আমাদের ভেতর ভুল বোঝাবুঝি বাড়লে ফ্যাসিবাদ মাথা তোলার চেষ্টা করবেই

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, কেউ কেউ বলছেন সংস্কার সম্পাদন না করে নির্বাচন করলে যেই দল ক্ষমতায় আসবে তারা সংস্কার করতে পারবে কিনা সন্দেহ। অথচ সংস্কার হলো রাজনৈতিক অঙ্গীকার। যে দল নির্বাচিত হবে তাদের তো পার্লামেন্টে পাস করতে হবে। এই ধরনের ধোঁয়াশা বিভ্রান্তি তৈরি করে কার লাভ হচ্ছে? গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি। যে সমস্ত দল ও সর্বশেষ ছাত্র-জনতা আমাদের ভেতরই যদি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং বাড়ে, ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে তাহলে তো ফ্যাসিবাদ মাথা তোলার চেষ্টা করবেই।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে শহরের অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে জিয়া পরিষদ নাটোর আয়োজিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জিয়াউর রহমান শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের জনগণ শেখ হাসিনার পতন দেখতে চেয়েছেন, সেই সাথে একটি ভালো সরকার চেয়েছেন। বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার, যেই সরকার একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে। কেননা অবাদ সুষ্ঠু নির্বাচন জাদুঘরে চলে গিয়েছিল। সেই জাদুঘর থেকে জীবন্ত অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই বিশ্বাস দেশের মানুষ ড. ইউনূস সাহেবের ওপর রেখেছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ডিসেম্বর না জুন, ডিসেম্বর না মার্চ বলা হয় তাহলে এটি সরকারের দৃঢ় সংকল্প বা অঙ্গীকার যেটির ওপর জনগণের আস্থা বাড়ে সেটা অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তাঁবেদারি রাষ্ট্র হিসেবে মনে করতো পার্শ্ববর্তী দেশ (ভারত)। কে তাদের আনুগত্য করবে, কে তাদের পক্ষে থাকবে তাদেরকে নিয়ে বাংলাদেশকে তাদের কব্জায় নিতে চেয়েছিল। এ জন্যই দুনিয়া কাঁপানো ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এক ভয়ংকর দানবীয় ফ্যাসিস্টের পতন হলো এবং সে পালিয়ে গেল সেই দেশে (ভারতে), এরপর সেই দেশের মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদরা উন্মাদ হয়ে গেল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার শুরু করল, তারা বলতে লাগলো বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের আস্তানা। যেই গুম খুনের মধ্য দিয়ে রক্ত গঙ্গা বইয়ে ক্ষমতার সিংহাসন ধরে রেখেছিল শেখ হাসিনা, সেই শেখ হাসিনাকে তারা আশ্রয় দিয়ে প্রশ্রয় দিয়ে টিকিয়ে রেখে তারা চেয়েছে বাংলাদেশে থাকবে তাদের কব্জার মধ্যে। তাদের পররাষ্ট্রনীতি, তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি, বাণিজ্যিক নীতি যা হবে সেটাই বাংলাদেশকে মানতে হবে, সেটাই করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকটাই পূরণ করেছিলেন শেখ হাসিনার মাধ্যমে। তাই শেখ হাসিনা শূন্য বাংলাদেশ তাদের (ভারতের) জন্য খুবই মনো ব্যথার কারণ।

অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচনকে পেছনে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে আপনারা মনে রাখবেন বাংলাদেশের মানুষ ওতো বোকা নয়। আমরা এখনো বলছি বর্তমান সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান দ্রুত সময়ের ভেতর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিন। দেশের মানুষকে মুক্তি দেন।

দুলু আরও বলেন, বিএনপিকে নিয়ে নানান ষড়যন্ত্র চলছে। দলের অভ্যন্তরেও অনেকে ত্যাগী নেতাদের সম্পর্কে কেন্দ্রে মিথ্যা ভুল তথ্য দিয়ে ডুবানোর চেষ্টা করছেন। এ সকল ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে নাটোর বিএনপি ঐক্যবদ্ধ রয়েছে।

এ সময় সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী গোলাম মোর্শেদ, জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মহাসচিব প্রফেসর  ড. মো. এমতাজ হোসেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান খান বাবুল চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম আফতাব, নাটোর জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি আহমুদুল হক চৌধুরী স্বপন, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।


আমার বার্তা/এমই