সিন্ডিকেট বাণিজ্য জমজমাট
বহালতবিয়তে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১৯:৩৯ | অনলাইন সংস্করণ
শাহীন আবদুল বারী:
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল দুর্নীতির ও অনিয়মে ভরপুর। পতিত সরকারের দোসররা এখনো আছেন ফুরফুরে মেজাজে। পরিচালকের নেতৃত্বে বিশাল একটি সিন্ডিকেট পতিত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয়।
রাজধানীর অন্যতম ১৩৫০ সয্যার সরকারি এই হাসপাতালটি গত ১৫ বছরে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ (ওসেক) থেকে শুরু করে চোখ, নাক কান গলা, ইউরোলজি, গাইনি, মেডিসিন, নিউরোলজি, কিডনি ডাইলোসিস, ডেন্টাল, অর্থপেডিক, সার্জারি বিভাগ সহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ গুলোতে দুর্নীতি ও অনিয়মে নিমোজ্জিত। প্রতিদিন ওসেক ও বহির্বিভাগে ২০০০ হাজার থেকে ২৫০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর কেউ চলে যান আবার কেউ ভর্তি হোন হাসপাতালে। কিন্তু রোগিদের কি পরিমাণে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছেন তা কেবল রোগি এবং তাদের স্বজনরাই জানেন। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে রোগিদের গলা কেটে টাকা আদায় করা হচ্ছে। ভর্তির সময় প্রতিজন রোগী হচ্ছেন বিড়ম্বনার শিকার। আয়া, বুয়া, ওয়ার্ড বয় দ্বারা প্রতিনিয়ত হেনস্তার শিকার হচ্ছেন রোগী ও স্বজনরা। স্তরে স্তরে টাকা দিতে হয়। দেখে মনে হয় হাসপাতাল নয় এটি টাকার কারখানা। কেউ কারো কথা শুনতে রাজি নয়। যে যেভাবে পারছেন রোগিদের স্বজনদের নিকট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা । স্বজনরা টাকা খরচ করেও কাক্ষিত সেবা পাচ্ছেননা। গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের কোন চিকিৎসা নেই এই হাসপাতালে। চিকিৎসায় অবহেলার কারণে প্রতিদিন অনেক রোগি মারা যাচ্ছেন।স্বজনদের আহাজারীতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠলেও দায়িত্বরতা টাকার নেশায় চরম বিবর। রোগি এবং স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার ও নিষ্ঠুরতা এতোটাই নির্মম যা দেখে মনে হয় যেন হাসপাতালে কোন হ্নদয়বান ব্যাক্তি নেই।উল্টো মনে হয় রোগি ও তাদের স্বজনদেরকে শাসন করা করা হয়।
এদিকে হাসপাতালে বিভিন্ন টেন্ডারের নামে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এসব টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন পরিচালক নিজেই। তার নিয়োজিত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে দেয়া হয় টেন্ডার বাণিজ্য'র দায়িত্ব। স্বজনরা যাতে কাজ পান সেজন্য গড়ে তোলা হয়েছে সিন্ডিকেট। সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া আউটসোর্সিং ও স্পেশাল ডিউটি করা স্টাফরা। গত ১৫ বছর ধরে একই নিয়মে চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোনো প্রতিকার তো দুরের কথা তারা দেখেও না দেখার বান করছেন।
এক অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৫ সেপ্টেম্বর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চোখের অপারেশন থিয়েটারে আগুন লাগে। আগুনের সূত্রপাত বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট থেকে বলে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফখরুদ্দিন। হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ ১টি অপারেশন থিয়েটারে আগুন লাগার খবর মিডিয়ায় খবর প্রচার হয়নি। বিষয়টি খুবই রহস্যময় বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মিডিয়াকে জানানোর কথা আর সেখানে মিডিয়াকে খবর না দিয়ে বিষটি ধামাচাপা দেয়ায় রহস্য আরো ঘুণিভ’ত হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কয়েকজন স্টাফ বলেন এটা মূলত একটি নাশকতা। তাই শুধু ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিয়ে আগন নিবারণ করে শাক দিয়ে পাদ ডাকা হয়েছে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লোক দেখানো একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। ওই তদন্ত কমিটিতে হাসপাতালের প্রকৌশলীকে বাদ দিয়ে পরিচালকের আস্থাভাজন একজন বায়োমেডিক্যাল টেকনিশিয়ানকে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিচালকের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি যাকে যোগ্য মনে করেছি তাকেই রেখেছি। একপ্রশ্নবানে জিজ্ঞাসা করা হয় প্রকৌশলীকে কেনো তদন্ত কমিটিতে রাখেননি তখন জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান পরিচালক।
অভিযোগ উঠেছে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা: শফিউর রহমান পতিত সরকারের সময় যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পর কাজ বাদ দিয়ে সরকারের যতো গুণগান ছিলো তা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। তার অধিনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারিরাও স্বায় দিতেন তাকে। কথায় কথায় বলতেন আওয়ামিলীগ সরকার না থাকলে আমার চেয়ারটা থাকবেনা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে সরকারকে টিকিয়ে রাখতে কয়েক কোটি টাকাও খরচ করেন বলে গুরুত্বর অভিযো রয়েছে ডা. শফিউর রহমানের বিরুদ্ধে। তিনি এখন নতুন করে বোল পাল্টিয়ে বিএনপি সাজতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অনেকটা সফল হওয়ার পথেও ডা. শফিউর । সরকার পরিবর্তন হয়েছে তিন মাস। কিন্তু তিনি রয়েছেন বহালতবিয়তে । কাজের চেয়ে বেশী কথা বলা শফিউর কিভাবে পরিচালক পদে থাকা যাবে তা নিয়ে তদবিরে ব্যস্ত আছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তাদের ভাষায় পরিচালকের ভাবখানা এমন যেন তিনি সব জান্তা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কোনো সাংবাদিকদের তিনি ইমারজেন্সিতে ছবি তুলতে অনুমতি দেননি। তিনি বলতেন সরকারের নিষেধ কোনো আহত নিহত লোকদের তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় অনেক আহত নিহত লোকদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন।
সরকার পতনের পর ডা: মো. শফিউর রহমান ভয়ে কিছু দিন পলাতক ছিলেন অফিস করেননি। এখনো ভয় কাটেনি তাই হাসপাতালে রাউন্ডে বের হলে চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারিদেরকে নিয়ে বের হন। তার সাথে কোনো ডাক্তার নার্সরা থাকেননা। এবিষয়ে প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তার নিকট জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি তারাও স্বীকার করেছেন। গত জুন মাসে হাসপাতালে কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার হয়। সেখানে উপপরিচালক ডা: নন্দ দুলাল সাহাকে দায়িত্ব দেন। তার নির্দেশনায় সাহা নিজেদের ঠিকাদার দিয়ে টেন্ডার জমা দেন এবং কমিশন বানিজ্য করেন। মেডিসিন, জেনারেল সহ বেশ কয়েকটি কাজ পরিচালক ও উপপরিচালকের আস্থাভাজন লোকজন পেয়েছেন। এবারও আউটসোর্সিং এর টেন্ডার নিয়ে দুইবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। পরিচালকের আরেকজন আস্থাভান লোক রয়েছেন ডা: নাদিম আহমেদ শাহ এসএলপিপি। ক্যািিশয়ার এবং একাউন্টস সেকশনের সকল কাগজ পত্র তার দায়িত্বে নিয়েছেন। ডা: নাদিম আহমেদ শাহকে পরিচালক সাথে করে নিয়ে আসেন এখানে। পরিচালকের সব গোপন কাজ এসএলপিপি করে থাকেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, হাসপাতালে অনেক গুলো ইউনিটে অপারেশন থিয়েটারে অপারেশন হয়ে থাকে। সেখানে রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। চোখের অপারেশন করতে হলে ডাক্তারের পছন্দ মতো ফার্মেসী থেকে ওষুধ কিনে আনতে হবে। এর কারণ হিসেবে জানা যায় ডাক্তারের সাথে ওই ফার্মেসীর কমিশন বাণিজ্য রয়েছে। এরপর চোখের লেন্স তাদের নির্দিষ্ট কোম্পানির লোকদের কাছ থেকে নিতে হয়। সেখানেও