নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দূতাবাসের পাসপোর্ট সেবা, প্রবাসীদের স্বস্তি

প্রকাশ : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:৫৮ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে পেরাক রাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দুই শতাধিক প্রবাসীকে পাসপোর্ট সেবা দেওয়া হয়েছে।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলার টিমের মাধ্যমে এ সেবা দেওয়া হয়। এসময় হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান উপস্থিত থেকে ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলার টিমের কার্যক্রম তদারকি করেন।

এদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইসএসকেএলকে বাদ দিয়ে দূতাবাসের নিজ উদ্যোগে প্রবাসীদের সেবা দেওয়ায় স্বস্তি ও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

বরিশালের মো. গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘দূতাবাসের স্যারের মোগো যে সেবা দেলে, মোরা এমন সেবা পাইয়া একছের খুশি অইছি।’

মাগুরার খোরশেদ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা লিকাপড়া জানিনে তাই অতো কিছু বুঝিনে অ্যাম্বাসি আমাগের যে সিবা দিলো তাতে আমরা মেলা খুশি ওইচি।’

যশোরের মিলন হাসান ২০২২ সালে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। তিনি বলেন, সরাসরি দূতাবাসের পাসপোর্ট সেবা পেয়ে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খরচ থেকে বেঁচেছি, অন্যদিকে ভোগান্তিহীন সেবা পেয়েছি। কারণ ইএসকেএলের মাধ্যমে পাসপোর্ট করলে আমাদের অতিরিক্ত খরচ হতো। এমন দূতাবাসই তো আমরা চাই, যারা প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাবেন।

অন্যদিকে মালয়েশিয়ার পেরাকে অবস্থিত ওয়াইটিওয়াই কোম্পানিতে বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার। শনিবার (১৯ এপ্রিল) হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান ওয়াইটিওয়াই আচেহ নামে একটি বিখ্যাত গ্লাভস কোম্পানির সিতিয়াওয়ান, পেরাক শাখা পরিদর্শন করেছেন।

ওয়াইটিওয়াই গ্রুপ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলী আল জেফরি এবং ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনার অন্য সদস্যরা এসময় তাকে শুভেচ্ছা জানান। পরিদর্শনকালে হাইকমিশনার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

দূতাবাস জানিয়েছে, ওয়াইটিওয়াই কোম্পানি তাদের বিদেশি কর্মী সম্পর্কিত নীতি এবং তাদের কল্যাণমূলক অনুশীলন সম্পর্কে একটি ব্রিফিং করেছে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)’র নির্ধারিত শ্রম মানদণ্ডের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সংগতিপূর্ণ। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং তাদেরকে ‘কঠোর পরিশ্রমী, নিবেদিতপ্রাণ এবং অনুগত কর্মচারী’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

হাইকমিশনার হোস্টেল এবং বাংলাদেশি কর্মীদের দেওয়া অন্যান্য সাধারণ সুযোগ-সুবিধাগুলোও পরিদর্শন করেন। বিদেশি কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসহ তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য কোম্পানির গৃহীত ব্যবস্থা দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ওয়াইটিওয়াই কোম্পানিতে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ৬০০ জন কর্মী কাজ করছেন। কোম্পানিটি বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ এবং তাদের শ্রম পদ্ধতিতে উচ্চমান বজায় রাখার জন্য হাইকমিশনার ওয়াইটিওয়াই ব্যবস্থাপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য কোম্পানির প্রস্তাবের প্রশংসা করেন এবং ওয়াইটিওয়াই গ্রুপে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য হাইকমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

পরিদর্শনকালে হাইকমিশনার বাংলাদেশি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তিনি মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের পেশাগত সততা এবং স্থানীয় আইন ও বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে উৎসাহিত করেন। আইনি মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠাতেও উৎসাহিত করেন তিনি।

হাইকমিশনারের একটি দল কোম্পানিতে নিয়োজিত বাংলাদেশি কর্মীদের পাসপোর্ট তালিকাভুক্তি পরিষেবা দেওয়ার জন্য হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন।

ওয়াইটিওয়াই কোম্পানির দেওয়া সুবিধায় পাসপোর্ট দল ২০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীকে সেবা প্রদান করে।

এসময় হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন মিনিস্টার (রাজনৈতিক) মোসাম্মৎ শাহানারা মনিকা এবং মিশনের কাউন্সেলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন এবং মিশনের অন্যান্য কর্মকর্তারা।


আমার বার্তা/এমই