জাপায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি!

প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৫, ১৮:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

জাতীয় পার্টির মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সারাদেশে থেকে আসা নেতৃবৃন্দ। জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, যারা জাতীয় পার্টি নিয়ে এতদিন বেচাকেনার রাজনীতি করেছে তাদের সঙ্গে নিয়ে আর রাজনীতি করব না।

বুধবার (২৫ জুন) জাপার বনানী কার্যালয়ে বসা জরুরি সভায় এমন দাবি উঠেছে। পার্টির চেয়ারম্যানের প্রতি পূর্ণ আস্থা ব্যক্ত করেছেন সারাদেশ থেকে আসা জাতীয় পার্টির বিভিন্ন জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণ। ২৮ জুনের কাউন্সিল স্থগিতকে কেন্দ্র করে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে জরুরি সভা ডাকা হয়।

গত ২০ মে তারিখে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়ামের সভা থেকে কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ওই ঘোষণার পর চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র ভাড়া করা হয় পার্টির পক্ষ থেকে। আগে বুকিং গ্রহণ করলেও ঈদের পর কর্তৃপক্ষ জাপার হল ভাড়া বাতিল করে দিয়েছে। একই দিনে প্রধান উপদেষ্টার একটি কর্মসূচির কারণে জাতীয় পার্টিকে হল বরাদ্দ করা সম্ভব নয় বলে অবগত করে। এ কারণে সস্মেলনের তারিখ স্থগিত করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

তার একদিনের মাথায় ১৭ জুন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার যৌথ বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে বলেছেন, জাতীয় পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনা ছাড়াই আগামী দশম জাতীয় সম্মেলন স্থগিত করেছেন। এ সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও অনভিপ্রেত।


তারা ২৮ জুনেই পার্টির কেন্দ্রীয় কার‌্যালয়ের (কাকরাইল) সামনে কাউন্সিল করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। অন্যদিকে পার্টির পক্ষ থেকেও একই স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই জরুরি সভায় ডাকা হয় জেলা পর্যায়ের নেতাদের। তারা জিএম কাদেরের প্রতি আস্থার কথা জানান দেন সভায়। যদিও সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সভায় উপস্থিত হতে দেখা যায়নি।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের গড়া জাতীয় পার্টি সম্ভবত রাজনৈতিক দল হিসেবে সবচেয়ে বেশি ভাঙন কবলিত। এরশাদের জীবদ্দশায় জাপা, জেপি, বিজেপি ও জাপা (জাফর) নামে চার টুকরো হয়ে যায়। এরশাদের মৃত্যুর পর সহধর্মিণী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে আরেকটি জাপার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও রওশন গ্রুপের তেমন কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। মাঝে মধ্যে বিবৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ ওই গ্রুপটির কার্যক্রম। জাপার গ্রুপগুলোর মধ্যে জেপি (মঞ্জু) আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ছিল। বিজেপি এবং জাপা (জাফর) রয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে দলটি। কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চেয়ারম্যানের কার্যালয় একাধিক দফায় হামলার শিকার হয়েছে। একাধিক কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে বৈষম্য বিরোধীদের বাঁধায়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির কো- চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, ইমরান হোসেন মিয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, শেরীফা কাদের, মোঃ শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, মনিরুল ইসলাম মিলন, আশরাফুজ্জামান আশু, এসএম ইয়াসির, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস। সভা পরিচালনা করেন, জাতীয় পার্টির দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম।

জেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নুরুন্নাহার বেগম, আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, রেজাউল করিম রেজা, রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী, আহমেদ শফি রুবেল, সারোয়ার হোসেন শাহীন, আনোয়ার হোসেন, সাইফুল ইসলাম স্বপন, আব্দুল কাদের খান কদর, মোস্তফা জামান লিটন, কেফায়েত উল্ল্যাহ নজির, অধ্যাপক মাহসিনুল ইসলাম হাবুল, আনোয়ার হোসের আনু, বশির আহমেদ, মাহমুদুল হক মনি, জাকির হোসেন খান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, মোঃ মোজাম্মেল হক, সামছুল হক, নাসির আহমেদ খান, এ্যাড. মোঃ হাসান সাঈদ, এএফএম আরিফুজ্জামান দিদার, নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, এ্যাড. নাজমুল হুদা হিমেল, আহমেদ রিয়াজ, জালাল খান, এয়ার আহমেদ সেলিম, জিয়াউল হুদা আপলু, নুরুচ্ছফা সরকার, আবু তাহের, এ্যাড. মোঃ তারেজ, মিথিলা রওয়াজা, শওকত জামান মিশুক, নাফিজ আহমেদ খান টিটু, শাহরিয়ার জামিল জুয়েল, এ্যাড. খন্দকার ফায়েকুজ্জামান ফিরোজ, এ্যাড. রবিউল ইসলাম, মোঃ এমদাদুল হক বাচ্চু, হাজরা শহীদুল ইসলাম বাবলু, শফিকুল ইসলাম মধু, আব্দুল্লাহ আল মামুন।


আমার বার্তা/এমই