রয়েছে ডাক্তারের ভালো একটি কমিশন। কেউ যদি হাসপাতালে না থেকে অপারেশন করতে চায় সে ক্ষেত্রে তাকে অন্যভাবে হয়রানি করা হয় যাতে রোগি তাদের কথা মতো অপরেশন করেন। অভিযোগ রয়েছে, চোখের ডাক্তার ওমর শরীফ দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে সিন্ডিকেট তৈরি করে রেখেছেন। তার রুমে সিসি ক্যামেরা নিজ খরচে স্থাপন করা হয়েছে। তিনি ২ জন সুনদরী মেয়েকে নিজ খরচে এপিএস নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন। একজন ডাক্তার হাসপাতালে কতো টাকা ইনকাম করলে বাড়তি লোকবল রাখতে পারেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ডাক্তারের কমিশনের কারনে রোগীদের খরচ পড়ে কয়েক গুণ বেশি।
>> গাইনি ইউনিট:
হাসপাতালের গাইনি ইউনিট-এ গিয়ে দেখা যায়, সেখানে রোগীর ভোগান্তির শেষ নেই। জরুরি সেবার নামে অতিরিক্ত ওষুধ কিনতে হয় রোগীর স্বজনদের। এমন ভাবে বলে যেন এখনই না আনলে ”আমাদের করার কিছুই নেই”। যতো গুলো ওষুধের লিস্ট দেয়া হয় ওটিতে এতো ওষুধের প্রয়োজন হয়না। ওষুধ গুলো পরবর্তীতে নার্স , আয়া ও বুয়ারা সরিয়ে নিয়ে তাদের নির্ধারিত ফার্মের্সীতে বিক্রি করে দেয়।
মেডিসিন ইউনিটে রোগী ভর্তি হলে যতো প্রকার প্যাথলজি টেস্ট আছে তা বাইরে কিনতে হয়। মেডিসিন ইউনিটের ডাক্তাররা রোগী ও রোগীর স্বজনদের বাধ্য করেন। একটা ইসিজি টেস্ট হাসপাতালে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। একই টেস্ট বাইরে ৫০০ টাকা দিয়ে করতে হয়। তা আবার টেস্ট গুলো ডাক্তারের নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে করতে হবে। তা নাহলে ডাক্তাররা রোগী ও স্বজনদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালককে ভ’ক্তভোগিরা অনেকবার মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি। এটিই হচ্ছে মেডিসিন ইউনিটের সেবার মান।
>> ডেন্টাল ইউনিট:
সহজ সরল মানুষ গুলো হাসপাতালে এসেই ধোঁকাবাজির শিকার ডেন্টাল চিকিৎসা করতে এসে। এখানে রোগীর সামান্য দাঁত উঠাতে হলে করতে হয়ে করোনা টেস্ট, সিবিসি ও জন্ডিসের রক্ত পরিক্ষা। এর পর রোড ক্যানেল করতে হলে তিন মাসের আগে কোনো সিরিয়াল ভাগ্যে জোটেনা। কিন্তু টাকা হলে কোন সিরিয়াল লাগেনা। এখানে যারা আউটসোর্সিংয়ের দায়িত্ব পালন করে তাদের সাথে কথা বলাই যায়না। মনে হয় যেন কোন বড় ডাক্তার তারা। শুধু টাকা হলেই তাদের সাথে কথা বলা যায়। এমন আচরণ রোগিদের সাথে করে যা প্রতিবাদ করলে উল্টো হেনস্থার শিকার হতে হয়।
>> কলোরেক্টাল সার্জারী ইউনিট:
সেবা প্রদানের আরেকটি বিভাগ হচ্ছে কলোরেক্টাল ইউনিট। এই ইউনিটে সেবা পাওয়া ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। এখানে ১ মাস ২ মাস রোগী ভর্তি থেকেও অপারেশনের ডেট পাওয়া যায়না। অনেক রোগী বিরক্ত হয়ে পরে প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হন। এ বিভাগে কয়েকজন ডাক্তারের আচার-আচরণ খুবই খারাপ। রোগীর স্বজনদের সাথে তাদের আচরণ এমন কর্কট যা বলার মতো নয়। এই হলো সরকারি হাসপালের সেবার মান। জনগণের টেক্সের টাকায় বেতনভুক্ত কর্মচারি হয়ে সাধারণ মানুষের সাথে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ব্যবহার করা হয়। যা একজন ডাক্তার সেবার বদলে টাকা কামায়ে ব্যস্তার প্রমাণ ছাড়া আর কিছুই নয়।
আরো অভিযোগ হচ্ছে, কিডনি ডায়লোসিস ইউনট এর ৩০ শয্যার ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছেন ডা: রতন দাস গুপ্ত। কিডনি ইউনিটের যত যন্ত্রপাতি কিনা হয়েছে তা তিনি নিজের পছন্দের কোম্পানি জিএমআই থেকে নিয়েছেন। তার শর্ত শুধু জিএমআই পুরন করতে পেরেছে। অন্য কোনো ঠিকাদার যোগ্য থাকলেও তাদের দেয়া হয়নি একমাত্র ডাক্তার রতনের কারণে। এছাড়াও বহির বিভাগের ১০৯২ নং রুমে পাথর ক্রাশীং মেশিনটি ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকায় কিনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অযত্নে