মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ভাস্কর্যের স্রষ্টা হামিদুজ্জামান খান আর নেই। রোববার সকাল ১০টা ৭ মিনিটে রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী চিত্রশিল্পী আইভি জামান।
তিনি বলেন, দুপুর আড়াইটায় ঢাবির চারুকলায় তার মৃতদেহ আনা হবে। বাদ আছর কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।
আইভি জামান জানান, হামিদুজ্জামান খান ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। তবে দাফনের বিষয়ে পরিবার এখনও কিছু জানায়নি।
এর আগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে চিত্রশিল্পী ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৪ দিন ধরে তিনি হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হামিদুজ্জামান খান ১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার সহশ্রাম ধুলদিয়া ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৭ সালে বাংলাদেশ কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে চারুকলায় স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। সেখানে ১৯৭০ সালে এই শিল্পী যোগ দেন শিক্ষক হিসেবে। তার গড়া ভাস্কর্যের বেশিরভাগই মুক্তিযুদ্ধকে ভিত্তি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সার কারখানায় ‘জাগ্রতবাংলা’, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংশপ্তক’, ঢাকা সেনানিবাসে ‘বিজয় কেতন’, মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন প্রাঙ্গণে ‘ইউনিটি’, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে ‘ফ্রিডম’, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাধীনতা চিরন্তন’, আগারগাঁওয়ে সরকারি কর্মকমিশন প্রাঙ্গণে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী’, মাদারীপুরে ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’ হামিদুজ্জামান খানের অন্যতম বহিরাঙ্গন ভাস্কর্য।
তার একক প্রদর্শনী হয়েছে ৪৭টি। হামিদুজ্জামান খান ২০০৬ সালে শিল্পকলায় অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ করেন। ২০২২ সালে বাংলা একাডেমি ফেলো নির্বাচিত হন।
আমার বার্তা/এল/এমই