পাহাড়-সমতলের প্রতি সম্মান না থাকলে সংঘাত অনিবার্য: শামসুজ্জামান

প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:৪৭ | অনলাইন সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক:

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমাদের এই জাতি-গোষ্ঠীগুলো একে অপরের প্রতি যদি সম্মানবোধ না থাকে তাহলে সংঘাত অনিবার্য। পার্বত্যাঞ্চল ও সমতল অঞ্চল, সবাই কিন্তু বাংলাদেশি।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ প্রফেশনালস আয়োজিত বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা : উত্তরণে রাজনৈতিক ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, পার্বত্যাঞ্চল, সমতল অঞ্চল সবাই কিন্তু বাংলাদেশি। পাসপোর্টে বাংলাদেশি উল্লেখ আছে, বাঙালি না। আমরা বাংলাদেশি এটা যদি বুকে ধারণ করতে পারি ৯০ শতাংশ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পার্বত্য অঞ্চলের যে উপজাতিগুলো আছে তাদের আলাদা আলাদা পরিচয় থাকলে তখনই সমস্যাটা বেশি হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশি, তবে যার যার নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, ধর্ম আছে। সে সংস্কৃতি-ধর্ম তারা ধারণ করে রাখবে, পালন করবে। আমাদের এই জাতি গোষ্ঠীগুলোর একে অপরের প্রতি যদি সম্মানবোধ না থাকে তাহলে সংঘাত অনিবার্য।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে শুধু তারাই থাকবে এই দৃষ্টিভঙ্গি নানা ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে। ওই ভূখণ্ডে যে উপজাতিগুলো আছে তারা তো ঢাকাতেও আছে। সারা দেশেও আছে। এখানে তো সংকট তৈরি হয় নাই। তাহলে সমতল ভূমির মানুষ পাহাড়ে গেলে সংকট তৈরি হবে, তাহলে তো ভাই ভাই ঝগড়া করে যেমন বাইরের মানুষ মীমাংসা করে তেমনি হবে।

সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে এ যাবৎকালে যত কিছু হয়েছে তার পেছনে একটা শক্তি আছে এটা আমরাও জানি, বিশ্ববাসীও যানে। তবে তারা যদি মনে করে বাংলাদেশের ছোট রাষ্ট্র তারা প্রতিবাদ করতে পারবে না। তারা ভুল চিন্তাভাবনার মধ্যে আছে। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ বীরের জাতি, এই দেশ রক্ষা করার ক্ষমতা আল্লাহতালা এই দেশের মানুষকে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, পাহাড়ি অঞ্চলে শুধু উপজাতিরাই থাকবে আর কেউ যেতে পারবে না—এটা ভাবলে ভুল হবে। আমাদের পরস্পরকে গ্রহণ করতে হবে। সেটা যদি করা সম্ভব না হয় সংকট ঘনীভূত হবে। এটা বিএনপি প্রত্যাশা করে না।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই মিলে যুদ্ধ করে এই দেশটাকে স্বাধীন করেছি। তবে হ্যাঁ, আমাদের কেউ কেউ পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। তবে শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যার সমাধান করতে চাই। এটাই বাংলাদেশের স্পিরিট, বিএনপির স্পিরিট, ১৭ বছর ধরে যে রাজনৈতিক দলগুলো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তাদের স্পিরিট।

তিনি আরও বলেন, রক্ত জড়িয়ে কেন স্বার্থ হাসিল করতে হবে? এটা ঠিক হবে না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশকে রক্ষা করি। বাংলাদেশের মানুষকে রক্ষা করি। এখানে এনজিওর কথা উঠে এসেছে। এনজিও রাজনীতিবিদ আমি আকাশ পাতাল তফাতের কথা বলবো না, তবে কাছাকাছি। কেউ সমস্যা জিইয়ে রেখে ব্যবসা করতে চায়। তাই আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ জাতিকে রক্ষা করি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা শফিকুল ইসলাম মাসুদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিবি স্থায়ী কমিটির সদস্য নিয়ামুল বশির, হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান প্রমুখ।


আমার বার্তা/এমই