বরগুনার পাথরঘাটায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার (৩৮) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটজনের নামে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে পাথরঘাটা থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহতের বোন রুমী আক্তার।
আসামিরা হলেন পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের ইউনিট সভাপতি ঈসা রুহুল্লাহ (৩৮), পৌর ছাত্রশিবিরের সভাপতি কাইউম (২৪), আব্দুস সালাম মুন্সী (৫৫), হাসান (২৫), ইব্রাহিম (১৯), আবু সাঈদ (২৩), রাব্বি (১৯) ও তাঁর বাবা মাহবুব (৫২)। সবাই জামায়াত–শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আজকের বলেন, নাসির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে মাহবুব নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। শহরে নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামিরা যে সংগঠনের সদস্য হোক না কেন, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে যুবদল নেতা নাসির হাওলাদারকে (৩৮) পায়ের রক কেটে হত্যার ঘটনায় সরাসরি শিবিরের কর্মীরা অংশ নিয়েছে এবং এর পেছনে জামায়াতের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন জেলা যুবদলের সভাপতি জাহিদ হোসেন মোল্লা।
ময়নাতদন্ত শেষে আজ বেলা ২টার দিকে নিহত নাসিরের মরদেহ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে আনা হয়। এ সময় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন মোল্লা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেছে, দলীয় নেতাদের ওপর হামলা করেছে। তাঁদের জামায়াতের ছত্রচ্ছায়ায় সদস্য বানিয়েছে। এমনকি জামায়াতের কার্ড গলায় ঝুলিয়েও তাঁরা দলীয় প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন। মূলত এখানে বিএনপির শক্তিশালী অবস্থানকে দুর্বল করার জন্যই আওয়ামী লীগকে সঙ্গে নিচ্ছে জামায়াত।
এর আগে গতকাল ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সত্তার মিলিটারির বাড়ির সামনে নাসিরকে কুপিয়ে ও দুই পায়ের রক করে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জানতে চাইলে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ চাপরাশি বলেন, আমি জামায়াত নেতাদের অনেক আগেই বলছি, জামায়াতের মধ্যে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ঢুকে যাচ্ছে। আপনারা তাদের সদস্য করা থেকে বিরত থাকুন। কিন্তু তারা এ কথা না শুনে বিএনপিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগ নিয়ে মেতে উঠেছে। আজকের জামায়াত–শিবিরের জন্য আমাদের সহযোদ্ধাকে হারাতে হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমরা দেখেছি জামায়াতের আইডি কার্ড ঝোলানো ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের সহযোগী সদস্য সম্মেলন অংশগ্রহণ করেছে। পাথরঘাটায় জামায়াতের লোক কম থাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের জামায়াতের সদস্য বানিয়ে তাদের দল ভারী করছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি মাওলানা শামীম আহমেদ বলেন, অভিযুক্ত রাব্বি ও হাসানের সঙ্গে শিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। অন্য কোনোভাবে জামায়াতের আইডি কার্ড সংগ্রহ করে তারা আমাদের সহযোগী কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছে। এ ছবিকে পুঁজি করে তাদের শিবির বলছে বিএনপির লোকজন। এ ছাড়া রাব্বিকে ছাত্রদলের মিছিলেও দেখা গেছে বলেও জানান তিনি।
আমার বার্তা/এমই