হবে।

জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়্যেদুল আলম বাবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, নজুরুল ইসলাম আজাদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।


আমার বার্তা/এমই