ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ সেখ বলেছেন, বৈষম্যহীণ রাষ্ট্র গঠনই গণঅভ্যূত্থানের মূল্য লক্ষ্য। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ-দখলবাজমুক্ত দেশ গড়তে না পারলে ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে গাদ্দারী করা হবে। জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলা প্রমাণ রাষ্ট্র সংস্কার ও গণহত্যার বিচার কতটা জরুরি। জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলা করে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের রক্তের দাগ মুছে ফেলতে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এনসিপির সমাবেশে হামলা করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ নতুন করে দেশকে সঙ্কটে নিপতিত করতে চাচ্ছে। এ হামলাকে কোনভাবেই হালকা করে দেখা সুযোগ নেই। প্রশাসন জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলার দায়ভার এড়াতে পারে না। অপরদিকে আজকে কক্সবাজারেও এনসিপির মঞ্চ ভাঙচুর করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে তা জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদকে বরখাস্ত করুন।
শনিবার (১৯ জুলাই) সকালে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশের উদ্যোগে জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘জুলাই বিপ্লব ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক, সেক্রেটারী জেনারেল বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব পাটোয়ারী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তারম মুক্তিযোদ্ধা দবির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের সভাপতি মুহাম্মদ কামরুল হক, সহ-সভাপতি নুরুজ্জামান সরকার প্রমুখ।
মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। কেননা অফিস স্থাপনের পরই মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে নতুন জঙ্গিবাদের নাটক সাজানো হয়েছে। অথচ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিছু আগেও বলেছিলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নেই। এখন দেখছি জাতিসংঘের বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে জঙ্গিবাদ তকমা দেওয়া হচ্ছে। ইসলামবিদ্বেষী ও সমকামীদের প্রমোটকারী জাতিসংঘের মানবাধিকার কোন অফিস বাংলাদেশে হবে না। ওরা এদেশে ইসলামকে ধ্বংস করতে আসছে। ওরা নিজেরাই চরম মানবতাবিরোধী, মুসলিম বিরোধী। এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব বলেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন অনেক দল বুঝে বলে প্রচার করছে। যারা নিজেদের অপকর্মকে প্রাধান্য দিতে পিআরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তাদেরকে বলে দিতে চাই জনগণের ভাষা বুঝতে না পারলে রাজনীতি করার দরকার নেই। আইন, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সংষ্কার জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। প্রশাসনের অবহেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলার চেইন অব কমান্ড ভেঙে পরছে। জুলাই যোদ্ধাদের হত্যার বিচার ছাড়া কোন নির্বাচন নয়।
দলের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম বলেন, সংস্কার ছাড়া দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ কায়েশ সম্ভব হবে না। অতীতের সকল অপকর্মের বিচার করতে হবে। যারা দেশকে অস্থিতিশীল পরিবেশে নিয়ে গিয়ে নির্বাচন নির্বাচন ঝপছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনুন। চাঁদাবাজদের কবর রচনা করুন।
সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, ভোটারদের ভোটের সঠিক মূল্যায়ন না হলে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ হবে না। এজন্য পেশীশক্তি ও কালো টাকামুক্ত পরিবেশে নির্বাচনের জন্য পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই।
আমার বার্তা/এমই