পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন নয়: ইসলামী আন্দোলনের আমীর

প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫, ১৮:২৪ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

দেশের মানুষ পিআর (সংখ্যানুপাতিক) ব্যবস্থার পক্ষে রায় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই।

শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান জনগণের বিশ্বাস ও আশা-আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী। এই সংবিধান মেনেই স্বৈরাচার তৈরি হয়েছে। আজ দরকার রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা। জুলাই অভ্যুত্থান শুধুমাত্র শাসক পরিবর্তনের জন্য ছিল না, এটি ছিল একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠনের আন্দোলন।

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ২৪ জুলাইয়ের ঘটনার সঙ্গে যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল, তাদের বিচার না করে নির্বাচন করা চলবে না। গণহত্যা, গুম, লুটপাটের জন্য ফ্যাসিস্ট চক্রের কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না।

নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার দাবি করে তিনি বলেন, যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, সংসদে তাদের তত আসন থাকতে হবে। এটি জনগণের, জেনজি প্রজন্মের এবং সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষের যৌক্তিক দাবি। প্রয়োজনে গণভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নিতে হবে।

চরমোনাই পীর বলেন, বারবার রক্ত দিয়েছি, কিন্তু সফলতা পাইনি, কারণ ভুল নেতা ও নীতির হাতে দেশ তুলে দিয়েছি। এবার ইসলামপন্থীদের ঐক্যের সময় এসেছে। এক বাক্সে ভোট নিলে ইসলামপন্থীরাই হবে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি। জুলাই অভ্যুত্থানের ফসল এই অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা নিঃস্বার্থভাবে এই সরকারের পাশে আছি। তবে সরকার যেন সংস্কার ও নিরপেক্ষতার পথ থেকে বিচ্যুত না হয়।

কৃষক-শ্রমিক, ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করব ইনশাআল্লাহ। নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম রাজনৈতিক অঙ্গীকার।

ফিলিস্তিন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে। মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে বাইতুল মুকাদ্দাসের মুক্তির জন্য।

উলামায়ে কেরামের মর্যাদা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, কিন্তু অবহেলিত। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দায়িত্ব পেলে আপনাদের মর্যাদা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠা করবে। এখন সময় ঘরে ফসল তোলার। গ্রামে-গঞ্জে, কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করে দাওয়াত দিন, ইসলামের সৌন্দর্য তুলে ধরুন। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামের বাংলাদেশ।

মহাসমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, বোধিজ্ঞান ভাবনা কেন্দ্রের সভাপতি দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নির্মল রোজারিও, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আবদুল কাদের, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসেন রাজি, এনসিপি’র সদস্য সচিব মুহাম্মদ আখতার হোসাইন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দীন, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানি এবং এবি পার্টির সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু।


আমার বার্তা/এমই