হজ প্যাকেজ ৫ লাখের মধ্যে আনা ও নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি

বৈষম্য বিরোধী হজ এজেন্সী মালিক সমিতি

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৬:৩০ | অনলাইন সংস্করণ

  অনলাইন

২০২৫ সালের হজ্জ প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ এবং বিগত বছরে  হাব ও হজ্জ নিয়ে য়ারা  নৈরাজ্য করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক  শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী হজ এজেন্সীর মালিকবৃন্দ।

শনিবার  (২৬ অক্টোবর) দুপুর  ১২ টায় গুলশান দ্যা ওয়েস্টিন হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন বৈষম্য বিরোধী হজ্জ এজেন্সীর আহবায়ক মোঃ আখতার উজ্জামান ।

এই সময় মো. আখতার উজ্জামান হজ্জের দূরবস্থার উত্তরণ ঘটিয়ে ২০২৫ সালের হজ্জ প্যাকেজ মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণ করে মুসলমানদের  ফরজ ইবাদত হজ্জ পালনকে সহজতর করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি ৪ দফা দাবি ও প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।

দাবিগুলো হচ্ছে: ১। হজ্জ যাত্রী পরিবহনে ক্যারিয়ার ও বিমান টিকেটের যৌক্তিক ভাড়া নির্ধারণঃ  অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে হজ্জ টিকেটের বিমান ভাড়া অনেক বেশি থাকায়। দুই/তিনটি এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে সকল হজ্জযাত্রী পরিবহণে বাধ্য করায় হজ্জ প্যাকেজের মেয়াদ দীর্ঘ হয় এবং সৌদি আরবে থাকা খাওয়ার খরচ বৃদ্ধি পায়। মাত্রাতিরিক্ত বিমান ভাড়ার কারণে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নির্ধারিত হজ্জ প্যাকেজ মূল্য প্রতিবছরই বৃদ্ধি পায়। ফলে সাধারণ হজ্জ যাত্রীগণ আর্থিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছে এবং অনেক হজ্জ পালনেচ্ছুক ব্যক্তি হজ্জে যাওয়ার সক্ষমতা হারাচ্ছেন।তাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স সহ অন্য সকল এয়ারলাইন্সের হজ্জ যাত্রী পরিবহনের সর্বোচ্চ ভাড়া ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে নির্ধারণ করার জোর দাবি  জানান।

হজের মৌসুমে হজ্জযাত্রীদের পরিবহণ ও ও সেবা প্রদানের জন্য দেশি বিদেশি অংশগ্রহণের নিমিত্তে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহবান করা যেতে পারে। বিশ্বের অনেক দেশে হজ্জযাত্রীদের পরিবহণ ও সেবা প্রদানে এই প্রচলন বিদ্যমান রয়েছে মর্মে জানা যায়। এর ফলে দেশীয় এয়ারলাইন্সের পাশাপাশি বহুজাতিক এয়ারলাইন্সগুলোর অংশগ্রহণমূলক প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং হজ্জযাত্রী পরিবহন ব্যায়ের তুলনামূলক মূল্য নির্ধারণ ও মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করা সহজতর হবে বলে মনে করেন। প্রথমতঃ বিমান ভাড়া কমানো ও চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ফ্লাইট নিশ্চিত করার জন্য তৃতীয় ক্যারিয়ার নির্ধারণ করে হজ্জ কার্যক্রমে যাত্রী পরিবহনের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে বাজেট ক্যারিয়ার নির্ধারণ না করে বাংলাদেশ থেকে যে সকল মধ্যপ্রাচ্যগামী বিদেশি এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে তাদেরকে একটি নির্দিষ্ট হারে হজ্জযাত্রী পরিবহন করার সুযোগ প্রদান করা হলে প্রতিযোগিতামূলক মার্কেট তৈরি হবে এবং হজ্জযাত্রী পরিবহনে ভাড়া হ্রাস পাবে। তৃতীয় ক্যারিয়ারের মাধ্যমে হাজী পরিবহনের বিষয়ে মহামান্য আদালত নির্দেশনা প্রদান করেছিলেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন; ভারত, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য তৃতীয় কেরিয়ারের মাধ্যমে হজ্জযাত্রী পরিবহন করা হয়। এক্ষেত্রে সৌদি সরকারের সাথে যখন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তখন হজ্জযাত্রী পরিবহনে কোন এয়ারলাইন্স নির্ধারিত না করে সকল এয়ারলাইন্সের জন্য উন্মুক্ত রাখা হলে এই সমস্যা সমাধান করা যাবে বলে আমরা মনে করেন।

২। এজেন্সীপ্রতি হজ্জ যাত্রীর কোটা নির্ধারণঃ  হাব সদস্যদের প্রাণের দাবী পূর্বের মত এজেন্সীপ্রতি সর্বনিম্ন কোটা ৫০ জন ও সর্বোচ্চ কোটা ১৫০ জন করার প্রস্তাব করেন। এতে করে অধিক সংখ্যক এজেন্সী অপারেটিং সুবিধা পাবে এবং সেবার মান বৃদ্ধি ও অধিকতর সন্তোষজনক হবে।

