ভূমি অফিসের ৫ কর্মকর্তার সহযোগিতায় জমি দখলের চেষ্টা 

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০:৪২ | অনলাইন সংস্করণ

  এ আর মোল্লা:

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ভূমি অফিসের সাবেক ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুদের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ভূমি অফিসের সাবেক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. হাছান আহমেদ, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন, সার্ভেয়ার মিলন শেখ, ভারপ্রাপ্ত কানুনগো নাজমুল, ডি.সি.আর ও মূল রেজিস্ট্রার লেখনকারী (দ: কেরানীগঞ্জ) মো. হাবীবের সহযোগিতায় মিস কেস নং ৩৮৮/০৮ এর আদেশ বলে ২৪০৩ ও ৩৬৩২ নং জোত বাতিল করে ৩৮৭৫ নং জোত নামজারি দেখানো হয়।

পরবর্তীতে ৩৮৭৫ নং জোত বলবৎ থাকা অবস্থায় পুনরায় ৩৩৯/২০১৮ নং মিস কেস মূলে ২৪০৩ ও ৩৬৩২ নং পূর্বে বাতিলকৃত জোত আবার বাতিল করে ভূমি দস্যু সুজন কুমার গংদের নামজারি করে দেওয়া হয়।

এমতাবস্থায় দুর্নীতি কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ভূমি সচিব বরাবর অভিযোগ করেছেন অতীশ দ্বীপংকর মিঠু। তিনি অভিযোগে বলেছেন, আমি নিম্ন তফসিল বর্ণিত ভূমি। আমার পিতা রেকর্ড সূত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখলে আছেন। পিতার নিকট হতে হেবা সূত্রে মালিক হয়ে যথারীতি নামজারি ও জমাভাগ করে ভোগ দখলে বিদ্যমান। কিন্তু দুঃখের বিষয় আর.এস ৩৪১ নং খতিয়ানের জমি নামজারি ও জমাভাগ কেস নং ৭৮৯৪/০৬ ও ৪১৫২/০৮ স্থলে নামজারি হয়। অতঃপর শুভাঢ্যা ভূমি কর্মকর্তা নিজে বাদী হয়ে মিস কেস নং ৩৮৮/০৮ স্থলে মিস কেস মোকদ্দমা করে উক্ত নামজারি সমূহ বাতিল করে মূল জোত ভুক্ত করা হয়। অতঃপর আমার পিতার নামে ১৬৩৪৬/০৮-০৯ তারিখ ১০/০২/২০০৯ মূলে নামজারি ও জমাভাগ করে ৩৮৭৫ নং জোত ভুক্ত করে ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করে। কিছু বিক্রি করে বাকী ভোগ দখলে আছে। পরবর্তীতে আমার পিতার নিকট থেকে হেবা সূত্রে প্রাপ্ত হয়ে আমার নামে নামজারি ও জমাভাগ মোকদ্দমা নং ৯১১৩/২০২০-২০২১ জোত নং ১৭৮/০৮ নং জোত ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে আমার নামে সৃজিত নামজারি ও জমাভাগ বহাল থাকা অবস্থায় সহকারী কমিশনার(ভূমি) কেরানীগঞ্জ দক্ষিণকে ভুল বুঝিয়ে পুনরায় মিস কেস নং ৩৩৯/২০১৮ সৃজন করে পূর্বের বাতিলকৃত নামজারি সমূহ পুনরায় বাতিল করে মূল রেজিস্টারের পাতা ছিড়ে ভূমি দস্যু সুজন গং এর নামে ৫০৮৭/(ix-i) ২০২০-২১ নং নামজারি ও জমাভাগ করে ১৫/০৮ নং জোত সৃজন করে ভূমি কর প্রদান করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছ থেকে উক্ত নামজারি দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং জমি না ছাড়িলে সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।

কিন্তু পরিতাপের বিষয় ৩৪১ নং খতিয়ানে মোট জমি ০.১৭ একর যা আমার নামে এবং মালিক গণদের নামে ও আবুল মেম্বারের নামে ০.১৭ একর নামজারি বলবৎ আছে। অপরদিকে পূর্বে সুজন গংদের নামে, মাঝখানে সুজনের মায়ের নামে এবং বর্তমানে ভূমি দস্যু সুজন গংদের নামে বারবার মূল জোতে ভূমি না থাকা স্বত্বেও বেআইনিভাবে পুনরায় অতিরিক্ত ০.১৭ একর জমি নামজারি করা হয়। বেআইনিভাবে সৃজন করা নামজারিটি বাতিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ এর বরাবরে ৩৭৭/২০২৩ নং মিস কেস দায়ের করা হয়েছে। তবে কোন প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। জমিটির তফসিল: জেলা - ঢাকা, থানা - কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ, মৌজা মিরের বাগ। খতিয়ান: সি.এস ১৮০, এস.এ ২০৯, আর.এস ৩৪১। সি. এস/এস.এ ৫০ & ৭১। দাগ- আর.এস ৪২ & ৯০। জমি ০.০৯ + ০.০৮/ ০.১৭।

হাছান আহমেদের বিরুদ্ধে জমি দখল চেষ্টার সহযোগিতা ছাড়াও ঘুষের বিনিময়ে সেবা প্রার্থীদের সেবা প্রদান ও  জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে। বিভিন্ন অভিযোগের ব্যাপারে হাছান আহমেদের মতামত নিতে তার অফিসে গেলে তিনি মতামত না দিয়ে উলটো প্রতিবেদককে হুমকি ধামকি ও অসদাচরণ করেন।

অভিযুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিভিন্ন অফিসে বদলির কারণে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে এ ব্যাপারে সুজন কুমারের সাথে যোগাযোগ করেও এখনো আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি