ঈদুল ফিতর সামনে রেখে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করতে শেষ মুহূর্তে যাত্রা করছেন। তবে সায়েদাবাদ-পদ্মা-খুলনা রুটের সরাসরি পরিবহণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বাসে সিট না থাকায় অনেক যাত্রীকেই লোকাল বাসে বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঘরে ফিরতে হচ্ছে। সায়েদাবাদ-চট্টগ্রাম রুটের কিছু বাসে সিট থাকলেও সেখানে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৩০ মার্চ) রাজধানীর সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল পরিদর্শন করে এবং যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঈদ সামনে রেখে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ শেষ মুহূর্তে বাড়ি ফেরার জন্য ব্যস্ত। সোহাগ, টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস, ইমাদ, গ্রীন লাইন, দোলা প্রভৃতি সরাসরি পরিবহন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বাসে সিট ফাঁকা নেই। এর ফলে লোকাল বাসগুলো এখন ঘরমুখো যাত্রীদের ভরসা। এসব লোকাল বাসে ঈদের যাত্রায় বিভিন্ন রুটে ১০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ এবং সরকারের নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অনেক যাত্রী।
ইমপেরিয়াল এক্সপ্রেসের ম্যানেজার টুকু মাহমুদ জানান, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি রুটে আমাদের বাস চললেও এ বছর যাত্রী সংখ্যা প্রত্যাশার তুলনায় কম।
শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের ম্যানেজার সোহেল হাসান বলেন, এ বছর যাত্রী কম হলেও আমাদের কোনো কোচেই সিট ফাঁকা নেই। আজ দুপুর থেকে কিছু সিট ফাঁকা থাকতে পারে, তবে আশা করছি সেগুলোও বিক্রি হয়ে যাবে।
ঢাকা থেকে মোকসেদপুর যাচ্ছিলেন ইব্রাহিম খলিল। তিনি বলেন, ঈদে বাড়িতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না, তবে হুট করেই যাচ্ছি। পরিবার ছাড়া ঈদ হয় না। তবে রাস্তায় বেরিয়ে ভাড়া তিনগুণ হয়ে গেছে। ১০০ টাকার সিএনজি ভাড়া ৩০০ টাকা হয়ে গেছে, আর বাসের ভাড়া ৭০০-৮০০ টাকা চাচ্ছে। এভাবে মানুষকে জিম্মি করে ভাড়া আদায় করা সংস্কৃতি আমাদের সমাজে বন্ধ হওয়া উচিত।
খিলগাঁও থেকে আসা যাত্রী ফারিয়া মাহবুব বলেন, দাদা-দাদির সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছি। ঈদে গ্রামে যাওয়ার আনন্দই আলাদা। আমরা আগেই টিকিট কেটেছিলাম, কিন্তু গোপালগঞ্জের ৫০০ টাকার ভাড়া ঈদের জন্য ৬০০ টাকা নিয়ে নিয়েছে।
বরিশালগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম জানান, সারারাত লঞ্চে না গিয়ে বাসে যাচ্ছি। পদ্মা সেতুর সুবিধা রয়েছে, তবে বাসে ভাড়া অনেক বেশি। ঈদে ভাড়া বাড়ানো তো স্বাভাবিক, তবে লঞ্চে ২৫০ টাকায় যেতে পারলে, বাসে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। সরকারের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
আরেক যাত্রী ফরিদ মিয়া বলেন, ভালো কোনো গাড়ির সিট পাওয়া যাচ্ছে না। লোকাল বাসে যেতে হবে। সাকুরায় যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে সিট নেই। লোকাল বাসে গেলে অনেক ঝামেলা হতে পারে।