নির্বাচনের সময়সীমা বলতে গড়িমসি সন্দেহের চোখে দেখছে জনগণ: রিজভী

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭:৪৬ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘নির্বাচনের সময়সীমা বলতে গড়িমসি করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যা জনগণ সন্দেহের চোখে দেখছে।’

বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শহিদ পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘আপনি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিয়ে কালক্ষেপণ করছেন, যা মোটেও ঠিক হচ্ছে না। সংস্কার শেষে কতদিনের মধ্যে আপনারা নির্বাচন দিবেন- তা জনগণকে স্পষ্ট করতে হবে। আর যে নির্বাচন গত ১৫ বছরে কেউ দিতে পারেনি সেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জনগণই ঠিক করবে কোন দল বা কাকে তারা নির্বাচিত করবে। এতে করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।’

তিনি বলেন, ‘জল্লাদের মনোবৃত্তি নিয়ে দেশ শাসন করেছেন সাবেক স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ। তাই ওইসব আওয়ামী ফেরাউনদের বাংলাদেশে আর জায়গা হবে না। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সৃষ্টি করা বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে শহিদ ছাত্রদেরর রক্ত বৃথা যাবে।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘শিক্ষার্থী হত্যার দায়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কারণ, আওয়ামী লীগের ফেরাউন বাহিনী এদেশে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকির নামে লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞসহ নানা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালালেও শেখ হাসিনা কখনোই তাদের বিচারের আওতায় আনেননি। শেখ হাসিনা নিজেকে ক্ষমতায় স্থায়ী করার জন্য এমন কোনো পথ নেই যা অবলম্বন করেননি। এক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী, র‌্যাব ও সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ কারগারকেও তিনি অপব্যবহার করেছেন ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। এমনকি আওয়ামী লীগের অনাচার ও নানা অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ইউটিউবার ও ব্লগাররা কথা বললে তাদেরকেও কারাগারে নিক্ষেপ করতেন শেখ হাসিনা।’

এ সময় বাজারে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে সৃষ্টি হওয়া বাজার সিন্ডিকেট যদি আমরা ভাঙতে না পারি তাহলে গণতন্ত্র ও ছাত্র আন্দোলনের যে চেতনা তা ভুলুণ্ঠিত হবে। এদেশের সাধারণ মানুষ যদি মোটা চাল, তেল ও সবজি ক্রয়সীমার মধ্যে কিনে না খেতে পারে তাহলে ছাত্র-জনতা যে রক্ত দিয়েছে তা বৃথা হয়ে যাবে।

রিজভী বলেন, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠনটির নাম তারেক রহমান দিয়েছেন। তাই সারা বাংলাদেশে দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা শহিদ ছাত্রদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাই। যেভাবে তারেক রহমান সাধারণ মানুষের পাশে থেকে আজীবন সেবা করেছেন। আর তারেক রহমানের বিকল্প এদেশে আর হবে না। আর বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝে গেছে বাংলাদেশের হাল ধরতে তারেক রহমানই যথেষ্ট।’   

‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব কৃষিবিদ মিথুনের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ হোসেন বকুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি মো. জাহিদুল কবির, সদস্য মাসুদ রানা লিটন, ফরহাদ আলী সজীব, শাহাদত হোসেন, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মো. জাকির হোসেন জিকু ও বৃহত্তর সারুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হযরত আলীসহ ঢাকা-৫ আসনের ডেমরা-যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।

এদিন রুহুল কবির রিজভী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ডেমরা-যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার শহিদ মেহেদি হাসান, শাহাদাত হোসেন শাওন, আক্কাস আলী, মো. জনি, মুজিবুর রহমান ওমর, মিরাজ হোসেন ও বাবুল মৃধার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং তাদের আর্থিক সহায়তা দেন। পাশাপাশি আহত একজন ছাত্রকেও আর্থিক সহায়তা দেন।


আমার বার্তা/এমই