৩। মোনাজ্জেমদের জন্য মাল্টিপল বিজনেস ভিসা ও গাইডদের জন্য বারকোর্ড ভিসার ব্যবস্থা করাঃ বাড়ি ভাড়া করার জন্য এজেন্সী মালিকদের একাধিকবার সৌদি আরবে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। মাল্টিপল ভিসা না থাকলে এজেন্সী মালিকগণ সময়মত ও প্রয়োজনীয় মুহুর্তে সৌদি আরবে নির্বিঘ্নে প্রবেশ করতে না পারলে বাড়ী ভাড়া, মুয়াল্লিম নির্ধারণ, মিনা আরাফায় হাজীদের তাবু বাছাইকরন সহ নানাবিধ কাজে ব্যঘাত ঘটে। ফলে ভিসা ইস্যু বিলম্বিত হয় এবং ফ্লাইট সিডিউলে বিপর্যয় দেখা দেয়। তাই মালিকদের জন্য মাল্টিপল ভিসার দাবী জানান। সাথে সাথে বাংলাদেশের বয়োঃবৃদ্ধ হাজীদের জন্য প্রতি ৪৫ জনে একজন গাইড থাকার নিয়ম রয়েছে। গাইডদেরকে বারকোড ভিসা সরবরাহ না করা হলে হজ্জ ভিসায় যেতে বাধ্য করলে প্যাকেজ মূল্য বৃদ্ধি পাবে। তাই প্রত্যেক গাইড এর জন্য বারকোড ভিসার দাবীও জানান।

৪। গ্রুপ লিডার ও ব্যাঙের ছাতার মত গজানো অবৈধ হজ্জ কাফেলা বন্ধকরনঃ গ্রুপ লিডার ও ব্যাঙের ছাতার মত গজানো অবৈধ হজ্জ কাফেলাগুলোকে বন্ধ করে হজ্জ ব্যবস্থপনাকে ঝুঁকিমুক্ত করা জরুরী। সাথে সাথে সাধারণ হজ্জ যাত্রীদেরকে সরাসরি এজেন্সী মালিকদের সাথে চুক্তি ও এজেন্সীর ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন করেন।

আখতার উজ্জামান আরো বলেন, আমরা তসলিমসহ বাতিলকৃত হাৰ কার্যনির্বাহী কমিটির সকল অপকর্ম, দূর্নীতি, লুটপাট ও অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও লুটপাট করে আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধারের জোর দাবী জানাচ্ছি এবং সকল প্রকার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তকে রুখে দিয়ে হজ্জ ব্যবস্থাপনাকে সহজীকরণ করতে  সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে কাজ করবো।

হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশের (হাব) সাবেক মহাসচিব এম এ রশিদ শাহ  সম্রাটের বলেন, দেশের সকল মানুষের সার্বিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে হজের প্যাকেজ ৫ লক্ষ টাকা রাখলে সকল মানুষের জন্য সহনীয় হবে আশা প্রকাশ করেন।

সম্রাটের অভিযোগ, হাব এর বিতর্কিত (পলাতক) সাবেক সভাপতি ও তার দোসররা বিগত ৪ বছর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করে আমাদের সংঘ স্মারক ও বানিজ্য সংগঠন বিধিমালার চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে। ৪ বছরের এজিএম করতে ব্যর্থ হওয়ায় কোন বাজেট পাস না করেই অননুমোদিতভাবে হাবের কোটি কোটি টাকা ব্যায় করে আসছিল। শুধু তাই নয়, গায়ের জোরে যুবলীগের ক্ষমতা ব্যবহার করে কোন প্রকার আই কানুন বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করেই নিজেদের মনগড়া ভাবে হাব কে ব্যবহার করে আসছিল।

বৈষম্য বিরোধী হজ এজেন্সীর মালিকবৃন্দের অভিযোগ, যুব লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, অর্থ লুন্ঠনকারী, সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী, স্বৈরাচারী পলাতক সাবেক সভাপতি এম. শাহাদাত হোসেন তসলিম হাব সভাপতি পদের অপব্যবহার করে তার রাজনৈতিক গুরু ও সকল অপকর্মের হোতা প্রাক্তন অর্থ মন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামালের সহযোগিতায় ও অংশিদারীত্বে ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশের জিএসএ প্রাপ্ত হয় । সে তার অপরাপর কার্যনির্বাহী সদস্যদের নিয়ে হজ্জ যাত্রী পরিবহনে জাতীয় ক্যারিয়ার বিমান বাংলাদেশ এয়রলাইন্স ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্স এর পাশাপাশি ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সকে সংযুক্ত করে হাজীদেরকে নিম্ন মানের সেবা । আসন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রায় দ্বিগুন ভাড়ায় শত শত কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। যখন ১ ডলার সমান ১০ টাকা সময় হঠাৎ করে ১,২৮,০০০ টাকার বিমান ভাড়া চক্রান্ত করে তাদের নিজেদের হীন স্বার্থ হাসিল করতে একলাফে ১,৯৮,০০০ নির্ধারণ করে তার ফ্লাই নাসের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এবং সকল নিয়ম নীতি ভেঙ্গে সে তার ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠান "ডাইনেস্টি ট্রাভেলস” এর নামে হাজীদের অর্থ আত্মসাৎ করেন।