হজের সফরে যেসব দোয়া পড়বেন
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:৩৬ | অনলাইন সংস্করণ
আমার বার্তা অনলাইন:

প্রতি বছর সৌদি আরবের মক্কায় হজ পালন করেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম। হজ উপলক্ষে মক্কায় লাখ লাখ মুসলিমের জনসমাগম ঘটে। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় জিলহজ মাসের আট তারিখ থেকে।
তবে হজ পালনের জন্য মুসলমানরা মক্কায় যেতে শুরু করেন জিলকদ মাস থেকেই। হজের সফরের শুরু থেকে মক্কায় পৌঁছার আগ পর্যন্ত বেশ কিছু দোয়ার আমার করতে পারেন একজন হজযাত্রী।
বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়া
হজের সফরের জন্য বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় আল্লাহর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার দোয়াটি পড়তে পারেন। এতে সুন্নতের ওপর আমল এবং আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করা সহজ হবে।
দোয়া
بِسْمِ اللهِ تَوَكَّلْتُ عَلَى اللهِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।
অর্থ : আল্লাহর নামে, আল্লাহ তায়ালার ওপরই নির্ভর করলাম, আল্লাহ তায়ালার সাহায্য ছাড়া বিরত থাকা ও মঙ্গল লাভ করার শক্তি কারো নেই।
আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, “যদি কেউ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’, তবে তাকে বলা হয় (আল্লাহ তায়ালাই) তোমার জন্য যথেষ্ট, তুমি হেফাজত অবলম্বন করেছ (অনিষ্ট থেকে)। তাতে শয়তান তার থেকে দূরে সরে যায়। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৪২৬)
গাড়িতে ও বিমানে উঠার দোয়া
বেশির ভাগ মানুষই বিমানে হজের সফর করেন। সৌদি আরবের সঙ্গে কোনো দেশের স্থল সীমা থাকলে তারা গাড়িতেও হজের সফর করতে পারেন। যারা বিমানে হজের সফর করেন তারাও নিজের বাড়ি থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত গাড়িতে সফর করেন। গাড়িতে নিরাপদে থাকার জন্য হাদিসে বর্ণিত যানবাহনের দোয়াটি পড়া যেতে পারে।
দোয়া
بسم الله الرحمن الرحيم سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِينَ
উচ্চারণ : বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সুবহানাল্লাজি সাখখারালানা হা-যা ওয়া-মা-কুন্না লাহু মুকরিনিন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুন কালিবুন।’
অর্থ : আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি অত্যন্ত দয়ালু ও অশেষ করুণাময়। তিনি পূতপবিত্র ওই সত্তা যিনি বাহনকে আমার অধীন করে দিয়েছেন। আমাদের কাছে তাকে আয়ত্তে আনার ক্ষমতা ছিল না। অবশ্যই আমরা আমাদের প্রভুর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।
ইহরামের নিয়ত
কোনো ব্যক্তি হজ, ওমরা বা উভয়টার নিয়তে যখন তালবিয়া পাঠ করে তখন তার ওপর কিছু হালাল বিষয়ও হারাম হয়ে যায়। একে ইহরাম বলা হয়। রূপক অর্থে ওই চাদরকেও ইহরাম বলা হয় যা ইহরাম অবস্থায় হাজিরা পরিধান করে থাকেন। যে ব্যক্তি ইহরাম পরিধান করেন তাকে মুহরিম বলা হয়।
হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে নিজ দেশ থেকে পবিত্র নগরী মক্কায় রওয়ানা হওয়ার আগেই বাসা থেকেই ইহরাম বাঁধতে হয়।
হজ বা ওমরা সহজে সম্পাদনের জন্য ইহরামের উদ্দেশ্যে গোসল করে ইহরামের পোশাক পরে এভাবে নিয়ত করা যায়—
اَللَّهُمَّ اِنِّي اُرِيْدُ (العُمْرَةَ - الْحَجَّ) فَيَسِّرْهُ لِيْ وَ تَقَبَّلْهُ مِنِّي
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি উরিদুল উমরাতা/হাজ্জা ফাইয়াসসিরহু লি ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নি’
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি ওমরা/হজের ইচ্ছা করছি; আপনি আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং আমার পক্ষ থেকে তা কবুল করুন।’
ইহরামের পোশাক পরার পর দোয়া
ইহরামের পর এ দোয়াটি পাঠ করা সুন্নাত
اَللَّهُمَّ اِنِّيْ اَسْئَلُكَ رِضَاكَ وَ الْجَنَّةَ وَ اَعُوْذُبِكَ مِنْ غَضَبِكَ وَ النَّارِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা রিদাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউ’জুবিকা মিন গাদাবিকা ওয়ান্নারি’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের আশা করছি এবং আপনার অসুন্তুষ্টি ও জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।’
বিমানে দোয়া ও জিকির আজকার করা
হজের জন্য বিমানে উঠার পর মক্কা পৌঁছা পর্যন্ত পুরোটা সময় দোয়া ও জিকির, আজকারে কাটানো উচিত। এ সময় পড়ার মতো নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। আল্লাহর রহমত ও কল্যাণ কামনায় হাদিসে বর্ণিত যেকোনো দোয়া পড়া যেতে পারে। কেউ চাইলে কোরআন তিলাওয়াত করতে পারেন।
মক্কায় পৌঁছার পর করণীয়
হজযাত্রীরা সফর শুরু করে যখন মক্কায় পৌঁছবেন, তারা আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন। এবং মক্কায়
পৌঁছার পর দোয়া করবেন—
হে আল্লাহ! আমাকে এ পবিত্র শহরে ইমান, নিরাপত্তা ও মঙ্গলসহকারে পৌঁছে দিন। নিরাপদে থাকার তাওফিক দিন এবং এ নগরীর সম্মান ও আদব রক্ষার তাওফিক দান করুন
আমার বার্তা/এল/এমই