অবহেলায় ফেলে রাখা হয়েছে। বহির্বিভাগ ২য় তলায় ইউলোজির ডাক্তার মোঃ অলিউল ইসলাম মারুফের তত্ত্বাবধানে সেক্স ইস্টুমিলেটর নামের ১টি মেশিন দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। ওই যন্ত্রটির দাম ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ রকম আরো অনেক দামি যন্ত্রপাতি হাসপাতালের বিভিন্ন রুমে অযত্নে পড়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গণপূর্ত ইএম শাখা থেকে বড় বাজেটে ফায়ার হাই ড্রাংক সিস্টেম করে নিচ তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত সেট করে দেয়া হয়েছে। এর কাজ হচ্ছে হাসপাতালে কখনো অগ্নিকান্ড হলে তা দ্রুত আগুন নিবানো। কিন্তু গত ২৫ সেপ্টেম্বর হাসপাতালের ২য় তলায় চোখের অপারেশন থিয়েটারে আগুন লাগলেও এই ফায়ার হাইড্রাংক কোনো কাজেই আসেনি। গণপূর্ত ইএম শাখার প্রকৌশলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মোহাম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের অফিস থেকে লোক এনে ট্রেনিং করানোর কথা। কিন্তু আমরা ওখানে বুঝিয়ে দেয়ার পরও আজ পর্যন্ত কাউকে ট্রেনিং করায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গুরুত্বর অভিযোগ উঠেছে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা: শফিউর রহমান ১১টি লাশ হাসপাতালের লাশ ঘরে রেখে দেন। যাতেকরে লাশ গুলো সকলের অগোচরে থেকে যায়। কিন্তু ছাত্র সম্বনয় ও মন্ত্রণালয় থেকে যখন সমস্ত হিসাব চাওয়া হয় তখন ১১টি লাশের সন্ধান পাওয়া যায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লাশ ঘরে। যখন তাকে জেরা করা হয় এই লাশগুলোর বিষয়টি আপনি কেন গোপন করেছেন তখন তিনি সকলের সামনে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চান। বিষটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন ভ’ক্তভোগিরা। এখন প্রশ্ন উঠেছে পতিত সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই পরিচালক ডা: শফিউর রহমান ১১টি লাশ হাসপাতালের লাশ ঘরে রেখে দেন।
নার্স সুপার শাহনেওয়াজ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বেশ কয়কজন সিনিয়র স্টাফ নার্স। নার্স সুপার শাহনেওয়াজ পারভীন নার্সদের ট্রেনিংয়ে পাঠানোর নামে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। একাধিক নার্সদের বারবার তিনি ট্রেনিংয়ে পাঠানোর মাধ্যমে তিনি স্বজনপ্রীতি করছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে নার্স ইনচার্জকে একই জায়গায় রাখছেন বছরের পর বছর ধরে। আর যারা তাকে অর্থ যোগান দিতে না পারে তাদেরকে হয়রানি মূলক এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে বদলাতে থাকে নার্স সুপার শাহনেওয়াজ পারভীন। তিনি সব সময় আওয়ামিলীগ সরকারের লোক পরিচয় দিয়ে খুব দাম্ভিকতা দেখিয়েছেন হাসপাতালের নার্সদের সাথে। ইচ্ছে মতো কাজ করিয়েছেন জুনিয়রদের দিয়ে। নার্স সুপার শাহনেওয়াজ পারভীনের সাথে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সব অস্বীকার করেন। তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। আমার সাথে কারো কোনো অর্থ লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি। আপনারা খুঁজে দেখুন।
অপরদিকে এক মাস আগে মাহফুজ নামে এক ব্যাক্তি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কাজে যোগদান করে। হাসপাতালের আউটসোর্সিং এর টেন্ডার সিডিউল মাত্র জমা হয়েছে কিন্তু এখনো কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজের জন্য নির্ধারণ করা হয়নি। কিন্তু পরিচালকের এপিএস নাইমের খালাতো ভাই পরিচয় দানকারী মাহফুজ কাজ পেয়েছেন বলে সর্বত্র খবর ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের এহেন পরিস্থিতিতে একজন পরিচালকের তিন জন এপিএস, ৪ জন পিয়ন। ডা. শফিউর রহমানের রাজকীয় জীবন যাপনের শেষ কোথায়?
আমার বার্তা/এমই